মুখতার সকফী আমর ইবনে সা'আদ, সীমার, হাওলা বিন ইয়াজিদ প্রমূখ জালিমদের হত্যা করার পর নরাধম ইবনে জিয়াদকে হত্যা করার চিন্তা ভাবনা করতে লাগল। কারণ, ইয়াজিদের পর সবচেয়ে মারাত্মক ও জঘন্যতম অপরাধী ব্যক্তি ছিল ইবনে যিয়াদ। তার ইবনে জিয়াদের খতম না করা পর্যন্ত মুখতার সাক্ফি কিছুতেই স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলতে পারল না। সে ইব্রাহিম বিন মালেক আশতরকে এক বিরাট সেনাবাহিনীর কর্তৃত্ব প্রদান করে ইবনে জিয়াদকে পরাস্থ করার জন্য প্রেরণ করল। এদিকে ইবনে জিয়াদ যখন এ খবর জানতে পারল, সেও মুখতার সকফীর সৈন্যদেরকে দমনের জন্য এক বিরাট সৈন্যবাহিনী নিয়ে অগ্রসর হল। মুসল' শহরের অনতিদুরে 'ফোরাত নদীর তীরে উভয় সৈন্য বাহিনীর মধ্যে তুমুল যুদ্ধ হল। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে ইব্রাহিম বিন মালেকের হাতে পরাজিত হয়ে পালিয়ে যেতে চেয়েছিল কিন্তু রক্ষা পেলনা। ইব্রাহিম বিন আশতরের সৈন্যরা তলােয়ারের আঘাতে শরীর থেকে ওর মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলল এবং দেহকে জ্বালিয়ে ফেলে মাথা বর্শার অগ্রভাগে উঠায়ে কুফায় নিয়ে আসল। যে দিন ইবনে জিয়াদের মাথা কুফায় আনা হয়েছিল এবং মুখতার সকফীর সামনে রাখা হয়েছিল, ঘটনাক্রমে সে দিন ছিল মহররমের দশ তারিখ। মুখতার সকফী উপস্থিত কুফাবাসীদেরকে লক্ষ্য করে বলল- দেখ আজ থেকে ছয় বছর আগে এই দিনেই, এই জায়গায় এই জালিমের সামনে হযরত ইমাম হুসাইন (রাঃ) এর মস্তক মুবারক রাখা হয়েছিল। আজ আমার সামনে সেই জালিমের মাথা রাখা হয়েছে। মুখতার সক্ফী, ইবনে জিয়াদ ও অন্যান্য জালিমদের মাথা সমূহ জনগণকে প্রদর্শনের জন্য এক প্রকাশ্য জায়গায় রেখে দিল, যে ভাবে ইবনে জিয়াদ, হযরত ইমাম হুসাইন (রাঃ) ও অন্যান্য আহলে বায়তের মস্তক রেখেছিল।
তিরমিযী শরীফের সহীহ হাদীছে বর্ণিত আছে, যে সময় ইবনে জিয়াদ ও ওর বিশিষ্ট অনুসারীদের মাথা সমূহ মুখতার সকফীর সামনে রাখা হয়েছিল, তখন এক ভয়াল সাপের আবির্ভাব হয়েছিল এবং ওটার ভয়াল আকৃতি দেখে লােকেরা ঘাবড়িয়ে গিয়েছিল। সাপটি সকল মাথাসমূহের উপর চক্কর দিয়ে যখন ইবনে জিয়াদের মাথার কাছে পৌছলাে, তখন ওর নাকের ছিদ্র দিয়ে প্রবশে করে কিছুক্ষণ অবস্থান করার পর ওর মুখ দিয়ে বের হয়ে আসলাে। এ ভাবে তিন বার সাপটি ওর মাথায় প্রবেশ করেছিল, অতঃপর অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(৪৫) আমর বিন ছবির পরিণতি | (৪৭) উপসংহার |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |