হিজরী দ্বিতীয় শতকের চতুর্থ দশক। বিশাল আয়তন ইসলামী বিশ্বের সরল সহজ তাহযীব-তমদ্দুনের মুকাবিলায় পৃথিবীর অন্যান্য সভ্যতা সংস্কৃতি ও জ্ঞান-বিজ্ঞান মুখোমূখী দাঁড়িয়ে প্রতিদিন নতুন পরিস্থিতি ও সংকট সৃষ্টি হয়েই চলেছে। ইসলামী উম্মাহ্দ্র মাঝেও ইজাতিহাদ নীতি নির্ধারণ এবং উদ্ভাবন প্রক্রিয়ায় এক অবিন্যস্ত, আগোছালো ভাব। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হযরত ইমাম আবু হানীফা (র.)-এর দূরদৃষ্টি ইসলামী ফিকহ বিধিবদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তা তীব্রভাবে অনুভব করেন। তিনি ইসলামী ফিকহ এর এক বিশেষজ্ঞ দল নিয়ে এ মহতী কাজে ব্রতী হন। এখান থেকেই শুরু হলো ইসলামী ফিকহ সংকলন ও সম্পাদনার প্রক্রিয়া।
হযরত ইমাম আ'যম আবু হানীফা (র.)-এর পূর্ববর্তী যুগে ফিকহ্ কোন স্বতন্ত্র ও বিন্যস্ত শাস্ত্র ছিল না। মাসআলা বা ধর্ম বিষয়ক প্রশ্নের জওয়াব দান বা ফাওয়া প্রদানের কোন সঠিক বিধিবদ্ধ নিয়ম নীতি ছিল না। হযরত ইমাম আ'যম আবূ হানীফা নু'মান ইব্ন সাবিত (র.) এ বিষয়ে মনোযোগ দিয়ে দেখতে পেলেন এমন অসংখ্য মাসআলা রয়েছে, যে বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে কোন হাদীস বা সাহাবীর বাণী পাওয়া যায় না। কাজেই, তিনি কুরআন মজীদ, সুন্নাহ্ ও ইজমার আলোকে ইজতিহাদ ও কিয়াস প্রক্রিয়া অবলম্বন করেন। অবশ্য তাঁর আগে সাহাবী ও তাবিঈগণও কিয়াস এর পন্থা অবলম্বন করেছেন। কিন্তু তখন যুগ ছিল সাদাসিধা ধরণের, চাহিদার ব্যাপ্তিও ছিল সীমিত। তাই তখন কিয়াস প্রসারতার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়নি। সময়ের বিবর্তনে, সমস্যার ব্যপ্তিতে চাহিদা প্রসারিত হলে কিয়াসের প্রসারতার প্রশ্ন ও ব্যাপকভাবে দেখা দেয়।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০১৫) ফিকহ সংকলন ও সম্পাদনার ইতিহাস | (০১৭) কিয়াস ও রায় (অভিমত) |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |