নাজাত পাওয়ার নামাজ। আল্লাহ তাআ’লা কোরআন মাজীদে এরশাদ করেন-
قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ (1)الَّذِينَ هُمْ فِي صَلَاتِهِمْ خَاشِعُونَ
(১) ঐ সকল মু’মিনরা তাদের নামাজের দ্বারা নাজাত পেয়েছে (২) যারা তাদের নামাজে খুশু করেছে।
— ছুরা মু’মিনুন
খুশুর আবিধানিক অর্থ হলো স্থির থাকা। শরীয়তের পরিভাষায় এর অর্থ হলো ক্বলব বা মনে স্থিরতা থাকা অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর চিন্তা-ভাবনা করাকে মনের মধ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে হাজির না করা, অঙ্গ প্রতঙ্গ স্থির থাকা অর্থাৎ অনর্থক নড়াচড়া না করা। এমন নড়াচড়া যা রছূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম নামাজে নিষেধ করেছেন।
হযরত আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু আনহু বলেন, রছূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম নামাজের মধ্যে এক ব্যক্তিকে দাড়ি নিয়ে খেলা করতে দেখে বললেন- “লাউ খ-শিয়া কলবু হাজা লাখশিয়াত জা-অরেয়াহু”। “যদি এই ব্যক্তির মনে খুশু থাকতো তাহলে তার অঙ্গ প্রতঙ্গের মধ্যে স্থিরতা থাকতো”।
— তাফছীরে মাজহারী ৬ষ্ঠ খন্ড ৩৬৩ পৃঃ
عن ابن مسعود رضي الله عنه قال لا يزال الله مقبلا على العبد بوجهه ما لم يلتفت أو يحدث
রছূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম বলেন, নামাজের মধ্যে আল্লাহ তাআ’লা বান্দার দিকে নজর রাখেন যতক্ষন না নামাজী অন্য কোন চিন্তা-ভাবনা না করে। যখন সে এদিক সেদিক খেয়াল করে অন্য চিন্তা-ভাবনা করে তখন আল্লাহ তার দিক থেকে নজর ফিরিয়ে নেন।
— আহমাদ, নাছায়ী, আবু দাউদ, আত্-তারগীব ১ম খন্ড; পৃষ্ঠ- ২০৯, হাদীছ নং- ৭৯৩
ফেকাহবিদগণ দাড়ি নিয়ে খেলা করা নামাজের মাকরুহ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আল্লাহর রাছুলের বর্ণনা মতে, নামাজের মধ্যে মাকরুহ হল ৮৮ টি এ ৮৮টি মাকরুহ ত্যাগ করে নামাজ পড়লে তা হবে খুশু বা নাজাত প্রাপ্তির নামাজ। সুতারাং কোরআন মাজীদের এ আয়াত অনুযায়ী নামাজের মাধ্যমে নাজাত পেতে চাইলে নামাজের মধ্যের মোফছেদাত অর্থাৎ নামাজ নষ্টকারী বিষয়-গুলিকে ত্যাগ করে নামাজের মধ্যের ফরজ ওয়াজেব, ছুন্নাত, মোস্তাহাবসমূহ আমলের সঙ্গে সঙ্গে এ ৮৮টি মাকরুহ ত্যাগ করে নামাজ পড়তে হবে। তা না হলে এ নামাজ নাজাত প্রাপ্তির নামাজ বলে গণ্য হবেনা।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০১৯) নামাজের তৃতীয় অবস্থা | (০২১) নামাজের পঞ্চম অবস্থা |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |