আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা স্বীয় যাত ও সিফাতসহ বিদ্যমান। তবে তাঁর বিদ্যমানতা সৃষ্ট বস্তুর মত নয়। কোন বস্তুর অস্তিত্বের বিদ্যমানতার জন্য স্থান ও কাল অপরিহার্য। আর এ দু'টিই নশ্বর । আল্লাহ্ অনাদিকাল থেকে অনন্তকাল পর্যন্ত বিদ্যমান । তাঁর জন্য স্থান-কালের প্রয়োজন নেই। তাঁর নেই কোন অবয়ব, নেই কোন দেহ। দেহের জন্য আকৃতি দরকার, সংযোজন দরকার। এ সবই নশ্বর । তিনি অবিভাজ্য মৌল অণুও নন এবং এমন বস্তুও নন, যা অপরের সহায়তায় বিদ্যমানতা লাভ করে। তাঁর কোন শুরু নেই, কোন সীমা নেই । তাঁর কোন প্রতিপক্ষ নেই, যে তাঁকে কোন কিছু করা থেকে বারণ করতে পারে। তাঁর কোন জাতীয়তা নেই, নেই কোন শ্রেণী । নেই কোন ধরন, কোন গঠন ৷
আল-কুরআনে আল্লাহ্ তাঁর হাত, তাঁর চেহারা ও তাঁর নফস্ সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন। কমপক্ষে ১৫ বার হাত, ১০ বার চেহারা ও ৬ বার নফস্ উল্লেখিত হয়েছে। হাদীসে তো বহুবার এসেছে। এসবই যেমন উল্লেখ করা হয়েছে তেমনি তাঁর সিফাত। তবে এসবের ধরন ও প্রকৃতি কারো জানা নেই। কাদারিয়া ও মু'তাযিলারা এসব ব্যাপক অর্থে ব্যবহার করেন। তারা আল্লাহর ‘হাত' দিয়ে তাঁর কুদরত ও নিয়ামত বুঝে । এ ব্যাখ্যা ঠিক নয়। এতে আল্লাহর সিফাতের অস্তিত্বকেই বাতিল বলে গণ্য করা হয় । মু'তাযিলারা মনে করে যে, আল্লাহ্ কাদীম-শাশ্বত । যদি তাঁর সিফাত স্বীকার করে নেয়া যায়, তাহলে একাধিক শাশ্বত সত্তার অস্তিত্ব স্বীকার করা হয় । আর এরূপ হলে আল্লাহ্ একত্ব-তওহীদ থাকে না। তাদের এ বক্তব্য ঠিক নয়। কারণ আল্লাহর সিফাত তাঁর সত্তাও নয়, আর তার বিপরীতও নয়। সুতরাং আল্লাহর সিফাতের কারণে একাধিক শাশ্বত সত্তা হওয়া জরুরী নয়।
আল্লাহর ক্রোধ এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি তাঁরই দুটি সিফাত। তবে এর প্রকৃতি কেমন তা জানা নেই । এমন অনেক সিফাত আছে, যা আল্লাহ ও মানুষ উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়। অর্থের দিক দিয়ে সামঞ্জস্য বিদ্যমান। যেমন জীবিত। আল্লাহর জন্য যখন “ জীবিত সিফাত ব্যবহার করা হয় তখন এর ওপর যে মৃত্যু আসতে পারে তা কল্পনা করা যায় না। অথচ মানুষের জন্য যখন তা ব্যবহৃত হয় তখন মৃত্যু অবধারিত । তাই একই সিফাত স্রষ্টা ও সৃষ্টির জন্য প্রয়োগ হতে পারে, তবে তা হবে প্রত্যেকের শান অনুযায়ী ।