আল্লাহ্ তা'আলা মানুষের অন্তরে আনুগত্য অথবা অবাধ্যতা সৃষ্টি করেন না। বরং যখন বান্দার ইচ্ছা ও ক্রিয়ার সংযোগ হয় তখন তিনি তা তাদের অন্তরে পয়দা করেন। কোন কাজের জন্য কাউকে বাধ্য করা হলে, প্রকৃতপক্ষে কাজটি যে বাধ্য করল তার। যেমন কোন মু'মিনকে কুফরী কালাম উচ্চারণ করতে বাধ্য করা হলে, সে যদি তা করে এবং তার অন্তরে ঈমান দৃঢ় থাকে, তা হলে সে ঈমানদার, আর যে তাকে বাধ্য করল, কুফরী তার। কিন্তু একজন মুনাফিক বাহ্যত: ঈমানের কথা বলে, আসলে তার অন্তরে রয়েছে কুফর। এখানে স্বেচ্ছায় যা সে করল, সে নিফাকই তার। কাফির তার কুফরীর জন্য যেমন বাধ্য নয়, ঠিক মু'মিনও তার ঈমানের জন্য বাধ্য নয়। কাফির ইচ্ছা করেই কাফির হয়েছে। কুফরী তার কাছে কাম্য। আর মু'মিন ইচ্ছা করেই মু'মিন হয়েছে এবং ঈমান তাঁর কাছে প্রিয় ও কাঙ্খিত। একথাই সূরা রূম ৩০, আয়াত ৩২-এ বলা হয়েছেঃ প্রত্যেক দলই নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে উৎফুল্ল।
আল্লাহ্ তা'আলা মানুষকে ব্যক্তি হিসাবে সৃষ্টি করেছেন। তাকে ঈমান অথবা কুফরী গ্রহণ করার বা বর্জন করার শক্তি দিয়েছেন। সে নিজ ইচ্ছায়, কোন বাধ্যবাধকতা ছাড়াই এর যে কোন একটি গ্রহণ করতে বা বর্জন করতে সক্ষম। যে কুফরী করে আল্লাহ্ তাকে কুফরী করা অবস্থায় কাফির হিসাবে জানেন। আবার যখন সে কুফরী পরিত্যাগ করে ঈমান আনে, তখন তাকে মু'মিন হিসাবে জানেন। তাঁর এ জানার তারতম্যে তাঁর শাশ্বত জ্ঞান ও সিফাতে কোন পরিবর্তন হয় না। যে পরিবর্তন হয় তা সৃষ্টিতে সময় ও স্থানের পরিবর্তনের কারণে। আল্লাহ্ ইল্ম তো শাশ্বত । তিনি শুধু এ পরিবর্তনই জানেন তা নয়, তিনি তো জানেন এর জন্য পরিণতি কি হবে। এর হিসাব, নিকাশ, আযাব, সওয়াব ইত্যাদি সবকিছু তিনি জানেন ।