বিদআতে হাসনা ও সাইয়ার বর্ণনা ইতিপূর্বে দেয়া হয়েছে। যে বিদ্আত ইসলামের বিপরীত বা কোন সুন্নাত বিলুপ্তকারী হিসেবে সাব্যস্ত হয়, তা বিদ্আতে সাইয়া, আর যে বিদআত এ রকম হবে না, তা বিদ্আতে হাসনা। এখন ওই পাঁচ প্রকারের বিদআতের লক্ষণসমূহ জেনে নিন।
বৈধ বিদআত (بدعة جائزة) ওইসব নতুন কাজ, যা শরীয়তে নিষিদ্ধ নয় এবং কোন সদুদ্দেশ্য বিহীন করা হয়। যেমন- নানা রকম খাবার-পানীয় গ্রহণ করা এবং অন্যান্য সাধারণ কাজ করা। এর প্রমাণ মিরকাত ও শামীর উদ্ধৃতি দিয়ে ইতিপূর্বে দেখানো হয়েছে। এসব কাজের জন্য পাপ-পুণ্য কিছু নেই।
মুস্তাহাব বিদআত (بدعة مستحبة) ওইসব নতুন কাজ, যা শরীয়তে নিষিদ্ধ নয় এবং সাধারণ মুসলমানগণ সেগুলোকে পুণ্যের কাজ মনে করে থাকেন বা কেউ তা সদুদ্দেশ্যে করেন। যেমন- মাহফিলে মীলাদ শরীফ এবং বুযুর্গানে কিরামের ফাতিহা, যাকে সাধারণ মুসলমানগণ পুণ্যের কাজ মনে করেন।
এসব কাজ যাঁরা করবেন, তাঁরা ছওয়াব পাবেন, আর যাঁরা করবেন না, তাঁরা পাপী হবেন না। এর দলীলসমূহ দেখুন-
'মিরকাত' গ্রন্থের الاعتصام অধ্যায়ে উল্লেখিত আছে-
وَرُوِيَ عَنْ ٱبْنِ مَسْعُودٍ مَا رَآهُ ٱلْمُؤْمِنُونَ حَسَنًا فَهُوَ عِندَ ٱللَّهِ حَسَنٌ وَفِي حَدِيثٍ مَرْفُوعٍ وَلَا تَجْتَمِعُ أُمَّتِي عَلَى ٱلضَّلَالَةِ
(হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে- যে কাজকে মুসলমানগণ ভাল মনে করে, তা আল্লাহ তা'আলার নিকটেও ভাল হিসেবে গণ্য
¶ ইমাম আবু দাউদ তায়লসী : আল-মুসনাদ : ১/১৩০ হাদিস : ২৪৬, ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল : আল মুসনাদ : ১/৩৭৯ : হাদিস : ৩৬০০ এবং ১৭০২, ইমাম আবু নুঈম ইস্পাহানী : হুলিয়াতুল আউলিয়া : ১/৩৭৫পৃ:ইমাম তাবরানী, মুজামুল আওসাত, ৪/৫৮পৃ: হাদিস, ৩৬০২ দারুল হারামাঈন, কাহেরা, মিশর, আল্লামা ইবনে হাজার হায়সামী : মাযমাউদ যাওয়াইদ : ১/১৭৭-১৭৮ পৃ: দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত,লেবানন, আল্লামা ইবনে কাসীর : বেদায়া ওয়ান নিহায়া : ১০/৩২৭ : হাদিস:৪০২, আল্লামা আযলূনী : কাশফুল খাফা : ২/২৪৫ পৃ: : হাদিস : ২২১৪, ইমাম বায্যার : আল মুসনাদ : ৫/২১২ পৃ: : হাদিস : ১৮১৬, ইমাম বায়হাকী : আল-ই‘তিক্বাদ : ১/৩২২ পৃ:,আল্লামা খতিব বাগদাদী : তারীখে বাগদাদ : /৪৪৬ পৃ:,ইমাম বগভী : শরহে সুন্নাহ : ১/১০৫ পৃ:,ইমাম আহমদ : মুসনাদ : ১/৩৬৭ পৃ: : হাদিস : ৫৪১, আল্লামা হাকেম নিশাপুরী : আল-মুস্তাদরাক : ৩/৮৩পৃ:হাদিস: ৪৪৬৫,তিনি বলেন হাদিসের সনদটি সহিহ,আর তাঁর সাথে যাহাবী একমত পোষন করেছেন,ইমাম তাবরানী : মু‘জামুল কবীর :৭/১১২-১১৫ হাদিস নং ৮৫৮২ ও ৮৫৯৩,ইমাম ইবনে রযব : জামিউল উলূম : ১/২৫৪পৃ: ইমাম সাখাভী : আল মাকাসিদুল হাসানা : ৪২২ পৃ: : হাদিস : ৯৫৭, আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী ,মওদ্বুআতুল কবীর : ৩২ পৃ: নূর মুহাম্মদ কারখানা, করাচি, আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী : মিরকাত : ৩/২৫৪ পৃ:,ইমাম আহমদ,ফাদ্বায়েলুল সাহাবা,১/৩৬৭পৃ:হাদিস,৫৪১,আবূ সাঈদ ইবনে আরাবী (ওফাত.৩৪০হিঃ) মু‘জামে ইবনে আরাবী,২/৪৪৩পৃ:হাদিস,৮৬১,তিনি হাদিসটি উক্ত সাহাবির দুইজন ছাত্রের দ্বারা দু‘টি সূত্রে বর্ণনা করেছেন, যায়লাঈ, নাসবুর রায়্যাহ, ৪/১৩৩পৃ:তিনি হাকিম নিশাপুরীর রায়কে গ্রহন করেছেন,তিনি তার কিতাবের অন্যত্র বাবুল ইসতিহাসানেও বর্ণনা করেছেন, ইবনে কাসীর,তুহফাতুল তা¡লেব বি মা‘রিফাতু আহাদিস, ১/৩৯১পৃ: হাদিস/৩৩৪, তিনি বলেন,হাদিসটির সনদ শক্তিশালী। হায়সামী,গায়াতুল মাকসুদ ফি যাওয়াইদুল মুসনাদ, ১/১১১পৃ: হাদিস,২৪৬, দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ,বয়রুত,লেবানন, ইবনে= হাজার আসকালানী, ইত্তেহাফুল মুহরাত,১০/১৯৬পৃ:হাদিস,১২৫৬৮, ইবনে হাজার, দিরায়া ফি তাখরীজে হেদায়া, অধ্যায়, কিতাবুল ইজারা, ২/১৮৭পৃ:হাদিস,৮৬৩, তিনি বলেন সনদটি ‘হাসান’, সুয়ূতি,আদ্দরুল মুনতাসিরা ফি আহাদিসুল মুসতাহিরাহ, ১/১৮৮পৃ: হাদিস,৪০১, জামিয়াতুল মুলকে সুউদ, রিয়াদ. সৌদি আরব, দরবেশ হুত, আস্-সুনানিল মুত্তালিব, ১/২৪৭পৃ: হাদিস, ১২৫৭, দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ,বয়রুত, তিনি এ হাদিসটির ইবনে আব্বাস থেকে আরেকটি সূত্র আছে বলে উলেখ করেছেন। ছুহাইব আব্দুল জাব্বার, জামেউল সহিহ লিল সুনান ওয়াল মাসানিদ, ৩/১১২পৃ:ও ৩/৪৩৮পৃ:, দারেকুতনী, আল-ইলল, ৫/৬৬পৃ: হাদিস,৭১১, তিনি তাঁর এ গ্রন্থে উক্ত সাহাবির অনেক ছাত্রের সূত্রের দ¦ারা হাদিসটি বর্ণনা করেছেন। তাহের পাটনী, তাযকিরাতুল মওদ্বুআত,১/৯১পৃ: তিনি বলেন সনদটি ‘হাসান’,মোল্লা আলী ক্বারী, আসরারুল মারফূআহ, ১/১০৬পৃ: হাদিস,৫৫, তিনি এ সাহাবি থেকে মারফূ ও মওকুফ উভয় সূত্রে বর্ণনা করেছেন। হাসকাফী, র্দুরুল মুখতার ওয়া হাশিয়ায়ে ইবনে আবেদীন, ২/২৩৭পৃ: মায়্যেতের দাফন অধ্যায়,ও ৪/৩৬৪পৃ: কিতাবুল ওয়াকফ অধ্যায়।
এবং হাদীসে মরফুতে (যে হাদীসে বর্ণনার দিক দিয়ে কোন দুর্বলতা নেই) আছে যে
¶ وَفِي حَدِيثٍ مَرْفُوعٍ: لَا تَجْتَمِعُ أُمَّتِي عَلَى الضَّلَالَةِ
“উম্মতে মুহাম্মদী কখনও গুমরাহীতে ঐক্যমত হবে না।”
¶ ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী, মেরকাত, ১/২২৪পৃ: হা/১৪১এর আলোচনায় উল্লেখ করেছেন। ইমাম হাকেম নিশাপুরী (رحمة الله) হাদিসটি এভাবে সংকলন করেন-
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَا يَجْمَعُ اللَّهُ أُمَّتِي عَلَى الضَّلَالَةِ أَبَدًا.
-‘‘সাহাবী ইবনে উমর (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, আমার উম্মতকে সর্বদাই গোমরাহের উপর ঐকমত্য হবে না।’’
(ইমাম হাকেম, আল-মুস্তাদরাক, ১/২০০পৃ: হা/৩৯৩, ইমাম তিরমিযি, আস-সুনান, ৪/৪৬৬পৃ: হা/২১৬৭)
মিশকাত শরীফের শুরুতে আছে-
إِنَّمَا ٱلْأَعْمَالُ بِٱلنِّيَّاتِ وَإِنَّمَا لِٱمْرِئٍ مَا نَوَى
(আমলসমূহ নিয়তের উপর নির্ভর করে এবং মানুষের বেলায় তাই হবে, যা সে নিয়ত করে।)
¶ ইমাম বুখারী, আস-সহীহ, ১/৬পৃ: হা/১, সহীহ মুসলিম, হা/১৯০৭, সুনানে তিরমিযি, হা/১৬৪৭, সুনানে আবি দাউদ, হা/৩৮৭-৩৮৮, সহীহ ইবনে খজায়মা, হা/১১৪২, সুনানে ইবনে মাযাহ, হা/৪২২৭
দুররুল মুখতারের প্রথম খণ্ডের مستحبات الوضوء শীর্ষক আলোচনায় উল্লেখিত আছে-
وَمُسْتَحَبُّهُ وَهُوَ مَا فَعَلَهُ ٱلنَّبِيُّ عَلَيْهِ ٱلسَّلَامُ مَرَّةً وَتَرَكَهُ أُخْرَىٰ وَمَا أَحَبَّهُ ٱلسَّلَفُ
(মুস্তাহাব হচ্ছে ওইসব কাজ, যা হুযূর আলাইহিস সালাম কোন সময় করেছেন, আবার কোন সময় করেননি এবং ওইসব কাজ, যা অতীতের মুসলমানগণ ভাল মনে করতেন।)
¶ ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, রুদ্দুল মুহতার, ১/১২৩পৃ:
ফাওয়ায়ে শামীর পঞ্চম খণ্ডে কুরবানী শীর্ষক আলোচনায় বর্ণিত আছে-
فَإِنَّ ٱلنِّيَّاتِ تَجْعَلُ ٱلْعَادَاتِ عِبَادَاتٍ
(সদুদ্দেশ্য অভ্যাসকে ইবাদতে পরিণত করে।)
এ অনুরূপ কথা 'মিরকাত' গ্রন্থের নিয়ত শীর্ষক আলোচনাতেও উল্লেখিত আছে।
উপরোক্ত হাদীসসমূহ ও ফকীহগণের উদ্ধৃতিসমূহ থেকে বোঝা গেল, যেসব বৈধ কাজ ছওয়াবের উদ্দেশ্যে করা হবে বা মুসলমানগণ একে ছওয়াবের কাজ মনে করে, তা আল্লাহর নিকটও ছওয়াবের কাজ হিসেবে গণ্য।
মুসলমানগণ হচ্ছেন আল্লাহর সাক্ষী; যা ভাল বলে সাক্ষ্য দিবেন, তা ভাল, আর যা মন্দ বলবেন, তা মন্দ হিসেবে গণ্য হবে।
সাক্ষ্যের বিস্তারিত বিশ্লেষণ আমার কিতাব 'শানে হাবীবুর রহমান' দেখুন এবং এ কিতাবেও 'বুযুর্গানে কিরামের উরস' শীর্ষক বর্ণনায় এর কিছু আলোচনা করা হবে ইন্শা আল্লাহ।
আবশ্যিক বিদ্আত (بدعة واجبة) এমন ধরনের নতুন কাজ, যা শরীয়তের দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ নয় এবং একে বাদ দিলে ধর্মে ক্ষতি হয়। যেমন- কুরআনে হরকত দেয়া, ধর্মীয় মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা এবং ইলমে নাহু ইত্যাদি শিক্ষা করা। এর বিস্তারিত বিবরণ আগে দেয়া হয়েছে।
মাকরূহ বিদআত (بدعة مكروهة) এমন ধরনের নতুন কাজ, যার দরুণ কোন সুন্নাত রহিত হয়ে যায়। যদি সুন্নাতের গাইর মুয়াক্কাদা রহিত হয়, তাহলে তা বিদ্আতে মাকরূহ তানযীহী, এবং যদি সুন্নাতে মুয়াক্কাদা রহিত হয়ে যায়, তাহলে তা বিদ্আতে মাকরূহ তাহরীমী হিসেবে গণ্য হবে। এর উদাহরণ ও প্রমাণসমূহও ইতিপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে।
হারাম বিদ্আত (بدعة حرام) এমন নতুন কাজ যদ্বারা ওয়াজিব রহিত হয়ে যায়, অর্থাৎ ওয়াজিব বিলুপ্তকারী হিসেবে প্রতিভাত হয়।
দুররুল মুখতারের আযান অধ্যায়ে আছে যে, আযানের পরে সালাম দেয়া ৭৮১ হিজরীতে চালু হয়েছে। কিন্তু তা বিদ্আতে হাসনা হিসেবে গণ্য। এর প্রেক্ষাপটে ফাতওয়ায়ে শামীতে 'আযানে জাউক' (দ্বৈত কণ্ঠে আযান দেয়া) প্রসঙ্গে বলা হয়েছে-
فَفِيْهِ دَلِيلٌ عَلَى أَنَّهُ غَيْرَ مَكْرُوهٍ لِأَنَّ الْمُتَوَارِثُ لَا يَكُونُ مُكْرُوهَا وَكَذَالِكَ تَقُولُ فِي الأَذَانِ بَيْنَ يَدَي الْخَطِيبِ فَيَكُونُ بِدْعَةً حَسَنَةً إِذَا مَارَاهُ الْمُؤْمِنُوْنَ حَسَنًا فَهُوَ عِنْدَ اللَّهِ حَسَنٌ
(সুতরাং, প্রমাণিত হলো যে, এ কাজ মাকরূহ নয়। কেননা, পুনঃ পুনঃ হওয়ার ফলে অথবা যুগ পরষ্পরায় মুসলমানদের আমলের ফলে কোন কাজ মাকরূহ হয় না। অনুরূপভাবে, খুৎবা প্রদানকারীর সামনে আযান দেয়া বিদ্আতে হাসনা বলে গণ্য করা হয়। যখন মুমিনগণ কোন কাজ ভাল মনে করে, তা আল্লাহর কাছেও ভাল হিসেবে বিবেচিত হয়।)
¶ ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, রুদ্দুল মুহতার, ১/১২৩পৃ:
এর থেকে প্রতীয়মান হলো যে, কোন বৈধ কাজ মুসলমানদের মধ্যে প্রচলিত হলে, এতে ছওয়াব নিহিত রয়েছে।
এখন আমি আপনাদেরকে দেখাচ্ছি যে ইসলামের কোন ইবাদতই বিদ্আতে হাসনা থেকে মুক্ত নয়। নিম্নে প্রদত্ত তালিকা দেখুন।
نعمة البَدْعةُ هذه
(এটা খুবই উত্তম বিদআত।)
এখন দেওবন্দীরা বলুন, বিদআত থেকে মুক্ত হয়ে ধর্মীয় জীবন যাপন করাটা সম্ভবপর হবে কি? যখন ঈমান ও কলেমার মধ্যে বিদ্আত ঢুকে গেছে, তখন বিদ্আত থেকে রেহাই কিভাবে সম্ভব হবে?
পার্থিব বস্তুসমূহ - বর্তমান পৃথিবীতে এমন সব বস্তু আবিষ্কার হয়েছে, যার কোন নাম-নিশানা কুরুনে ছালাছায় ছিল না এবং এগুলোকে বাদ দিয়ে পার্থিব জীবন যাপন করা অসম্ভব। প্রত্যেকেই এগুলো ব্যবহার করতে বাধ্য।
রেল, মোটর, উড়োজাহাজ, স্টিমার, টাংগা, ঘোড়াগাড়ি, চিঠি, খাম, তারবার্তা, টেলিফোন, রেডিও, মাইক ইত্যাদি এবং এদের ব্যবহার বিদআত। অথচ প্রত্যেক মতবাদের লোক এগুলোকে বিনা সংকোচে ব্যবহার করেন।
দেওবন্দী ওহাবীরা বলুন, বিদ্আতে হাসানাকে বাদ দিয়ে দুনিয়াবী জিন্দেগী যাপন করা কি সম্ভব? কখনই নয়।
জনৈক মৌলবী সাহেব কোন এক ব্যক্তির বিবাহ পড়াতে গিয়েছিলেন। বরের গলায় ফুলের মালা ছিল।
মৌলবী সাহেব যাওয়া মাত্র বললেন-
"এ মালা বিদআত, শিরক, হারাম। হুযূর (দঃ), সাহাবায়ে কিরাম, তাবেঈন, তবে তাবেঈন—কেউ এ মালা ব্যবহার করেননি। বলুন, মালা পরা সম্পর্কে কোন্ কিতাবে লিখা আছে?"
তখন লোকেরা মালা খুলে ফেললেন।
নিকাহ পড়ার পর বরের পিতা মৌলবী সাহেবকে দশ টাকার একটি নোট দিলেন। মৌলবী সাহেব নোটটি পকেটে রাখতে যাচ্ছিলেন, অমনি বর মৌলবীর হাত ধরে ফেললেন এবং বললেন—
"মৌলবী সাহেব, নিকাহ পড়িয়ে টাকা নেয়াটা বিদআত, হারাম, শিরক। হুযূর (দঃ), সাহাবায়ে কিরাম, তাবেঈন ও তবে তাবেঈনের মধ্যে কেউ টাকা নেননি। বলুন, নিকাহ পড়িয়ে ফিস নেয়া কোন্ কিতাবে লিখা আছে?"
মৌলবী সাহেব বললেনঃ "এতো খুশী হয়ে দিলেন।"
উত্তরে বর বলেনঃ "মালাটা খুশীর ছিল, দুঃখের ছিল না।"
মৌলবী সাহেব লজ্জায় মাথা নত করে ফেললেন। এটিই হচ্ছে ওইসব মহারথীদের দৃষ্টিতে বিদআত।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০০৩) বিদআতের প্রকারভেদ | (০০৫) বিদ্আতের প্রদত্ত সংজ্ঞা ও প্রকারভেদ প্রসংগে উত্থাপিত আপত্তিসমূহ |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |