পূর্বে বর্ণিত বুখারী শরীফের হাদিসের ভিত্তিতে অনেকেই মনে করেন দরুদে ইব্রাহিম ছাড়া অন্য আর কোন দরুদ পড়া নিষেধ। কিন্তু এরকম ধারণা করা ঠিক নয়।যদি এটা মনে করা হয় যে, নামাজে যে দরুদ ও সালাম পড়া হয় নামাজের বাইরেও ঐ দরুদ ও সালাম ই পড়তে হবে। আর অন্য গুলি পড়া বিদআত বা হারাম, তাহলে মুহাদ্দিসগণ হুযুর আলাইহিস সালাতু সালাম এর নাম মুবারকের পরে যে সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লিখেন তাও নিষিদ্ধ হয়ে যাবে ।
এই ব্যাপারে মুফতি আহমদ ইয়ার খান নঈমী রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখেছেন যদি হাদিস শরীফে বর্ণিত দরুদ ছাড়া অন্য সব দরুদ পড়া নিষিদ্ধ হয়। তাহলে খাদ্যদ্রব্য ও ওষুধের ব্যাপারে শুধুমাত্র হাদিসে বর্ণিত গুলি খাওয়া বৈধ হবে। কিন্তু যেভাবে ওই সমস্ত খাদ্য যা শরীয়ত কর্তৃক নিশ্চিত ভাবে হারাম হয়নি তা খাওয়া জায়েজ আছে। ঠিক তেমনি ভাবে যে সমস্ত দরুদ কোরআন ও হাদিস অনুযায়ী সরাসরি ভাবে শরীয়ত কর্তৃক নিষিদ্ধ করা হয়নি তাও পড়া জায়েজ হবে। "কেননা খাও ও পান করো " এর মাঝে খাওয়া-দাওয়া কে সাধারণ বা শর্তহীন রাখা হয়েছে। ঠিক তেমনভাবে "সল্লু আলাইহি বা দুরুদ পড়ো এই হুকুমের মাঝেও দরুদ কে মুতলাক শর্তহীন করা হয়েছে। অর্থাৎ যে কোন দরুদ পড়লে সওয়াব পাওয়া যাবে। তবে হ্যাঁ হাদিস শরীফে বর্ণিত দরুদ অন্যদের চাইতে শ্রেষ্ঠ হবে। দালাইলুল খাইরাত কিতাবে অনেক দরুদ বর্ণিত আছে (শানে হাবিবুর রহমান)
যতক্ষণ না কোরআন হাদিসে বর্ণিত আক্বীদার বিরুদ্ধে কারো রচিত দরুদ যাবেনা ততক্ষণ পর্যন্ত সে দরদ পড়া যাবে। সুরা আহযাবের ৫৬ নম্বর আয়াতে 'সল্লু' বা দরুদ পড়ো কথাটিকে আল্লাহ পাক শর্তহীন রেখেছেন। কোন দরুদ পড়তে হবে তার উল্লেখ করেন নি। কাজেই দরুদে মুকাদ্দাস, দরুদে তাজ,দরুদে মাহি বা যে কোনো দরুদ পড়তে অসুবিধা কোথায়....??
বেশি পরিমাণ দরুদ পাঠকারীর কিয়ামতের দিনে দুশ্চিন্তা থাকবে না একথা হাদিস থেকে প্রমাণিত। এ ব্যাপারে বহু হাদিস রয়েছে। কাজেই যার যে দরুদ ভালো লাগছে পড়ুক.. এটা নিষিদ্ধ হবে না। জায়েয হওয়ার জন্য দলিল দেখাতে হবে এমনটি উসুল নয়। হারাম হওয়ার জন্য সুস্পষ্ট দলিল প্রয়োজন।
পাবান্দ ক্যা লাগেগি দরুদো ও সালাম পার
কিউঁ ডালতে হো পেহরা ইবাদাত কে কাম পার
বাতিল কো কেহদো আশিক কা ইমতেহান না লে
হাম জান দেঙ্গে আপনে মুহাম্মাদ কে নাম পার
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০৬২) বুখারী শরীফে বর্ণিত দরুদ | (০৬৪) আযানের আগে ও পরে দরুদ |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |