হযরত আদম আলাইহিস সালাম থেকে শুরু করে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম পর্যন্ত প্রত্যেক নবী ও রাসূল নাবীয়্যে আখিরুজ্জামাঁর আগমনের শীর্ষ সংবাদ ও ভবিষ্যৎ বাণী নিজ নিজ উম্মত দের শুনিয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবে যখন হুযুর আলাইহিস সালাতু সালাম এর নাম মুবারক নিয়েছেন তখন দরুদ পাঠ করেছেন। এছাড়াও তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অবস্থায় দরুদ শরীফ পাঠ করেছেন। যেমনঃ
আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা যখন হযরত আদম ( আলা নবীয়্যিনা ওয়া আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম ) - কে সৃষ্টি করলেন, তখন চোখ খুলতেই আরশের উপর মুহাম্মাদ মুস্তাফা ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম ) এর মহান নাম লিপিবদ্ধ দেখতে পেলেন ৷
আরয করলেন, “ হে আল্লাহ ( আযযা ওয়া জাল্লাহ )! তোমার দরবারে কি আমার চেয়েও কেউ সম্মানিত রয়েছেন? "
মহান স্রষ্টা ( আযযা ওয়া জাল্লাহ ) এরশাদ ফরমালেন, “হাঁ, এ নামের ধারক প্রিয় হাবীব ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম ), যিনি তোমার সন্তান দের অন্তর্ভুক্ত হবেন আমার নিকট তোমার চাইতেও বেশী প্রিয় । হে প্রিয় আদম ! আমি যদি আমার প্রিয় হাবীবকে সৃষ্টি না করতাম, তবে না আসমান সৃষ্টিকরতাম, না যমীন, না জান্নাত সৃষ্টি করতাম, না দোযখ।" অতঃপর যখন আল্লাহ ( আযযা ওয়া জাল্লাহ ) হযরত আদম ( আলাইহিস সালাতু ওয়াস্ সালাম ) - এর মুবারক ছাতিমা থেকে হযরত হাওয়া রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা ) - কে সৃষ্টি করলেন, তখন হযরত আদম আলাইহিস্ সালাতু ওয়াস সালাম ) তাকে দেখতে পেলেন ।
যেহেতু আল্লাহ ( আযযা ওয়া জাল্লা ) হযরত আদম ( আলাইহিস সালাতু ওয়াস্ সালাম ) - এর পবিত্র তম শরীরে জৈবিক প্রবৃত্তি ' ( শাহওয়াত ) ও সৃষ্টি করেছিলেন, সেহেতু হযরত আদম ( আলাইহিস্ সালাতু ওয়াস ওয়াস্ সালাম ) আরয করলেন, “ হে আল্লাহ ! ( আযযা ওয়া জাল্লা ) তার সাথে আমার বিয়ে করিয়ে দিন! ”
আল্লাহ তা'আলার নির্দেশ হলো - "মহর পরিশাধ করো ”
আরয করলেন, “ মুনিব ! তার মহর কি?”
এরশাদ হলো “ আরশের উপর যেই বরকতময় নাম লিপিবদ্ধ রয়েছে, ওই নামে আমার হাবীব ( সাল্লাল্লাহু তা ' আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম ) এর প্রতি দশবার দুরূদ শরীফ পাঠ করো!”
আরয করলেন, “হে আল্লাহ ( আযযা ওয়া জাল্লা ) যদি আমি দুরূদ শরীফ পাঠ করি তবে কি হাওয়ার সাথে আমার বিয়ে করিয়ে দেবেন? "
এরশাদ ফরমালেন, "হাঁ '।
তখন হযরত আদম ( আলাইহিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম ) দুরূদ শরীফ পাঠ করলেন । আর আল্লাহ্ ( আযযা ওয়া জাল্লা ) হযরত হাওয়া ( রাদ্বিয়াল্লাহু তা ' আলা আনহা ) ' র সাথে তাঁর বিয়ে করিয়ে দিলেন ।
হযরত ইমাম আবুল কাসেম আল - কোশাইরী ( রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ' র পুস্তিকায় হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাদ্বিয়াল্লাহু তা ' আলা আনহুমা ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহ্ ( আযযা ওয়া জাল্লাহ ) হযরত মূসা আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম - এর প্রতি ওহী প্রেরণ করলেন, আমি যদি তোমার মধ্যে দশ হাজার কান সৃষ্টি করে দিই, যেগুলো দ্বারা তুমি আমার কথা শুনো, দশ হাজার জিহ্বা সৃষ্টি করে দিই, যেগুলো দ্বারা তুমি আমার সাথে কথা বলো, তবুও তুমি আমার নিকট বেশী প্রিয় ও নৈকট্য ধন্য তখনই হবে, যখন তুমি মুহাম্মদ - ই - আরবী ( সাল্লাল্লাহু তা ' আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম ) - এর প্রতি বেশী পরিমাণে দুরূদ শরীফ প্রেরণ করবে ।
হে মূসা ( আলাইহিস সালাম ) ! তুমি কি একথা পছন্দ করো যে, তুমি কিয়ামতের দিন পিপাসার্ত হবেনা? "
আরয করলেন, হে আল্লাহ ! ( আযযাওয়া জাল্লাহ) “ অবশ্যই।"
এরশাদ করলেন, “তাহলে, আমার প্রিয় মাহবুব হযরত মুহাম্মদমুস্তাফা ( সাল্লাল্লাহু তা ' আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম ) - এর উপর বেশী পরিমাণে দুরূদ শরীফ পাঠ করো ।"
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০৫৮) ইমাম শাফেয়ীর দরুদ এর ঘটনা | (০৬০) আউলিয়ায়ে কেরামদের দরুদ শরীফ পাঠ |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |