সাহাবায়ে কেরাম রা. সত্যের মাপকাঠি । আল্লাহ্পাক এরশাদ করেছেন-
‘অতএব তারা যদি ইমান আনে, যেমন ইমান এনেছো তোমরা, তবে তারা সুপথ পাবে'।
সূরা বাকারা, ১৩৭ আয়াত
এ সম্পর্কে তাফসীরে মাআরেফুল কোরআন রচয়িতা বলেন ‘এ আয়াতের বর্ণনা সংক্ষিপ্ত হলেও তাতে বিশদ বিবরণ এবং ব্যাখ্যার প্রতি ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। কেননা ‘যেমন ইমান এনেছো তোমরা' বাক্যে রসুলে আকরম স. ও সাহাবায়ে কেরামকে সম্বোধন করা হয়েছে। এই আয়াতে তাঁদের ইমানকে আদর্শ ইমানের মাপকাঠি নির্ধারণ করে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, আল্লাহ্তায়ালার কাছে গ্রহণীয় ও পছন্দনীয় ইমান হচ্ছে সেরকম ইমান, যা রসুলে পাক স. এর সাহাবায়ে কেরাম অবলম্বন করেছেন। যে ইমান ও বিশ্বাস তাঁদের ইমান থেকে চুল পরিমাণ ভিন্ন, সে ইমান আল্লাহ্তায়ালার নিকট গ্রহণযোগ্য নয়'।
মোরতাদ মওদুদী এবং তার অনুসারীরা সাহাবায়ে কেরামকে সত্যের মাপকাঠি মানে না । আল্লাহতায়ালা সমস্ত উম্মতকে এদের ফেত্না থেকে হেফাজত করুন। আমিন।
‘হেকায়েতে সাহাবা’ রচয়িতা কাযী আয়াজ র. এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন,
‘সাহাবীগণের সম্মান করা রসুলে আকরম স. এর সম্মান করার মতো। তাঁদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হওয়া, তাঁদের অনুকরণ করা, তাঁদের প্রশংসা করা, তাঁদের জন্য দোয়া করা, তাঁদের মধ্যে পরস্পরের মতবিরোধ সম্পর্কে মৌন থাকা একান্ত আবশ্যক' ।
রসুলে আকরম স. এরশাদ করেছেন
‘আমার সাহাবীগণের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো! আল্লাহকে ভয় করো! তাঁদেরকে গালি-দোষারোপের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ো না। যে তাদেরকে ভালোবাসে, সে আমাকে ভালোবাসে বলেই তাদেরকে ভালোবাসে। যে তাদের সঙ্গে শত্রুতা করে, সে আমার সঙ্গে শত্রুতা পোষণ করে বলেই তাদের সঙ্গে শত্রুতা করে। যে তাদেরকে কষ্ট দেয়, সে যেনো আমাকেই কষ্ট দেয়। যে আমাকে কষ্ট দেয়, সে আল্লাহকেই কষ্ট দেয়। আর যে আল্লাহকে কষ্ট দেয়, অতিশীঘ্রই সে আজাববেষ্টিত হবে'।
রসুল স. আরো বলেছেন
‘আমার সাহাবীগণকে গালি দিয়ো না। তোমাদের কেউ উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ দান করলেও তাদের এক মুদ বা অর্ধ মুদ যব খরচ করার সমান সওয়াব পাবে না'।
তিনি স. আরো বলেছেন
‘যে ব্যক্তি আমার সাহাবীদের দোষারোপ করে, তার উপর আল্লাহ্তায়ালার লানত, ফেরেশতাদের লানত এবং সমস্ত মানুষের লানত । তার ফরজ, নফল— কোনো ইবাদতই আল্লাহ কবুল করবেন না' ।
যে ব্যক্তি সাহাবীদের প্রশংসা করে, সে ব্যক্তি মুনাফেকি থেকে পবিত্র থাকে । আর যে তাঁদের শানে বেআদবী করে, সে বেদাতী, মুনাফিক এবং সুন্নতের প্রতিপক্ষ ।
হাদিস শরীফে এসেছে ‘আমার সাহাবা এবং আমার জামাত সম্পর্কে হুঁশিয়ার থেকো। যে ব্যক্তি এ বিষয়ে সতর্ক থাকবে, দুনিয়া ও আখেরাতে আল্লাহ্পাক তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকবেন'। অন্য হাদিসে এসেছে ‘যে ব্যক্তি সাহাবীদের ব্যাপারে আমার খেয়াল রাখবে, কিয়ামতের দিনে আমি হবো তার রক্ষক'।
হাদিস শরীফের নির্দেশানুসারে ১. সাহাবীদের দোষচর্চাকারীদের পিছনে নামাজ পড়া যাবে না ২. তাদের মেয়ে বিয়ে করা যাবে না ৩. তাদের ছেলের সঙ্গে মেয়ে বিয়ে দেওয়া যাবে না এবং ৪. তাদের জন্য দোয়া করা যাবে না। উল্লেখ্য, সালাম আদান-প্রদান, জানাজা পড়া ইত্যাদি বিষয়ও দোয়ার অন্তর্ভূত।
সাহাবীগণের দুর্নামকারী দল তিনটি। ১. শিয়া ২. খারেজী ৩. মওদুদী। আহসানুল ফতোয়া গ্রন্থের অভিমত- কোনো মসজিদের ইমামকে মওদুদী মতবাদের অনুসারী বলে জানা গেলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে মসজিদ থেকে বহিষ্কার করতে হবে। এ দায়িত্ব মসজিদ কমিটির। কমিটি দায়িত্ব পালন না করলে মহল্লাবাসীদের দায়িত্ব ইমাম এবং কমিটিকে অপসারিত করা।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(২৬) আউলিয়াগণের কারামত | (২৮) খোলাফায়ে রাশেদীনের শ্রেষ্ঠত্ব |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |