ইমাম আ'যম বলেনঃ
প্রত্যেক মুকাল্লাফের জন্য ওয়াজিব যে, সে বলবে, “আমি ঈমান আনলাম আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফিরিশতাদের প্রতি, তাঁর কিতাব সমূহের ওপর, তাঁর রাসূলদের ওপর, মৃত্যুর পর জীবিত হওয়ায়, অদৃষ্টের ওপর-যার ভাল-মন্দ সবই আল্লাহর তরফ থেকে, হিসাব, মীযান, বিহিশত ও দোযখের ওপর, এসবই সত্য।”
প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক ও জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তির ওপর অবশ্য কর্তব্য যে, সে সজ্ঞানে নিজের মুখে মনে-প্রাণে ঈমানের বাক্য উচ্চারণ করবে। ঈমানের আহকাম জারীর ব্যাপারে ইক্রার শর্ত। তবে ওযরের কারণে ইক্রারের শর্ত কখনো স্থগিত থাকে। কিন্তু বিনা ওযরে কেউ ইক্রার না করলে সে ঈমানদার বলে গণ্য হবে না। ইমামের কথায় ইঙ্গিত রয়েছে যে, ঈমানের জন্য ‘আশ্হাদু ...' বলার প্রয়োজন নেই । ইমাম শাফিঈর মতে ‘আশহাদু’ বলা ঈমানের জন্য শর্ত ।
মনে প্রাণে আল্লাহর সত্ত্বা ও বিদ্যমানতায় বিশ্বাস করা, তাঁর পবিত্রতায় বিশ্বাস করা, তাঁর সত্ত্বার একত্বতায় বিশ্বাস করা, তাঁর সিফাত সমূহে বিশ্বাস করা ।
তাঁরা আল্লাহর সম্মানিত বান্দা, আল্লাহর নির্দেশে তাঁরা কাজ করে, কোন কিছুই তাঁর নির্দেশের বাইরে করে না, তাঁরা নিষ্পাপ, কখনো আল্লাহর অবাধ্যতা করে না, তাঁরা নরও নয়, নারীও নয়, তাঁরা যে কোন আকার ধারণ করতে পারেন ।
আল্লাহর তরফ থেকে এসব কিতাব নাযিল হয়েছে, যেমন তওরাত, যাবুর, ইন্জিল ও আল-কুরআন এবং এছাড়া অন্যান্য অগণিত সহীফা, যার সংখ্যা জানা নেই ।
আল্লাহর প্রেরিত তামাম আম্বিয়ার প্রতি ঈমান রাখা । এখানে রাসূল শব্দটি নবী ও রাসূল উভয় অর্থে ব্যবহৃত ।
ভৌতিক আকৃতি ধ্বংস হওয়ার পর পুনরায় জীবিত হওয়া। হাশর, নশর সবই এর মধ্যে শামিল। দীনের জরুরী বিষয়সমূহের মধ্যে হাশরের প্রতি ঈমান অন্যতম এবং তা অস্বীকার করা কুফরী। [আরবী] (মৃত্যুর পর জীবিত করার) দ্বারা [আরবী] বুঝান হয়েছে। [আরবী] ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়, যেমন মৃত্যুর পরে কবরে অবস্থান, কবর থেকে উত্থান, হাশরের বিভিন্ন অবস্থা, ছাওয়াব ও আযাব ইত্যাদি । কোন কোন কপিতে [আরবী] এর সঙ্গে [আরবী] ও উল্লেখ আছে । তখন [আরবী] দ্বারা কবরে অবস্থানের পর জীবিত করাকে এবং [আরবী] দ্বারা কিয়ামতের যাবতীয় অবস্থাকে বুঝবে ।
আল্লাহর হুকুমে সবকিছু সংঘটিত হয়। এর ভাল- মন্দ সংঘটিত হবার স্থান-কাল, এর ওপর বর্তিত ছাওয়াব ও আযাব সবকিছুই আল্লাহর তরফ থেকে। মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত হওয়া তথা আখিরাতের ওপর ঈমানের কথার পর কিয়ামতের বিভিন্ন বিষয় ও অবস্থার উল্লেখ করা হয়েছে, যার ওপর ঈমান আনা জরুরী। এসবের মধ্যে কৃতকর্মের হিসাব, কৃতকর্মের পরিমাপের জন্য মীযান বা তুলাদণ্ড, কৃতকর্মের প্রতিদান ও প্রতিফলের জন্য বিহিশত ও দোযখ ইত্যাদি বিবৃত হয়েছে।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০৭) ১. তওহীদ | (০৯) ৩. আল্লাহ্ তা'আলা |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |