সূরা সাবা ৩৪, আয়াত ৩ এবং সূরা ইউনুছ ১০, আয়াত ৬১, তে বর্ণিত হয়েছেঃ আল্লাহ্ অদৃশ্য সম্বন্ধে সম্যক পরিজ্ঞাত। আকাশ মণ্ডলী ও পৃথিবীতে তাঁর অগোচর নয় অণু পরিমাণ কিছু কিংবা তার চাইতে ক্ষুদ্র অথবা বৃহৎ কিছু, বরং এর প্রত্যেকটি লিপিবদ্ধ আছে লওহে মাহফুযে । আল্লাহ্ তা'আলা কোন কিছু সৃষ্টি করতে চাইলে স্বীয় ইচ্ছা এ ইরাদা অনুযায়ী তা নির্ধারণ করে দেন এবং অস্তিত্বের জন্য নির্দেশ দেন।
সূরা নাহল ১৬, আয়াত ৪০, সূরা মারয়াম ১৯, আয়াত ৩৫, সূরা ইয়াসীন ৩৬, আয়াত ৮২, সূরা মুমিন ৪০, আয়াত ৬৮-এ বর্ণিত হয়েছেঃ যখন আল্লাহ কোন কিছু করা স্থির করেন তখন তিনি বলেন, ‘হও’ আর তা হয়ে যায়। দুনিয়া ও আখিরাতে এমন কোন বস্তু নেই যা তাঁর ইচ্ছা, তাঁর জ্ঞান, তাঁর নির্দেশ, তাঁর নির্ধারণ ও তাঁর লিখন ব্যতিরেকে সংঘটিত হয়। লওহে মাহফুযে সবকিছু লিখিত থাকার অর্থ হলো, যে বস্তুর অস্তিত্ব নেই কিন্তু অস্তিত্বে আসবে, আল্লাহর জ্ঞানে তা রয়েছে। এমন নয় যে, লওহে মাহফুযে লিখিত আছে তাই তা সংঘটিত হবে, অস্তিত্ববান হবে ।
‘কাযা’ ও কদর' এর একটি সাধারণ হুকুম, অপরটি বিশদ ব্যাখ্যামূলক হুকুম । ‘মাশিয়াত' আল্লাহর ইরাদা ও ইচ্ছা। ক্বাযা, ক্বদর ও মাশিয়াত--এ তিনটি আল্লাহর শাশ্বত সিফাত । যেমন তাঁর অন্যান্য সিফাত। তবে এ তিনটি সিফাতের প্রকৃত মর্ম সৃষ্টির কাছে স্পষ্ট নয়। একজন মু'মিনের ঈমান রাখতে হবে যে, মানুষের মেধা ও বুদ্ধি এর বর্ণনা ও ব্যাখ্যা দিতে অপারগ। আল্লাহ্ নিজের শানে যে অর্থে এর ব্যবহার করেছেন তার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করাই মু'মিনের কর্তব্য ।
আল্লাহ্ তা'আলা যে বস্তুর অস্তিত্ব নেই তা অস্তিত্বে আনলে কেমন হতো, তা যেমন জানেন, অনস্তিত্বময় বস্তুকেও অস্তিত্বে না থাকা অবস্থায় সেরূপ জানেন। যে বস্তুর অস্তিত্ব বিদ্যমান তা যেমন তিনি জানেন, তার বিলুপ্তি কিরূপ হবে তাও তিনি জানেন। কোন দাঁড়ানো ব্যক্তিকে তার দণ্ডায়মান অবস্থায় তিনি দাঁড়ানো হিসাবে জানেন। আর যখন সে বসে তখন তার বসা অবস্থায় তাকে তিনি উপবিষ্ট হিসাবে জানেন । এতে আল্লাহর জ্ঞানে কোন পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন বা বিয়োজন হয় না । এতে কোন নতুনত্ব সাধিত হয়না। যে বিবর্তন ও পরির্তন সংঘটিত হয়, তা সবই সৃষ্টির মাঝে হয়। আল্লাহ্ মহান পবিত্র। তিনি শাশ্বত। তাঁর জ্ঞানও শাশ্বত । সৃষ্টির মাঝে কোন পরিবর্তন সাধিত হলে তাঁর জ্ঞানে কোন নতুনত্ব আসবে না ।