আল-কুরআন আল্লাহ্ তা'আলার কালাম যা অবিনশ্বর। এ কুরআন বর্ণ ও বাক্যের আবরণে গ্রন্থে লিপিবদ্ধ, অন্তরে সুরক্ষিত, রসনায় পঠিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাত ওয়াস সালামের ওপর নাযিলকৃত। কুরআনের ব্যাপারে সম্পৃক্ত মানুষের যাবতীয় ক্রিয়া যেমন উচ্চারণ, মুখস্তকরণ, পঠন, লিখন ইত্যাদি সৃষ্ট । কেননা যে সৃষ্ট তার ক্রিয়াও সৃষ্ট । আর যা সৃষ্ট তা নশ্বর । কিন্তু আল্লাহর কালাম হিসাবে আল কুরআন সৃষ্ট নয় । অনাদি অনন্ত অবিনশ্বর ।
আল্লাহ্ তা'আলা আল-কুরআনে মূসা (আ) ও অন্যান্য নবীদের এবং ফিরআউন, ইবলীস, হামান ও কারুনের মত অবাধ্যদের যেসব ঘটনা বর্ণনা করেছেন, তা তাদের সংবাদ সম্বলিত আল্লাহ্ কালাম। আসমান ও যমীন সৃষ্টির বহুপূর্বে লওহে মাহফূযে এসব কথা লিখিত ও সুরক্ষিত আছে। যখন ঘটনা সংঘটিত হয়েছে তখন তা লওহে মাযে যা লিখিত আছে, সে মতই হয়েছে। আল কুরআনের বর্ণনা ও বিষয়গত দিক দিয়ে আল্লাহর কালাম হিসাবে কোন পার্থক্য নেই। ঘটনার বর্ণনা যেমন আবূ লাহাবের কথা, যুদ্ধের বর্ণনা, পূর্ববর্তী অবাধ্য উম্মতের বর্ণনা ইত্যাদি, আবার আল্লাহ্ যাত ও সিফাতের বর্ণনা, তাঁর কুদরত ও আযমতের বর্ণনা যেমন আয়াতুল কুরসী ও সূরা ইখলাস, এসবই আল্লাহর কালাম। সবই শাশ্বত, অনাদি, স্থায়ী। মূসা (আ) ও ফিরিশতাদের আল্লাহর সঙ্গে কথা বলা সৃষ্ট ও নশ্বর। কেননা একথা বলা ছিল তাদের উচ্চারণ, যা লওহে মাহফুযের লেখার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাদের কথা হিসাবে এসব সৃষ্ট ও নশ্বর এবং আল্লাহর কালাম হিসাবে অবিনশ্বর । আল-কুরআন আল্লাহর কালাম এতে অন্য কারো কালাম নেই । বিশেষণ তো সর্বদা বিশেষ্যের অনুগত। হিব্রু মতনের তওরাত এবং আরবী মতনের কুরআন আল্লাহর কালাম। পৃথক ভাষা হওয়ার কারণে আল্লাহর কালাম পৃথক হয়নি ।