বেহেশত এবং দোজখ বর্তমান আছে। কিয়ামতের হিসাব শেষে একদলকেবেহেশতে এবং একদলকে দোজখে প্রবেশ করানো হবে। এদের পারিতোষিক এবং শাস্তি চিরস্থায়ী।
‘ফুছুছুল হেকাম’ রচয়িতা বলেছেন, সকলের শেষফল হবে রহমত। আল্লাহ্পাক যেহেতু এরশাদ করেছেন ‘এবং আমার রহমত সকল কিছুকে বেষ্টনকরে আছে’। তিনি তাই বলেন, কাফেরদের তিন হোকবা দোজখের আজাব হবে। তারপর আগুন তাদের জন্য শীতল ও শান্তিদায়ক হয়ে যাবে, যেমন হয়েছিলো নবী ইব্রাহিম আ. এর জন্য। ভীতিপ্রদর্শনের ক্ষেত্রে প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করা তাঁর মতে বৈধ। তিনি আরো বলেন, আধ্যাত্মিক পথের পথিকেরা কেউই কাফেরদের চিরস্থায়ী আজাবের কথা স্বীকার করেননি।
হজরত মোজাদ্দেদে আলফে সানি র. বলেন, শায়েখ এই বিষয়ে সত্য থেকে দূরবর্তী অবস্থান গ্রহণ করেছেন। তিনি একথা বুঝতে পারেননি যে, কাফের এবংমুমিনের একত্রে রহমত বেষ্টিত থাকা এই পৃথিবীর জন্য বিশিষ্ট। পরকালে কাফেরেরা রহমতের গন্ধও পাবে না। আল্লাহ্পাক এরশাদ করেছেন-
নিশ্চিত অবস্থা এই যে, আল্লাহ্তায়ালার রহমতের ব্যাপারে কাফেরগণ ব্যতীতআর কেউ নিরাশ হবে না’। সূরা ইউসুফ, ৮৭ আয়াত
আল্লাহ্পাক আরো এরশাদ করেন-
আমার রহমত সকল কিছুকে ঘিরে আছে। অতিসত্বর তা আমি ওই সকলব্যক্তির জন্য লিখছি, যারা পরহেজগারী করে এবং জাকাত প্রদান করে এবংআমার আয়াতসমূহের উপরে ইমান আনে।
— সূরা আ’রাফ, ১৫৬ আয়াত
শায়েখ প্রথম আয়াতের প্রতি দৃষ্টিকে নিবদ্ধ রেখেছেন। আয়াতের পরবর্তীঅংশের প্রতি দৃষ্টি দেননি। আল্লাহ্পাক আরো এরশাদ করেন-
নিশ্চয়ই আল্লাহ্পাকের রহমত নেককারগণের নিকটবর্তী।
— সূরা আ’রাফ, ৫৬ আয়াত
আরো এরশাদ করেছেন-
নিশ্চয় আল্লাহ্তায়ালাকে তাঁর রসুলগণের সঙ্গে প্রতিজ্ঞাভঙ্গকারী মনে করোনা।
— সূরা ইব্রাহিম ৪৭ আয়াত
-এই আয়াতটি কেবল প্রতিজ্ঞাভঙ্গের ইঙ্গিত নয়। এর মধ্যে প্রতিজ্ঞাভঙ্গ ও ভীতি প্রদর্শন উভয় কথাই আছে। অর্থাৎ রসুলগণেরসঙ্গে প্রতিজ্ঞা এবং কাফেরদের প্রতি ভীতি প্রদর্শন। এই আয়াত দ্বারা প্রতিজ্ঞা এবংভীতিপ্রদর্শন উভয় প্রকার অঙ্গীকার নিবারিত হয়েছে। সুতরাং এই আয়াতশায়েখের অনুকূল দলিল নয়। বরং প্রতিকূল প্রমাণ। প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করার অর্থ মিথ্যাবাদী প্রতিপন্ন হওয়া- পবিত্রাতিপবিত্র জাতের জন্য যা মোটেও শোভনীয়নয়। আল্লাহ্তায়ালা আগেই জানেন যে, তিনি চিরদিন কাফেরদেরকে আজাব দিবেন না। অথচ তার বিপরীত কথা বলে ভয় দেখিয়েছেন- এরকম কথা বিশ্বাসকরা জঘন্য এবং নিন্দনীয়।
আল্লাহ্পাক এরশাদ করেন-
তোমার প্রভুপালক সম্মান ও পরাক্রমশালী প্রভুপালক। তারা যা বলে তাথেকে তিনি পবিত্র।
— সূরা সাফ্ফাত, ১৮০ আয়াত
‘কাফেরদের চিরস্থায়ী আজাব হবে না’- এই ধারণা শায়েখের ভুল কাশফজাত। কাশফে এরকম অনেক ভুলই হয়ে থাকে। এরকম ভুল কাশফ দ্বারা অকাট্য বিশ্বাস অপসারণ করা যায় না।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(২০) শাফায়াত | (২২) ফেরেশতা |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |