অবশেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর তরফ থেকে হিজরতের নির্দেশ পেয়ে সাহাবাদের গোপনে দেশত্যাগের পরামর্শ দেন; যাতে কুরায়েশরা টের না পায়। পরিশেষে যখন তারা টের পেল, তখন তারা রাগে ও ক্ষোভে ফেটে পড়লো। তারা হিজরত ঠেকানোর জন্য বিভিন্ন ঘাটিতে বসে ওৎঁ পেতে পাহারা দেওয়া শুরু করলো এবং তাদের হাতে যারা ধরা পড়তো, তারা তাদের ওপর কঠোর নির্যাতন চালাতো। এমনকি তারা স্বামীকে স্ত্রী থেকে এবং মাকে সন্তান থেকে বিচ্ছিন্ন করতো।
সবশেষে নবূওতের চতুর্দশ সনের ১লা মুহাররমে কুরায়েশ নেতারা বিভিন্ন আলোচনার পর, নজদবাসী বৃদ্ধ শয়তানের পরামর্শক্রমে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং এ কাজের জন্য প্রত্যেক গোত্র থেকে একজন করে প্রতিনিধি নির্বাচন করে। পবিত্র কুরআনে এ ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ আছে। আল্লাহর বাণী :
وَإِذْ يَمْكُرُ بِكَ الَّذِينَ كَفَرُوا لِيُثْبِتُوكَ أَوْ يَقْتُلُوكَ أَوْ يُخْرِجُوكَ ۚ وَيَمْكُرُونَ وَيَمْكُرُ اللَّهُ ۖ وَاللَّهُ خَيْرُ الْمَاكِرِينَ
অর্থ : “আর স্মরণ করুন, যখন কাফিররা আপনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছিল আপনাকে বন্দী করার জন্য, অথবা আপনাকে হত্যা করার জন্য, অথবা আপনাকে দেশান্তরিত করার জন্য, আর তারা তো তাদের ষড়যন্ত্র করছিল এবং আল্লাহ্ ও তাঁর কৌশল করছিলেন। বস্তুত আল্লাহ্ হলেন শ্রেষ্ঠ কৌশলী।”
— সূরা আনফাল, আয়াত : ৩০।
আল্লাহর নির্দেশে হযরত জিব্রাইল (আ.) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে কাফিরদের ষড়যন্ত্রের কথা জানিয়ে দেন এবং মদীনায় হিজরত করে চলে যাওয়ার জন্য বলেন।
কুরায়শরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহর প্রেরিত নবী হিসাবে স্বীকার না করলেও তাঁকে ‘আল-আমীন’ বা বিশ্বাসী বলে মনে করতো। তাই তারা তাদের মূল্যবান সম্পদ, অলঙ্কার, টাকা-পয়সা তাঁর কাছে আমানত বা গচ্ছিত রাখতো। হুজুর (স.) হযরত আলী (রা.)-কে তাঁর চাদর মুড়ি দিয়ে, তাঁর বিছানায় শুয়ে থাকতে বলেন এবং সকলের আমানতের মাল ফিরিয়ে দেয়ার পর মদীনায় হিজরত করে তাঁর সাথে মিলিত হওয়ার নির্দেশ দেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আলী (রা.)-কে সব নির্দেশ দিয়ে ‘বিস্মিল্লাহ’ বলে ঘর থেকে বের হন। তিনি তাঁর হাতে এক মুঠো বালু নিয়ে শত্রুদের দিকে ছুঁড়ে মারেন। এ সময় তিনি সূরা ইয়াসীনের এ আয়াত তেলাওত করছিলেন :
وَجَعَلْنَا مِن بَيْنِ أَيْدِيهِمْ سَدًّا وَمِنْ خَلْفِهِمْ سَدًّا فَأَغْشَيْنَاهُمْ فَهُمْ لَا يُبْصِرُونَ
অর্থ “আর আমি তাদের সামনে ও পেছনে আড়াল সৃষ্টি করলাম। এভাবে তাদের আমি ঢেকে ফেললাম, ফলে তারা কিছুই দেখতে পায়নি।”
— আল্-কুরআন, সূরা ইয়াসীন আয়াত : ৯।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্রুত হযরত আবু বকরের বাড়ীতে গিয়ে, তাকে সাথে নিয়ে বের হয়ে পড়েন এবং মক্কা হতে দক্ষিণ দিকে তিন মাইল দূরে সাওর পর্বতের গুহায় আত্মগোপন করেন। এখানে তাঁরা তিন দিন অবস্থান করেন।
তিন দিন অতিবাহিত হওয়ার পর রাসূল্লুাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আবু বকর (রা.)-কে সাথে নিয়ে মদীনা অভিমুখে যাত্রা করেন। তাদের রাহবর বা পথ-প্রদর্শক ছিল আবদুল্লাহ বিন উরায়কীত, যে অপরিচিত নতুন পথে তাঁদেরকে মদীনায় পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল।
‘মুহাম্মদ (স.) পালিয়েছে’- কুরায়শদের এ ঘোষণা বাণী বিদ্যুতের মত চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। তারা ঘোষণা দেয় : মুহাম্মদ (স.) ও আবু বকরকে জীবিত বা মৃত যে কোন অবস্থায় ধরে দিতে পারলে তাকে একশত উট পুরস্কার দেওয়া হবে।
লোহিত সাগরের উপকূল ধরে কাফেলা চলতে থাকে। যে পথে সব লোক মদীনা যায়, সে পথ তারা বর্জন করে। কিছুদূর যাওয়ার পর সূরাকা বিন মালিক তাঁদের ধরার কাছে কাছে যেতে চাইলে, আল্লাহর কুদরতে তার ঘোড়ার পা বালুর মধ্যে আটকে যায়। সুরাকা তার কাজের জন্য অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চাইলে রাসূল (স.) তাকে ক্ষমা করে দেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাফেলা যখন মদীনার নিকটবর্তী হয়, তখন একশত উট পুরস্কার পাওয়ার আশায় বারিদার নেতৃত্বে ৭০ জন বেদুইন ডাকাত তাঁদের আক্রমণ করার জন্য উদ্যত হয়। যারা কুরআন শুনে এবং রাসূল (স.)-এর নূরানী চেহারা দেখে মুগ্ধ হয়ে ইসলাম কবুল করে এবং পড়ে নেয় : ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ।” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের সাথে নিয়ে অপূর্ব মহিমায় মদীনায় প্রবেশ করেন।
রবিউল আওয়াল মাসের ৮ তারিখ। ৬২৪ খৃষ্টাব্দের ২৯ শে সেপ্টেম্বর, দুপুরের সময় রাসূলুল্লাহ (স.)-এর কাফেলা ‘কোবা’ নামক স্থানে পৌঁছে। সেখানে তিনি ১২ দিন অবস্থান করেন এবং সেখানে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। এটিই প্রথম মসজিদ।
কোবা থেকে রওয়ানা হয়ে রাসূলুল্লাহ (স.) যখন বনূ সালিম ইবন আওফ-এর মহল্লায় পৌঁছান, তখন তিনি ১০০ জন লোক নিয়ে সেখানে জুম্আর সালাত আদায় করেন। এটিই ইসলামের সর্বপ্রথম জুম‘আর নামায।
মদীনায় প্রবেশের পর এক নতুন সমস্যা দেখা দেয়। সেখানে নানা গোত্র, নানা দল। সবাই রাসূলুল্লাহ (স.)-কে তার ঘরে পেতে আগ্রহী। এ সময় আল্লাহর নির্দেশে স্থান নির্ধারণের ভারটি তিনি তাঁর উটের উপর ছেড়ে দেন। বলেন :
উট যেখানে গিয়ে স্বেচ্ছায় থেমে যাবে, আমি সেখানে অবস্থান করবো।
অবশেষে উটটি শহরের দক্ষিণ দিকে নাজ্জার গোত্রের মহল্লায় এসে বসে পড়ে। যার কাছে ছিল আবূ আইয়ুবের বাড়ী। নবী করীম (স.) ও আবু বকর (রা.) সেখানে অবস্থানের সিদ্ধান্ত নেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ আইয়ুব আনসারী (রা.)-এর গৃহে সাত মাস অবস্থান করেন। এ সময় আবু আইয়ুব (রা.) ও তাঁর স্ত্রী মন প্রাণখুলে তাদের মেহমানদারী ও খিদমত করেন।
মদীনায় আগমণের পর রাসূলুল্লাহ (স.)-এর সর্বপ্রথম চিন্তা হলো আল্লাহর ইবাদতের জন্য একটি মসজিদ নির্মাণ করা। তাঁর উট যেখানে বসে পড়েছিল, তিনি সেখানে মসজিদ নির্মাণের ইচ্ছা করেন। হযরত আবু বকর (রা.) স্থানটি খরিদ করে মসজিদ তৈরীর জন্য দান করে দেন। যথা সময়ে মসজিদে নববী নির্মাণের কাজ শেষ হয়ে যায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবু বকর (রা.) তাঁদের পরিবারদের মক্কা থেকে আনার ব্যবস্থা করেন। কুরায়েশ কাফিররা এ সময় বাধা দেয়নি।
রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন
এক মুসলমান অন্য মুসলমানের ভাই।
কাজেই তোমরা নিজের পছন্দমত ভাই বেছে নাও। ফলে, আনসার সাহাবীরা মুহাজিরদের থেকে পছন্দমত ভাই বেছে নেয়। তাদের ধন-সম্পত্তি ধর্ম-ভাইদের ভাগ করে দেয়। এমনকি যার দুটি স্ত্রী ছিল, একটিকে তার ভাইয়ের জন্য খুশী মনে পরিত্যাগ করে, এভাবে আল্লাহর রহমতে সাময়িক সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হিজরতের সময় থেকে হিজরী সনের শুরু। হিজরী ১৭ সনে হযরত আবু মূসা (রা.) হযরত উমরের নিকট এ মর্মে একটি পত্র লেখেন :
ইয়া খালীফাতুল মুসলেমীন! আপনার যে সমস্ত চিঠি-পত্র আমাদের কাছে আসে, তাতে কোন তারিখ না থাকায় বিশেষ অসুবিধা হয়।
খলীফা উমার (রা.) এ পত্র পাওয়ার পর বিশিষ্ট সাহাবীদের নিয়ে একটা পরামর্শ সভার আয়োজন করেন। কেউ কেউ বলেন : “নবূওত প্রাপ্তির দিন থেকে তারিখ আরম্ভ করা হোক।” আবার কেউ কেউ বলেনঃ “হিজরত থেকে আরম্ভ করা হোক।” যেহেতু হিজরত হতেই হক ও বাতিলের মধ্যে পার্থক্য সূচীত হয়েছে, তাই হযরত উমর (রা.) হিজরত থেকে তারিখ গননা আরম্ভ করা উচিত বলে মনে করেন। উল্লেখ্য যে, ‘আকাবার শেষ বায়‘আতের পর হতেই হিজরতের সংকল্প করা হয়, আর এরপর যে চাঁদ উদিত হয়, তা ছিল মুহারমের চাঁদ। আর যিল্হজ্জ মাসে এ মৌসুমের হজ্জ শেষ হয়ে আবার নতুন বছর শুরু হয়।
তাই সর্বসম্মতিক্রমে এরূপ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, ৮ই রবিউল আওয়াল থেকে পিছিয়ে ১লা মুহাররম থেকে সন-তারিখ গণনা শুরু করা হোক। এদিন থেকেই হিজরী সনের তারিখ সরকারীভাবে গৃহীত হয়। চন্দ্র বছরের হিসাবে হিজরী সন গণনা করা হয়। যেহেতু রাতে চাঁদ দেখা যায়, এ জন্য সূর্যাস্তের পর থেকে পরদিন সূর্যাস্ত পর্যন্ত- একদিন ধরা হয়।(যুরকানী, শরহে মাত্তাহেবে লাদুন্নিয়া)
মদীনায় আসার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববী নির্মাণ, মুহাজিরদের আবাসন ব্যবস্থা ও অন্যান্য সাংসারিক ও পারিবারিক কাজ শেষ করে দেশের শান্তি রক্ষার প্রতি মনোযোগ দেন, যা ছিল ইসলামী রাষ্ট্রের সূচনা স্বরূপ। তিনি দেখেন যে, মদীনা এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রধানত বিভিন্ন ধর্মের তিন শ্রেণীর লোক বাস করে, যথা- মুসলমান ইয়াহুদী এবং পৌত্তলিক। এদের কারো সাথে কারোর আদর্শের মিল ছিলনা, তার উপর ছিল দলগত হিংসা-বিদ্বেষ। পরিস্থিতি ও পরিবেশ অনুধাবন করে নবী করীম (স.)-এরূপ চিন্তা করেন যে, ধর্মমত যার যা-ই থাকুক না কেন, তিন সাম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি ও ঐক্য না থাকলে মদীনার কল্যাণ নেই। প্রত্যেক দেশের বৃহত্তর স্বার্থ ও মঙ্গল নির্ভর করে তার অধিবাসীদের সংহতির উপর। যে দেশে বিভিন্ন ধর্মের লোক বাস করে, সে দেশে পরমত সহিষ্ণুতার প্রয়োজন অধিক।
“নিজে বাঁচ এবং অপরকেও বাঁচতে দাও” এটাই হলো নাগরিক জীবনের মূলনীতি। মক্কায় অবস্থানকালে তিনি কুরায়েশদের কাছে এ মৌলিক অধিকারটুকু চেয়েছিলেন, কিন্তু পাননি। তাই মদীনায় এসে তিনি এর প্রয়োজনীয়তা বিশেষভাবে অনুভব করেন। পৌত্তলিক ও ইয়াহুদীদের সাথে বন্ধুভাবে বসবাস করার জন্য তিনি ইচ্ছা পোষণ করেন। সেমতে তিনি সকল সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের ডেকে একটি বৈঠক করেন এবং আন্তঃসাম্প্রদায়িক ঐক্য ও সম্প্রীতির আবশ্যকতা বুঝিয়ে দেন। শুধু তাই নয়, একটি সনদ বা আন্তর্জাতিক সন্ধিপত্র (International Magna Charta)ও তৈরী করেন, যাতে পরস্পরের দায়িত্ব ও কর্তব্য লিপিবদ্ধ করা হয়। যাতে সকলে সই করেন। নিম্নে এর প্রধান প্রধান শর্তগুলো উল্লেখ করা হলো :
বিস্মিল্লাহির রাহমানির রাহিম- রাসূল মুহাম্মদ বিশ্ববাসীদের এবং যারাই তাদের সাথে যোগ দেবে, সকলকে এ সনদ দিতেছেন :
১. মদীনার ইয়াহুদী, নাসারা, পৌত্তলিক সকলেই এক দেশবাসী।
২. সকলেরই নাগরিক অধিকার সমান।
৩. ইয়াহুদী, নাসারা, পৌত্তলিক এবং মুসলমান সকলেই নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। কেউ কারো ধর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।
৪. এই চুক্তির অন্তর্ভুক্ত কোন সম্প্রদায় শত্রু কর্তৃক আক্রান্ত হলে সকলে সম্মিলিতভাবে তা প্রতিহত করবে।
৫. কেউ-ই হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর বিনা অনুমতিতে কারো সাথে যুদ্ধ করবে না।
৬. নিজেদের মধ্যে কোন বিরোধ উপস্থিত হলে, আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের মীমাংসার উপর সকলকে নির্ভর করতে হবে।
৭. বাইরের কোন শত্রুর সাথে কোন সম্প্রদায় গোপন কোন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হবে না।
৮. মদীনা নগরীকে পবিত্র মনে করতে হবে এবং যাতে তা বাইরের কোনশত্রু দ্বারা আক্রান্ত না হয়, সেদিকে সকলে লক্ষ্য রাখবে।
৯. যদি কোন শত্রু কোন সময় মদীনা আক্রমণ করে, তাহলে সকলে মিলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে।
১০. যুদ্ধকালে প্রত্যেক সম্প্রদায় নিজেদের ব্যয়ভার নিজেরা বহন করবে।
১১. উৎপীড়িত বা মজলুমকে রক্ষা করতে হবে।
১২. মদীনায় রক্তপাত আজ থেকে হারাম বলে গণ্য হবে।
১৩. দিয়ত বা খুনের বিনিময় পূর্ববৎ বহাল থাকবে।
১৪. নিজেদের মধ্যে কেউ বিদ্রোহী হলে, অথবা শত্রুর সাথে কোন প্রকার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলে, তার সমুচীত শাস্তির বিধান করা হবে; যদি সে আপন পুত্রও হয়, তবু তাকে ক্ষমা করা যাবে না।
১৫. অমুসলিমদের মধ্যে কেউ কোন অপরাধ করলে, তা তার ব্যক্তিগত অন্যায় বলে বিবেচিত হবে।
১৬. কোন সম্প্রদায় মক্কার কুরায়শদের সাথে কোন প্রকার গোপন চুক্তি করতে পারবে না এবং কেউই তাদের কোন লোককে মদীনায় আশ্রয় দেবে না।
১৭. মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই সাধারণ তন্দ্রের প্রধান নির্বাহী নির্বাচিত হলেন। যে সকল বিষয়ের মীমাংসা সাধারণভাবে না হয়, সেগুলোর মীমাংসার দায়িত্ব তাঁর উপর ন্যস্ত থাকবে। তিনি আল্লাহর বিধান অনুযায়ী তা মীমাংসা করে দেবেন।
১৮. যারা এ চুক্তি অঙ্গ করবে, তাদের উপর আল্লাহর লা‘নৎ বা অভিসম্পাত। (ইবনে ইসহাক ও ইবনে হিশাম)
এই চুক্তিপত্রে সকল সম্প্রদায়ের লোকেরা সই করে। কিন্তু ইয়াহুদী, নাসারা, মুনাফিক ও পৌত্তলিকরা এই চুক্তি ভঙ্গ করে আল্লাহর লানৎপ্রাপ্ত হয়েছিল।