(১) হজরত আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নাবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লাম বলেছেন - যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরুদ শরীফ পাঠ করে, আল্লাহ তার উপর ১০ টি রহমত নাযিল করেন ।
(মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ, জযবুল কুলুব, তিরমিজি শরীফ,নাসায়ী,দুররে মনসুর, বাহারে শরিয়ত)
(২) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লাম বলেছেন --কেয়ামতের দিন আমার নিকটতম ব্যাক্তি সেই হবে, যে দুনিয়াই আমার উপর বেশি পরিমাণে দরুদ শরীফ পাঠ করেছে ।
( তিরমিজি শরীফ, কানজুল উম্মাল)
(৩) হজরত আনাস ও হজরত বারা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত, রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লাম বলেছেন - যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরুদ শরীফ পাঠ করে, আল্লাহ পাক তার উপর ১০টি রহমত নাযিল করেন এবং তার আমলনামায় ১০টি নেকি লিখে দেন, ১০ টি গুনাহ ক্ষমা করেন এবং ১০ টি মর্যাদা বৃদ্ধি করেন।
(নাসায়ী, মিশকাত শরীফ, তিরমিজি শরীফ, বাহারে শরিয়ত কানজুল উম্মাল)
(৪) আকা-এ- কওনায়েন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লাম বলেছেন - মুসলমান যতক্ষণ পর্যন্ত আমার উপর দরুদে পাক পড়তে থাকে, আল্লাহ পাক তার উপর রহমত রাজি নাজিল করতে থাকেন, এখন বান্দার মর্জি সে কম পড়ুক কিংবা বেশি ।
(ইবনে মাজাহ)
(৫) হযরত জিব্রাইল আলাইহিস সালাম হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লাম কে আরজ করলেন যে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা ইরশাদ ফরমিয়েছেন 'হে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ! আপনি কি একথার উপর সন্তুষ্ট নন যে, আপনার উম্মাত আপনার উপর একবার সালাম প্রেরণ করলে আমি তার উপর দশবার সালাম প্রেরণ করব (শান্তি বর্ষন করব)।
(নাসায়ী)
(৬) হজরত আবু তালহা রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, নাবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লাম বলেছেন -- নিশ্চই জিব্রাইল আলাইহিস সালাম আমাকে সুসংবাদ দিয়েছেন যে, যে ব্যক্তি আমার উপর দরুদ পড়ে আল্লাহ পাক তার উপর রহমত নাযিল করেন, আর যে আমার উপর সালাম প্রেরণ করে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা তার উপর নিরাপত্তা নাজিল করেন।
(বাহারে শরিয়ত মুসনাদে আহমদ, বাগাভী)
(৭) যে ব্যাক্তি হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লাম এর উপর একবার দরুদ শরীফ পাঠ করে, আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লাহ তার জন্য এক ক্বিরাত পরিমাণ সওয়াব লিখে দেন। ক্বিরাত হচ্ছে উহুদ পর্বতের সম পরিমান। (অর্থাৎ ওহুদ পাহাড় কে একবার ওজন করলে যে ওজন হয় তার সমতূল্য সওয়াব আমল নামায় লিখে দেওয়া হয়।)
(কওলুল বদী ও মুসান্নিফে আব্দুর রাজ্জাক)
(৮) ফরজ হজ্ব আদায় কর, নিশ্চয় এটির সওয়াব কুড়ি টি যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করার চেয়ে ও বেশি, আর হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লাম এর উপর একবার দরুদ শরীফ পাঠ করা, এটার সম পরিমাণ সওয়াব।
(যিয়ায়ে দরুদ ও সালাম)
(৯) হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লাম দরুদ শরীফ পাঠ কারীর জন্য মাগফিরাতের দোয়া করেন এবং তাঁর চোখ মুবারক শীতল হয়(অর্থাৎ তিনি সন্তুষ্ট হন)।
(মুসনাদুল ফিরদাউস)
(১০) আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন যে, যে আমার উপর একবার দরুদ শরীফ পাঠ করে সে দশটি গোলাম আজাদ করার সওয়াব পাই।
(জযবুল কুলুব,ফায়জানে সুন্নাত)
(১১) রাসুলে কায়েনাত সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক জিনিসের জন্য পবিত্রতা ও গোসল রয়েছে, আর ঈমানদার দের অন্তর গুলোর মরিচার পবিত্রতা হচ্ছে আমার উপর দরুদ শরীফ পাঠ করা।
(আল কওলুল বদী, ফায়জানে সুন্নাত)
আমরা জানি যে যখন বান্দা কোনো গোনাহ করে তখন তার অন্তরে নুকতা পড়ে। এরপরও যখন সে গোনাহের কাজ করতে থাকে তো আরও নুকতা পড়তে থাকে। ধীরে ধীরে ওই নুকতা পুরো দিল কে ঢেকে ফেলে। এবং অন্তর মরিচা পূর্ণ হয়ে যায় এই মরিচা দূর করার উপায় যেমন ইস্তেগফার করা, তওবা করা, আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করা তেমনি অন্যতম একটা উপায় হচ্ছে নাবী মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর দরুদ ও সালাম পাঠ করা।
(১২) প্রতিটি উদ্দেশ্য সম্মিলিত কাজ, যা দরুদ ও জিকর ছাড়াই আরম্ভ করা হয়, তা বরকত ও মঙ্গল শুণ্য হয়ে থাকে।
(মাতালিউল মাসাররত ,ফায়জানে সুন্নাত)
(১৩) রাসুলে কায়েনাত সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন --যখন তোমরা কোনো কিছু ভুলে যাও, তবে আমার উপর দরুদ পাক পড় ইনশাল্লাহ স্বরনে এসে যাবে।
(সা আদাতুদ্দা রাঈন,ফায়জানে সুন্নাত)
(১৪) হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লাম এর উপর একবার দরুদ শরীফ পড়লে আল্লাহ ও তাঁর ফ্যরিস্তারা সত্তর(৭০) বার রহমত প্রেরণ করেন ।
(মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বাল, বাহারে শরিয়ত)
(১৫) হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লাম এর উপর দরুদ প্রেরণ কারীর উপর ৭০ হাজার ফ্যারিস্তা দরুদ প্রেরণ করে।
(সুররুল কুলুব,ওয়াজাইফ এ হাশেমীয়া)
(১৬) হজরত আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লাম ইরশাদ ফরমিয়েছেন - তোমারা আমার কবরকে ঈদ বানাইওনা আমার উপর দরুদ পাক পড়তে থাকো ।কেননা তোমাদের দরুদ আমার নিকট পৌঁছে ।
(আবু দাউদ শরীফ,মুসনাদে আহমদ)
অর্থাৎ, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লাম এর উক্ত ফরমান দ্বারা বোঝা যায় যে ঈদ যেমন বছরে দুই বার আসে এবং আমরা ঈদগাহে যায় শুধুমাত্র আমরা সেইভাবে মাদিনা শরীফ গিয়েই সালাতু সালম পেশ করে থাকি এবং এখানে দরুদ ও সালাম এর হাদিয়া প্রেরণ করতে ভুলে যায়।যেন এমনটা না হয় তাই বলা হয়েছে যাতে আমরা সবসময়ই দরুদ ও সালামের মাধ্যমে হুজুর আলাইহিস সালাম কে স্মরণ করতে থাকি।
(১৭) হজরত আনাস রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসুলে কায়েনাত সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ ফরমিয়েছেন -যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরুদ শরীফ পাঠ করল এবং তা কবুল হলে আল্লাহ পাক তার আশি বছরের গুনাহ মাফ করে দেন ৷
(দুরুল মুখতার, বাহারে শরিয়ত)
হার ঘাড়ি হার ওয়াক্ত ও হারদাম
পাড়হতে রাহনা দুরুদ ও মুকারাম
জানে কিস ওয়াক্ত দাম টুট যায়ে
জিন্দেগী কা ভারোসা নেহি হে।।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০০৬) কোনদিন বেশি দরুদ পড়তে হয় | (০০৮) একবার দরুদ শরীফ পাঠ |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |