আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছার পর প্রথমে নবী করিম (দঃ) আল্লাহর প্রশংসা করলেন এভাবে-
التحيات للهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ
অর্থ-"আমার জবান, অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ও ধন-সম্পদ দ্বারা যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর জন্য হাদিয়া স্বরূপ পেশ করছি"।
এর উত্তরে আল্লাহ তায়ালা নবীজীকে ছালাম দিয়ে বললেন-
السلام عليك أيها النبي ورحمة الله وبركا
অর্থ-"হে আমার প্রিয় নবী, আপনার প্রতি আমার ছালাম, রহমত ও বরকতসমূহ বর্ষিত হোক"।
উক্ত ছালামের জবাবে নবী করিম (দঃ) আরয করলেন-
السلام علينا وعَلَى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِينَ
অর্থ-"হে আল্লাহ। তোমার ছালাম এবং আমি আমার গুনাহগার উম্মতের উপর এবং তোমার অন্যান্য নেককার বান্দাদের উপরও বর্ষিত হোক"!
আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলের এই ছালাম বিনিময়ের কৌশলপূর্ণ উক্তি ও ভালবাসার নমুনা এবং উম্মতের প্রতি নবীজীর স্নেহ মমতা দেখে ও শুনে জিব্রাইল সহ আকাশের মোকাররাবীন ফেরেস্তাগণ সমস্বরে বলে উঠলেন-
اشْهَدَ أَن لَّا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولَهُ
অর্থ-"আমি (প্রত্যেকে) সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই এবং আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মোহাম্মদ মোস্তফা (দঃ) আল্লাহর অতি প্রিয় বান্দা এবং তাঁর প্রিয় রাসুল"। "আল্লাহর কাছে তিনি প্রিয় ধান্দা- কিন্তু বিশ্ব জগতের কাছে তিনি প্রিয় রাসুল"।
কি যে ঘনিষ্ট সম্পর্ক এখানে বর্ণনা করা হয়েছে-তা কেবল মহাজ্ঞানীরাই অনুধাবন করতে পারবেন।
আল্লাহ তায়ালা নিজের ও হাবীবের মধ্যে ভাব বিনিময়ের এই তাশাহ্হুদ আমাদের নামাযের একটি ওয়াজিব অংশ করে দিয়েছেন। এর প্রতিটি শব্দ নামাযের বৈঠকে ওয়াজিব করে দিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালার দরবারে নবী করিম (দঃ) যেভাবে সম্মোধনমূলক তাহিয়্যাত পাঠ করেছিলেন এবং আল্লাহ তায়ালাও যেভাবে সম্বোধন করে নবীজীকে ছালাম দিয়েছিলেন, অনুরূপভাবেই তাশাহুদ পড়ার সময় প্রত্যেক মুছল্লিকে আল্লাহকে সম্বোধন করে তাহিয়্যাত অংশটুকু পাঠ করতে হবে এবং নবী করিম (দঃ)-কেও সম্বোধন করে ছালাম পেশ করতে হবে। ফতোয়া শামীর এবারত দেখুন
ويقصد بها الانشاء لا الاخبار
অর্থ-“আল্লাহর তাহিয়্যাত এবং রাছুলের প্রতি ছালাম পাঠকালীন সময়ে খেতাব বা সম্বোধন করতে হবে। শুধু মি'রাজের ঘটনা বর্ণনা করা উদ্দেশ্য নয়”।
(ফতোয়ায়ে শামী, ফতোয়ায়ে আলমগীরী ও বাহারে শরীয়ত দ্রষ্টব্য)।
যেহেতু মুমিনদের জন্য নামায মি'রাজ স্বরূপ- সুতরাং মি'রাজের মতই আল্লাহ ও রাসুলকে সম্বোধন করতে হবে। সম্বোধন করা হয় হাযির নাযির ব্যক্তিকে। সুতরাং নবীজী হাযির ও নাযির। (ইমাম গাযালীর ইহইয়া)
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০৪২) আল্লাহর সাথে কালাম | (০৪৪) উম্মতের জন্য মাগফিরাতের সুপারিশ |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |