[আরবী]
(পারাঃ ১ সূরা বাকারাঃ রুকু ১৫)
অর্থাৎ 'হে আমাদের প্রতিপালক। তাদের মধ্য হতে তাদের নিকট এক রসুল প্রেরণ কর, যিনি তোমার আয়াতসমূহ তাদের নিকট তেলাওয়াত করবে। তাদেরকে কিতাব এবং হিকমত শিক্ষা দিবে এবং তাদেরকে পবিত্র করবে। তুমি পরাক্রমশালী মহাপ্রজ্ঞাময়।'
এ আয়াতে বায়তুল্লাহ শরীফের পূণঃ নির্মাণের ইতিহাস বর্ণিত হচ্ছে। যখন হযরত ইব্রাহীম (আঃ) কা'বা শরীফের নির্মাণ কাজ শেষ করলেন তখন তিনি রাঘুল আলামীনের দরবারে ফরিয়াদ করলেন, হে পরওয়ার দেগারে আলম। এ পবিত্র ঘর তো আমি নির্মাণ করেছি। এখন এ ঘরের আবাদকারী সাথে সাথে তোমার বান্দাদেরকে পবিত্রকারী একজন নবী তুমি এ মক্কা শরীফেই প্রেরণ কর। আর এ মুনাজাত এমনভাবে কবুল হয়েছে যে, হযরত ইসমাইল (আঃ) এর বংশ হতে হযরত আবদুল্লাহর ঘরে হযরত আমিনা খাতুন এর পবিত্র উদর হতে পবিত্র শহর মক্কায় রিসালতের এমন এক সূর্য উদিত হল, যাঁর আলো কিয়ামত পর্যন্ত প্রত্যেক জায়গায় থাকবে। মিশকাত শরীফ, সায়্যেদুল মুরসালীনের ফাজিলত অধ্যাযে আছে, হুযুর আকরম (দঃ) ইরশাদ করেছেন যে, আমি হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর দুআ হযরত মুসা (আঃ) এর সুসংবাদ এবং আমার আম্মাজানের স্বপ্নের ফল।
এ পবিত্র আয়াত দ্বারা দু'টি জিনিষ বুঝা গেল। একটি তো এই যে, পূর্ববর্তী পয়গম্বরগণও হুযুর পাক (দঃ) এর প্রেরণের জন্য দুআ কামনা করেছেন এবং তাঁর আগমনের ব্যাপারে অভিলাষী ছিলেন।
[উর্দূ]
অর্থাৎ- "আম্বিয়া কেরামগণ যাঁর গুণ কীর্তন করেছেন, আর সমস্ত রাসূলগণ খাঁর আগমনের জন্য মুনাজাত করেছেন, উভয় জাহানের তিনিই কামনাকৃত সত্ত্বা, তাঁর, উপরই তো দরুদ পাঠ করতে হবে।"
দ্বিতীয়তঃ এই যে, হযরত ইব্রাহীম (আঃ)ই কা'বা শরীফের মেরামত করেছিলেন। কিন্তু সঠিক অর্থে হযুর আকরম (দঃ) এর কদম মুবারকের দ্বারাই কা'বা পরীফের সম্মান এবং মর্যাদা হয়েছে এবং এ পবিত্র ঘরের আবাদও হুযুর (দঃ) এর বদৌলতেই হয়েছে। একথা সর্বজনবিদিত যে, হুযুর আকরম (দঃ) এর আগমনের পূর্বে মক্কার মুশরিকরা কা'বা শরীফের ভিতরেই প্রতিমা স্থাপন করে তথায় পূজার প্রচলন করেছিল। আল্লাহর ঘরে আল্লাহ ছাড়া অন্যের ইবাদত হয়েছে। এমতাবস্থায় বায়তুল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল (দঃ) এর আগমনের অপেক্ষায় ছিল। আর তাঁর আগমনের সাথে সাথেই সেই পবিত্র ঘর প্রতিমার অপবিত্রতা থেকে চিরকালের জন্য পবিত্র হয়ে গেল।
আসল কথা হলো, কা'বা হচ্ছে আল্লাহর ঘর আর হুযুর আকরম (দঃ) হচ্ছেন আল্লাহর নূর, ঘরকে নূরই তো আলোকিত করে। কা'বা শরীফই বা কেন, গোটা জগতই তো হুযুর পাক (দঃ) এর কদমের বদৌলতেই আবাদী হাসিল করেছে।
[উর্দূ]
অর্থাৎ-বড়ই আশ্চর্য যে, পবিত্র জান্নাতুল ফেরদাউস বানিয়েছেন মহান আল্লাহ, আর বন্টন করবেন হুযুর আকরম (দঃ) (এমনিই মাহবুব পাক (দঃ) এর শান)
এ আয়াত দ্বারা এ কথাও বুঝা গেল যে, হুযুর আকরম (দঃ) আল্লাহর বান্দাদেরকে পবিত্র করেন। কুফরী হতে, শিরক হতে, বিভিন্ন গুনাহর কাজ হতে এবং সর্বপ্রকারের চারিত্রিক অপবিত্রতা থেকে যদি পবিত্রতা অর্জন করতে চাও, তবে রাহমাতুললিল আলামীনের রহমতের সমুদ্রে ডুব দাও, সম্পূর্ণ পাক হয়ে যাবে। পানি শুধু বাহ্যিক অপবিত্রতা দূর করে। কিন্তু রাহমাতুললিল আলামীনের একটুখানি দৃষ্টি মন মস্তিক, জাহের বাতেন সব কিছুকেই পবিত্র করে দেয়।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০১০) আয়াতঃ ৭ | (০১২) আয়াতঃ ৯ |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |