হিজরী দ্বিতীয় শতকের তৃতীয় দশকে ইসলামী ফিকহ্ এর সংকলন ও সম্পাদনা শুরু হয়। সে যুগ থেকে শুরু করে বর্তমান যুগ পর্যন্ত ইসলামী ফিকহকে তিনটি যুগে বিভক্ত করা যায়।
হিজরী দ্বিতীয় শতকের তৃতীয় দশক থেকে প্রথম যুগের সূচনা এবং তা পরিসমাপ্তি হয় তৃতীয় শতকের শেষাংশে। এ যুগে হযরত ইমাম আবু হানীফা (র.) তাঁর সহযোগী সহকর্মী ও শিষ্য শাগরিদগণের সহায়তায় ফিরে নিয়মতান্ত্রিক সংকলন শুরু করেন। তিনি বেঁচে থাকতেই এর সম্পাদনাও পূর্ণাংগ করেন। পরবর্তী সময়ে অন্যান্য ইমামগণ নিয়মিতভাবে ইল্ম ফিকহ্ গ্রন্থাকারে রচনা ও প্রকাশ করেন। এবং মুসলিম উম্মাহ্ ব্যাপকভাবে তা অনুসরণ করতে থাকে। কাযীগণ ঐ ফিকহের অনুসারণে মুকাদ্দমার 'ফয়সালা' দিতে থাকেন। মুসলিম জনতা ইমামগণের তাকলীদ করতে থাকেন। অবশ্য ইজতিহাদ প্রক্রিয়াও নিজ গতিতে চলমান ছিল। এ যুগের শ্রেষ্ঠ ইমামগণের শিষ্যবৃন্দ তাঁদের উস্তাদগণের সম্পাদিত ফিরে প্রচার প্রসারে ব্রতী হন। তাঁদের অভিমতের ব্যাখ্যা প্রদান করেন, তাঁদের উদ্ভাবিত মূলনীতির আলোক নতুন নতুন মাস'আলার জওয়াব দিতে থাকেন। উসূলে ফিকহ্ও এ যুগে বিধিবদ্ধ হতে থাকে।
এ যুগের আরম্ভ চতুর্থ শতকের শুরুতে এবং পরিসমাপ্তি সপ্তম শতকে। এ যুগে তাকলীদ ব্যাপকতা লাভ করে। প্রথম যুগের ইমামগণের উদ্ভাবিত নিয়ম-নীতির সমর্থনে গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থাবলী রচিত হয়। এ সময়ের মানব জীবনে নতুন নতুন সমস্যা ও প্রশ্নে দেখা দিলে তাঁর ধর্মীয় সমাধান অনুসন্ধান করা হয়। প্রথম যুগে নির্দ্ধারিত ও স্থিরকৃত মূলনীতিসমূহের আলোকে মাসাইলের ইব্রাজই (উদ্ভাবনই) ছিল এ যুগের ব্যাপক কাজ।
সপ্তম শতকের প্রারম্ভ থেকে এ যুগ শুরু হয়েছে। মূলত এ যুগে ইজতিহাদ করার মত যোগ্যতাসম্পন্ন লোক না থাকার কারণে ইজতিহাদ প্রক্রিয়া থেমে যায়। ফলে সাধারণ মানুষ ও বিশিষ্ট লোক সকলকেরই ইমামগণের তাকলীদ করতে হয়। অবস্থা এখনও অব্যাহত রয়েছে।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০১৪) ফিকহ শাস্ত্রের পর্যায়ক্রমিক বিকাশ | (০১৬) প্রথম যুগে ইজতিহাদ এবং ফিকহ সংকলন ও সম্পাদনা |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |