রিয়াজুন্নাছেহীন কিতাবে তাফসীরে মুগনী ও মিরছাদুল ইবাদ নামক দুটি গ্রন্থের সুত্রে বর্ণিত আছে- নবী করিম (দঃ) কে আল্লাহ তায়ালা জিজ্ঞেস করলেন, "আপনি আমার কাছে কি প্রার্থনা করেন"? নবী করিম (দঃ) বললেন- "হে আল্লাহ, আপনি রাব্বুল আলামীন, আর আমাকে বানিয়েছেন রাহমাতুল্লিল আলামীন। আমার উম্মত বেশুমার গুনাহগার মুযনেবীন। আমার খাতিরে আমার গুনাহগার উম্মতকে মাফ করে দিন"। আল্লাহ তায়ালা বললেন- "আপনার খাতিরে আপনার উম্মতের মধ্য হতে সত্তর হাজারকে ক্ষমা করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি"। এরপর আর কি প্রার্থনা আছে? নবী করিম (দঃ) পুনরায় গুনাহগার উম্মতের কথা উল্লেখ করলেন। এভাবে ৭০০ (সাতশত) বার প্রার্থনা করলেন। প্রত্যেকবার সত্তর হাজার করে গুনাহগার উম্মতের ক্ষমার কথা ঘোষণা করলেন পাক পরওয়ারদেগার। এভাবে চার কোটি নব্বই লক্ষ উম্মতকে ঐ দিন ক্ষমার আওতায় আনা হলো।
নবী করিম (দঃ) উম্মতের মায়ায় আবারও আরয পেশ করলেন। আল্লাহ তায়ালা এবার বললেন- "এখন আপনি ও আমি একা। হাশরের ময়দানে ফেরেস্তা, আম্বিয়া, আউলিয়া ও হাশরবাসীদের সবার সামনে অবশিষ্টকে ক্ষমা করবো। আপনি চাইবেন- আমি দেবো। সবাই সাক্ষী থাকবে এবং আপনার মর্তবা তখন সকলেই উপলব্ধি করবে"। সোবহানাল্লাহ! এমন শাহী দরবারে গিয়েও নবী করিম (দঃ) নিজের ও পরিবারের জন্য কিছুই না চেয়ে শুধু গুনাহগার উম্মতের নাজাত প্রার্থনা করেছেন। সত্যিই তিনি ঈমানদারদের জন্য রাউফ ও রাহীম সুরা তওবার শেষাংশে এরশাদ হয়েছে: بالمؤمنين رؤوف رَّحِيمٌ অর্থাৎ- "নবী করিম (দঃ) মোমেনদের জন্য স্নেহময় ও দয়াশীল”। এই স্নেহ ও দয়ার বহিঃপ্রকাশ হয়েছিল মি'রাজের রাত্রিতে এবং ভবিষ্যতে হবে হাশরের ময়দানে। যখন আল্লাহর ভয়ে কেউ সুপারিশের জন্য অগ্রসর হবে না- তখন নবী করিম (দঃ) হতাশ হাশরবাসীদেরকে অভয় দিয়ে বলবেন, "তোমাদের শাফাআতের জন্য আমি আছি" (বোখারী ও মুসলিম)। সুবহানাল্লাহ!
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০৪৩) প্রত্যক্ষ দর্শন | (০৪৫) মি'রাজ হতে ষষ্ঠ আকাশে প্রত্যাবর্তন ও পুনঃ গমন |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |