এই ধারনায় যদি সাহরী গ্রহণ করে যে, সুবিহ সাদিক হয়নি কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সুবিহ সাদিক হয়ে গেছে। এ অবস্থায় তার উপর কাযা ওয়াজিব হবে, কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে না (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।
যদি কেউ এই ধারনায় স্ত্রী সহবাস করে যে, রাত অবশিষ্ট আছে, কিন্তু পরে জানতে পারল যে, সুবহি সাদিকের পর সহবাস করা হয়েছে এবং জানার সঙ্গে সঙ্গে সে বিরত হল, এ অবস্থায় তার রোযা নষ্ট হয়ে যাবে, তার উপর কাযা ওয়াজিব হবে। কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে না। যেহেতু তার এ ভুল ছিল অনিচ্ছাকৃত (শামী, ২য় খণ্ড)।
সুবহি সাদিকের ব্যাপারে সন্দেহ হলে সাহরী গ্রহন থেকে বিরত থাকা উত্তম। অবশ্য সন্দেহ সত্ত্বেও পানাহার করলে রোযা পূর্ণ হয়ে যাবে। তবে যদি সুহি সাদিক হওয়ার পরে পানাহার করা হয়েছে বলে সুনিশ্চিত হয় অথবা এ ব্যাপারে প্রবল ধারণা সৃষ্টি হয় সেক্ষেত্রে তার প্রতি রোযা কাযা করা ওয়াজিব হবে (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।
দু'জন ব্যক্তি সাক্ষ্য দিল যে সুবিহ সাদিক হয়েছে। আর দু'জন সাক্ষ্য দিল যে উদয় হয়নি। সে অবস্থায় পানাহার করল এরপর প্রকাশ পেল যে, সত্যিই সুহি সাদিক হয়ে ছিল। তাহলে তার উপর কামা, কাফ্ফারা দু'টোই ওয়াজিব হবে।
যদি একব্যক্তি সাক্ষ্য দেয় যে, সুহি সাদিক হয়ে গেছে এবং অন্য এক ব্যক্তি সাক্ষ্য দেয় যে হয়নি এ অবস্থায় পানাহার করার পর জানা গেল যে, প্রকৃতপক্ষে তখন সুবিহ সাদিক হয়ে গিয়েছিল তবে তার রোযা কাযা করতে হবে। কাফ্ফারা ওয়াজিব হবেনা (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।
কোন লোক সাহরী গ্রহণ কালীন সময়ে একদল লোক তার কাছে এসে বলল, সুবৃহি সাদিক উদয় হয়েছে। এখন সাহরী গ্রহণকারী ভাবল রোযা যখন নষ্ট হয়ে গেছে তাই খেয়ে নিই এবং তাই করল। কিন্তু পরে প্রকাশ পেল যে প্রথমবার খাদ্য গ্রহণ মূলত সুবৃহি সাদিকের পূর্বে ছিল কিন্তু পরবর্তী খাদ্য গ্রহণ হয়েছে সুহি সাদিক উদয়ের পর। এ সম্পর্কে ইমাম মুহাম্মদ (র.) বলেন, যদি আগন্তুকরা একদল হয় আর তাদেরকে সত্য মনে করে থাকে তাহলে তার উপর কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে না। আর যদি আগন্তুক মাত্র এক ব্যক্তি হয় চাই সে ব্যক্তি নির্ভরযোগ্য হোক কিম্বা না হোক, তার কথার উপর নির্ভর করে উপরোক্তভাবে আহার গ্রহণ করে থাকলে তার উপর কাযা ও কাফ্ফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।
কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে বলল ভাল করে দেখে এস সুহি সাদিক উদয় হয়েছে কিনা। স্ত্রী আকাশের দিকে তাকাল। ফিরে এসে বলল। সুবিহ সাদিক উদয় হয়নি। তখন স্বামী তার সাথে সহবাস করল। কিন্তু পরে জানতে পারল যে, তখন সুবিহ সাদিক উদয় হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে কোন কোন ফকীহ্ বলেন, স্ত্রী নির্ভরযোগ্য হোক বা না হোক উভয় অবস্থায়ই স্বামীর উপর কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে না আর স্ত্রী যদি সুহি সাদিক হয়েছে জেনে এই কাজ করে থাকে তবে তার উপর কাযা ও কাফ্ফারা উভয়ই ওয়াজিব।
সাহরী গ্রহণ করার সময় সুবিহ সাদিক উদয় সম্পর্কে সন্দেহ ছিল। প্রকৃত অবস্থা জানতে পারেনি যে, সুবৃহি সাদিক উদয় হয়েছিলো কিনা? এ অবস্থায় তার উপর কাযা কাফফারা কোনটিই ওয়াজিব হবেনা (শামী, ২য় খণ্ড)।
সুবিহ সাদিক হয়ে গিয়েছে এরূপ ধারণা হওয়া সত্ত্বেও কেউ সাহরী গ্রহণ করল। পরে জানা গেল যে, তখন সুহি সাদিক হয়ে গিয়েছিল। এ অবস্থায় তার ঐ রোযা শুদ্ধ হবে না। পরে তার কাযা করতে হবে। আর যদি তখন সুহি সাদিক হয়েছিল কিনা এ সম্পর্কে কিছুই জানতে না পারে এক্ষেত্রে তার উপর কাযা কাফ্ফ্ফারা কোনটাই ওয়াজিব নয়।
কোন কোন ফকীহ বলেছেন, এক্ষেত্রে কাযা করে নেওয়া ভাল। যখন কোন ব্যক্তি সাত্রী গ্রহণ করল এ ধারণায় যে রাত অবশিষ্ট আছে। পরে জানতে পারল যে, তখন সুহি সাদিক হয়ে গিয়েছিল। এ অবস্থায় তার উপর কাযা ওয়াজিব হবে (শামী, ২য় খণ্ড)।
সুহি সাদিক হয়েছে বলে প্রবল ধারণা হওয়া সত্ত্বেও যদি কেউ সাহরী গ্রহণ করে তবে তার উপর কাযা ওয়াজিব হবে (শামী, ২য় খণ্ড)।
সুহি সাদিক হয়ে যাওয়ার কথা জানার পর সাহরী খাওয়া নিষেধ। তাই সুহি সাদিকের পর কেউ সাহরী খেলে তার রোযা শুদ্ধ হবে না। সাহরী খাওয়া অবস্থায় সুহি সাদিক হয়ে গেলে সাথে সাথে খানা বন্ধ করে দিতে হবে। ঐ অবস্থায় মুখে কোন খাদ্য থাকলে তাও গিলে ফেলা জায়িয হবে না।
কেউ যদি নিজে বা অন্য কারো মাধ্যমে সুহি সাদিক নিরূপণ করতে সক্ষম না হয় তবে সে তাহারীর তথা চিন্তা ভাবণা করে প্রবল ধারণা অনুসারে আহার গ্রহণ করবে। রামাযান মাসে নির্ধারিত সময়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে সাইরেন, ঘন্টা বা মাইক ইত্যাদির মাধ্যমে সাহরী বা ইফতারের যে সময় ঘোষণা করা হয় এর ভিত্তিতে সাহরী ও ইফতার গ্রহণ করা জায়িয। ভুলবশত নির্ধারিত সময়ের পূর্বে সাহরী বা ইফতারের সময় প্রচার করা হলে তার উপর নির্ভর করে সাহরী বা ইক্কার গ্রহণ করা জায়িয হবেনা (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০৬৪) সাহরীর সময় ও আদাব | (০৬৬) ইফতারের ফযীলত |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |