হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা এর হুজরার মধ্যে রওযা মোবারক তৈরী করা হয়। হযরত আলী, হযরত আব্বাস, হযরত ফযল ইবনে আব্বাস (রাদিআল্লাহু আনহুম) এবং নবী করীম (সঃ)-এঁর আশ্রিত খাদেম হযরত সালেহ (রাদিআল্লাহু আনহু )-এই চারজন সাহাবী নবী করীম (সঃ)-কে রওযা মোবারকে নামান। হযরত আব্বাস (রাদিআল্লাহু আনহু) দেখতে পেলেন –কাফনের ভিতরে হুযুর(সঃ)-এঁর ঠোঁট মোবারক নড়ছে – তিনি জীবিত। তিনি কান লাগিয়ে শুনতে পেলেনঃ নবী করীম(সঃ) “রাব্বি হাবলি উম্মতী" বলে কাঁদছেন।
ইমাম বায়হাকীর সূত্রে ইমাম তকিউদ্দিন সুবকি রেওয়ায়াত করেনঃ
ان النبي صلى الله عليه وسلم بعد ما دفن في قبره رد روحه واستمرت الروح في جسده الى يوم الله القيامة ليرد على من سلم عليه (شفاء السقام في ريارة (خير لانام للعلامة تقي الدين سبكى رح
অর্থঃ-“রাসূল (সঃ)-কে রওযা মোবারকে দাফন করার পরপরই আল্লাহ তায়ালা তাঁর রূহ মোবারক ফেরত পাঠিয়ে দেন এবং রূহ মোবারক দেহ মোবারকের মধ্যে কেয়ামত পর্যন্ত অবস্থান করতে থাকবে – যাতে তিনি উম্মতের সালামের জবাব দিতে পারেন"
(ইমাম তকিউদ্দিন সুবুকী (৬২৭হিঃ) কৃত সিফাউস সিকাম ফী যিয়ারতে খাইরিল আনাম)
উপরে বর্ণিত ইমাম বায়হাকী রহমাতুল্লাহি আলাইহি )-এর রেওয়ায়াতখানা একথাই প্রমাণ করে যে, নবী করীম (সঃ)-এঁর রূহ মোবারক সোমবার দ্বিপ্রহের কিছু পূর্ব হতে মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত প্রায় ৪০ ঘণ্টা দেহ মোবারক থেকে বাহ্যিক দৃষ্টিতে পৃথক থাকার পর ঐ রাত্রেই পুনরায় ফেরত দান করা হয়। কাজেই নবী করীম (সঃ) এখন সশরীরে রওযা মোবারকে হায়াতুন্নবী হিসাবে জীবিত আছেন এবং কিয়ামত পর্যন্ত জীবিত থাকবেন।
দেওবন্দের হেড মোহাদ্দেস শাহ্ আনওয়ার কাশ্মিরী তাঁর রচিত ফয়জুল বারী শরহে বোখারী ১ম খন্ড ১ম পারায় উল্লেখ করেছেনঃ-
اتفق العلماء على حيات الانبياء عليهم السلام
অর্থঃ- “পূর্ব জামানার সমস্ত ওলামগণের ঐকমত্য হচ্ছেন নবী করীম সশরীরে জীবিত এবং অন্যান্য নবীগণও।"
রাসূলে কায়েনাত (সঃ) ইরশাদ করেছেন
“যে কোন মুসলমান যে কোন স্থান থেকে আমাকে সালাম জানায়, আল্লাহ তায়ালা আমার রূহানী তাওয়াজ্জুহ তার দিকে ফিরিয়ে দেন। অতঃপর আমি তার ছালামের জবাব দেই"
(আবুদাউদ ও মিশকাত)
বুঝা গেল, দুনিয়ার সব সালাম পাঠকারীর সালাম তিনি একসাথে শুনতে পারেন এবং একসাথে জবাবও দিতে পারেন।
জালালুদ্দীনসুয়ূতি আল-হাভী গ্রন্থে নবী করীম (সঃ) কর্তৃক রওযা মোবারক থেকে ৫টি দায়িত্ব পালনের কথা উল্লেখ করেছেন। তার মধ্যে দুটি হলোঃ- “উম্মাতের যাবতীয় আমল প্রত্যক্ষ করা এবং অলী-আল্লাহদের জানাযায় শরিক হওয়া।"
ওয়াহাবী নেতা ইবনে কাইয়েম রচিত “জাল্লাউল আফহাম" নামক গ্রন্থে একখানা হাদীস এরূপ বর্ণিত হয়েছে
“আনা আছমাউ ছালাতাকুম আলাইয়া বিলা ওয়াছিতাতিন"
অর্থাৎ, “আমি ফেরেশতাদের মাধ্যম ছাড়াই সরাসরি তোমাদের সালাম শুনতে পাই।"
(মূল নোছখা)
বুঝা গেল, করীম (সঃ) সদা জাগ্রত এবং প্রেমিকদের সালাম সরাসরি শুনেন। ফেরেশতাগণ তাদের ডিউটি হিসাবে পরে তা পৌঁছান। মোহাদ্দেসীনগণ এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন -
মহব্বতের সালাম তিনি নিজে শুনেন এবং মুখের সালাম ফেরেশতারা পৌঁছায়
(আবূ দাউদ; নাসায়ী ; জাআলহক,আনওয়ারে মাদিনা) (অধ্যক্ষ হাফিজ মুহাম্মাদ আব্দুল জলিল সাহেবের 'নূর নাবী')
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০৪৪) মুসা আলাইহিস সালাম এর জানাযা পড়ানো | (০৪৬) দরুদের ইসালে সওয়াব ও কবরের আজাব মাফ |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |