আল্লাহর পক্ষ থেকে নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লাম এর প্রতি সম্মান প্রকাশ করাই দরুদ।
(কানজুল ইমান, তাফসীরে কাবীর, ইমাম সাখাবী আল কওলুল বদী )
দরুদ এর অর্থ সম্পর্কে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেছেন-- আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা মুস্তাফা কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলা আলিহি ওয়া সাল্লাম এর আজমাত বাড়াতে থাকেন। আর ফ্যারিস্তারা সবসময় হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লাম তার জন্য মুবারাক বাদ দেয়।
(বুখারি)
ইমাম আবুল আলিয়া তাবেয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন--আন্না মানা সালাতু সানাউহু অ তাযি - মুহু (প্রশংসা করা ও সন্মান প্রকাশ করা) ইমাম বোখারী আলাইহির রাহমা বলেছেন আল্লাহর দরুদ পাঠানোর অর্থ হল ফারিস্তাদের সামনে হুযুরের প্রশংসা করা। ফ্যারিস্তাদের দরুদ পড়ার অর্থ হলো হুজুর আলাইহিস সালামের জন্য দুয়া করা।
হাফিজ ইবনে কাসির রহমাতুল্লাহি আলাইহি উক্ত আয়াতের বাখ্যায় বলেছেন -- ঐ আয়াতের উদ্দেশ্য হলো, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁর বান্দাদেরকে তাঁর প্রিয়তম বান্দা ও নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লাম ) এর মালায়ে আলায় তাঁর নিকট যে দা রয়েছে তাও জানিয়ে দিয়েছেন। কেননা তিনি (রাব্বুল আলামিন) তাঁর নৈকট্য প্রাপ্ত ফ্যারিস্তাদের সামনে ও হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লাম এর গুন বর্নণা করেন। আর সকল ফ্যারিস্তা নাবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লাম এর উপর দরুদ পড়েন। অতঃপর মহান আল্লাহপাক জগৎবাসী কে তাঁর প্রিয় হাবিব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লামরে উপর দরুদ ও সালাম প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন। যাতে উচ্চ জগৎবাসী ও নিন্ম জগৎবাসী সকলের পক্ষ থেকে নাবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লামরে প্রতি প্রেরিত গুনগান একত্রিত হয়ে যায়।
(তাফসীরে কুরআনিল আযীম)
এ ছাড়াও এই আয়াতের তাফসীরে আরও বর্নণা করা হয়েছে যে --আল্লাহ আযজা ওয়া জাল্লাহ সকল নাবী আলাইহিমুস সালাম দের রুহ মুবারাককে রুহজগতে একত্রিত করে একটি সম্মেলনের আহব্বান করেন। যেখানে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লামরে আগমনের ব্যাপারে আলোচনা ও তাঁর প্রতি দরুদ ও সালাম প্রেরনের আহবান ও সহযোগীতা করার প্রতিশ্রুতী নেন।
( তাফসীরে কাবীর,তাফসীরে কুরতুবী ও খাসায়েসূল কুবরা)
এ থেকে বুঝা গেল প্রিয় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর শান,মর্যাদা ও গুনাগুন বর্নণায় মহান আল্লাহ স্বয়ং শরীক (শামিল) থাকেন । আর কেনই বা থাকবেন না? তিনি নিজেই তো ঘোষনা করেন--অ রাফানা লাকা জিকরাক -- আর আমি আপনার জন্যই আপনার জিকর ও আলোচনা কে উচ্চ করেছি। (সুরা আলাম নাশরাহ, আয়াত- ০৪)
আল্লাহর দরুদ পাঠানোর অর্থ হলো হুজুরে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলা আলিহী ওয়া সাল্লাম কে মাকামে মাহমুদ বা সুপারিশের মাকামে পৌছানো । আর ফ্যরিস্তারাদের দরুদের অর্থ হলো হুজুরের উচ্চ মর্যাদার জন্য দোয়া করা এবং উম্মাতের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা ৷ এবং মুমিনদের দরুদের অর্থ হলো হুজুর আলাইহিস সালাম এর তাবেদারী করা । তাঁর সাথে মহব্বত রাখা আর তাঁর মহান গুনাবলির প্রশংসা করা । (তাফসীরে রুহুল বয়ান)
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০০১) দরুদ শরীফ সম্পর্কে আল্লাহ্ পাকের এরশাদ | (০০৩) আমরা কেন দরুদ ও সালাম পড়ব |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |