[আরবী]
(পারাঃ ও সূরা বাকারা, রুকুঃ ২৩)
অর্থাৎ-এ রাসুলগণ, তাদের মধ্যে একজনকে অন্যজনের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি। তাদের মধ্যে এমনও কেউ রয়েছে যার সাথে আল্লাহ কথা বলেছেন। আবার কাউকে উচ্চ মর্যাদায় ও উন্নীত করেছেন।
এ আয়াতে কারিমায় ইরশাদ হয়েছে যে, দুনিয়ার মানুষদেরকে হেদায়েতের পথ দেখানোর জন্য যে সমস্ত নবীগণকে প্রেরণ করা হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই মর্যাদার দিক থেকে সমান নয়। বরঞ্চ একজনের উপর অন্যজনকে মর্যাদাবান করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কেউ কালিমুল্লাহ, কেউ খলিলুল্লাহ, কেউ জবিহউল্লাহ, কেউ রুহুল্লাহ আবার কোন পয়গম্বর এমনও তাশরীফ আনয়ণ করেছেন, যাঁকে আল্লাহর তরফ হতে অনেক মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে। তাফসীরকারগণ বলেন, এর দ্বারা আমাদের প্রিয় নবী দঃ) কেই উদ্দেশ্য করা হয়েছে। আয়াতের অর্থ হলো হুযুর আকরম (দঃ) কে এমন এমন মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে, যা কারও ধারণায়ও আসতে পারে না। শুধুমাত্র মর্যাদা প্রদানকারী আল্লাহ জানেন অথবা মর্যাদায় ভূষিত হুযুর আকরম (দঃ)-ই জানেন। তবে এতটুকুই অবশ্যই প্রমাণিত হচ্ছে যে, অন্যান্য নবীদেরকে যে বিশেষ বিশেষ গুণে গুণান্বিত করা হয়েছে, এর প্রত্যেকটিই হযুর আকরম (দঃ)কে একা প্রদান করা তো হয়েছেই বরঞ্চ তার চেয়েও আরও অনেক বেশী মর্যাদা প্রিয় নবী (দঃ) কে দেয়া হয়েছে।
[উর্দূ]
অর্থাৎ-'হযরত ইউসুফ (আঃ) এর সৌন্দর্য হযরত ঈসা (আঃ) এর মৃতকে জীবিত করার শক্তি এবং হযরত মূসা (আঃ) এর ঝলমলানো হাত তথা সমস্ত নবীগণের সম্মিলিত সৌন্দর্য এবং গুণাবলীর আপনি একাই অধিকারী।
বস্তুতঃ হযুর আকরম (দঃ) এর সত্যিকার মর্যাদার বর্ণনা দেয়া মানবিক শক্তির অনেক বাইরে। সংক্ষেপে কিছু আরয করবো। অন্যান্য নবীগণকে বিশেষ বিশেষ কওমের নিকট প্রেরণ করা হতো। কিন্তু প্রিয় নবী (দঃ) এর নবুয়্যত সবার জন্য সাধারণ। যার পরওয়ারদেগার হচ্ছেন রাবুল আলামীন তার জন্য হুযুর পাক (দঃ) রাহমাতুললিল আলামীন গুণ নিয়েই আবির্ভূত। হুযুর আকরম (দঃ) নবীগণেরও নবী। সকল পয়গম্বর হুযুর আকরম (দঃ) এর উম্মত এবং তাঁর মুকতাদি। এই সম্পর্কিত ব্যাখ্যা
[আরবী]
আয়াতের আলোচনায় আসবে। হুযুর পাক (দঃ) শেষ নবী। তাঁর পরে আর কোন নবী আসবে না। তিনিই মে'রাজওয়ালা, আর কোন নবীর মে'রাজ নসীব হয়নি।
[উর্দূ]
অর্থাৎঃ 'তুর এবং মি'রাজের ঘটনা হতে একথাই প্রমাণিত হয় যে, স্বেচ্ছায় আল্লাহর দীদারের জন্য যাওয়া এক কথা, আর আল্লাহর ডাকে আল্লাহর মেহমান হয়ে যাওয়া সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা।
সকল নবীগণ সকল ব্যাপারে আল্লাহর সন্তুষ্টির অভিলাষী। কিন্তু আল্লাহ রাবুল আলামীন হুযুর পাক (দঃ) এর অন্তরকে শান্ত এবং সন্তুষ্টি করতে চান। যেমন বলছেন
[আরবী]
অর্থাৎ অচিরেই আপনার রব আপনাকে এত দান করবেন যে, আপনি সন্তুষ্ট হবেন।'
অন্যান্য নবীগণকে দু'চারটি মু'জেযা প্রদান করা হয়েছিল। কিন্তু হুযুর আকরম (দঃ) কে অসংখ্য মুজেযা দেয়া হয়েছে। বরঞ্চ মাথা মুবারক হতে পা মুবারক পর্যন্ত হুযুর (দঃ) নিজেই মুজেযা। তাঁর উপর নাযেলকৃত কিতাব আলকুরআন অন্য সব কিতাবগুলোর জন্য রহিতকারী। কিন্তু এই কিতাব কুরআনকে অন্য কিছু রহিত করতে পারবে না। কিয়ামতের দিবসে শাফায়াতের মুকুট হুযুর আকরম (দঃ) এর পবিত্র মাথায়ই পরানো হবে। তাঁর উম্মত অন্য সকল উম্মত হতে শ্রেষ্ঠ ইত্যাদি ইত্যাদি।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০১৩) আয়াতঃ ১০ | (০১৫) আয়াতঃ ১২ |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |