আল্লাহ তাআ’লা কোরআন মাজীদে এরশাদ করেছেন-
قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ الَّذِيْنَ هُمْ فِي صَلَاتِهِمْ خَاشِعُوْنَ
মুমিনগণ সফলকাম হয়েছে, যারা তাদের নামাজে খুশু করেছে।
— ছুরা মু’মিনুন-১১
এ আয়াতে আল্লাহ তাআ’লা ‘নামাজে খুশুকারীগণ সফলকাম হয়েছে’ বলে উল্লেখ করেছেন।
রছূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম বিভিন্ন সময়ে ছাহাবাগণের সামনে খুশু সম্পর্কে যে সব কথা বর্ণনা করেছেন । নিচে তা উল্লেখ করা হলো-
রছূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম এক ব্যক্তিকে নামাজের মধ্যে দাড়িতে হাত বুলাতে দেখে বললেন- এ ব্যক্তির ক্বলব অর্থাৎ মনে খুশু থাকলে তার শরীরেও তা থাকতো। (মাজহারী-৬ষ্ঠ-৩৬২)
হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে- রছূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম বলেছেন-
نَعُوْذُ بِاللَّهِ مِنْ حُشُوْعِ النِّفَاقِ – قَالُوا يَا رَسُوْلَ اللهِ وَمَا حُشُوعُ النِّفَاقِ ؟ قَالَ حُشُوعُ الْبَدَنِ وَنِفَاقُ الْقَلْبِ -
আমি আল্লাহর নিকট নেফাকের খুশু থেকে আশ্রয় চাচ্ছি। ছাহাবাগণ বললেন- হে আল্লাহর রাছুল ! নেফাকের খুশু কি ? রছূলু ল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম বললেন - শরীরে নম্র ও বিনয় ভাব থাকে কিন্তু ক্বলব নেফাকী করে অর্থাৎ মন আল্লাহর প্রতি বিনয়ী হয়না।
— মাজহারী ৬ষ্ঠ ৩৬৩ পৃঃ
হযরত ওবাদা ইবনে ছামেত রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে, আমি রছূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লামকে বলতে শুনেছি যে-
আল্লাহ তাআ’লা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন। এরপর যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করলো, সময় মত নামাজ পড়লো, রুকু ও সিজদা পুরাপুরি আদায় করলো এবং নামাজের মধ্যে খুশু পুরা করলো ঐ ব্যক্তির উপর আল্লাহর ওয়াদা যে, তাকে মাফ করে দেবেন।
— ইমাম মালেক, আবু দাউদ, নাছায়ী ও ইবনে হাব্বান -আততারগীব ১ম - ২৫৭ পৃঃ
রছূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম বলেন -
مَنْ تَوَضَّأَ كَمَا أُمِرَ وَ صَلَّى كَمَا أُمِرَ غُفِرَ لَهُ مَا قَدَّمَ مِنْ عَمَلٍ
যে ব্যক্তি অজু করলো- যেভাবে হুকুম করা হয়েছে এবং নামাজও আদায় করলো যেভাবে হুকুম করা হয়েছে তার পূর্বের সকল গোনাহ মাফ করা হবে
— নাছায়ী, ইবনো মাজা, আততারগীব ১ম -২৫৩ পৃঃ
রছূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম বলেন-
مَنْ تَوَضَّأَ كَمَا أُمِرَ وَ صَلَّى كَمَا أُمِرَ فَإِنْ هُوَ قَامَ فَصَلَّى فَحَمِدَ اللهَ وَ أَثْنِيَ عَلَيْهِ وَبَحَدَهُ بِالَّذِي هُوَ لَهُ أَهْلٌ وَفَرَّغَ قَلْبَهُ لِلَّهِ تَعَالَى إِلَّا
انْصَرَفَ مِنْ خَطِيَتِهِ كَيَوْمٍ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ -
‘যে ব্যক্তি যেভাবে অজু করতে বলা হয়েছে সেভাবে অজু করলো এবং যেভাবে নামাজ পড়ার হুকুম করা হয়েছে সেভাবে নামাজ পড়লো। যখন সে দাঁড়ায় এবং নামাজ পড়ে এবং আল্লাহর প্রশংসা করে, তার প্রতি ছানা পাঠ করে এবং তার মর্যাদা বর্ণনা করে যে মর্যাদার তিনি অধিকারী এবং তার ক্বলব বা মনকে আল্লাহর জন্য খালি করে দেয় অর্থাৎ আল্লাহর চিন্তা ব্যতীত অন্য কোন চিন্তা না করে তখন আল্লাহ তার গোনাহগুলো মুছে দেন। যেমন সে ভুমিষ্ট হওয়ার দিনে গোনাহশূন্য ছিল।
— মুছলিম এ হাদীছ রেওয়ায়েত করেছেন। আততারগীব ১ম - ২৫৩ ও ১৫৪ পৃঃ
রছূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম বলেন-
مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ وُضُوْمَ ثُمَّ صَلَّى رَكَعَتَيْنِ لَا يَسْهُمْ فِيْهِمَا غُفِرَ له ما تقدم من ذنبه
যে ব্যক্তি অজু করলো সে তার অজুকে উত্তমভাবে আদায় করলো এরপর সে এমনভাবে দু’রাকাত নামাজ আদায় করলো যার কোন রাকাতে কোন ভুল ভ্রান্তি নেই তার পূর্বের সকল গোনাহ মাফ করে দেয়া হবে।
— আবু দাউদ, আততারগীব ১ম -২৫২ পৃঃ
রছূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম বলেন-
مَا مِنْ أَحَدٍ يَتَوَضَّأُ فَيُحْسِنُ الْوُضُوْءَ وَيُصَلِّي رَكَعَتَيْنِ أَي يُقْبِلُ بِقَلْبِهِ وَبِوَجْهِهِ عَلَيْهِمَا إِلَّا وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ
তোমাদের মধ্যে যে কেউ অজু করলো এমনকি তার অজুকে উত্তমরূপে আদায় করলো এরপর এমন দু’রাকাত নামাজ আদায় করলো যার দু’রাকাতেই তার ক্বলব ও চেহারাকে আল্লাহর দিকে ফিরিয়ে রাখলো তার জন্য জান্নাত ওয়াজেব করে দেবেন।
— আবু দাউদ,আততারগীব ১ম-২৫২
রছূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম বলেন-
مَنْ حَافَظَ عَلَى الصَّلَواةِ الْخَمْسِ رُكُوعِهِنَّ وَسُجُوْدِهِنَّ وَ مَوَاقِيْتِهِنَّ وَعَلِمَ أَنَّهُنَّ حَقٌّ مِنْ عِنْدِ اللَّهِ دَخَلَ الْجَنَّةَ -
যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের হেফাজাত করলো, তার রুকু ছেজদা সকল পুরাপুরি আদায় করলো, ওয়াক্তের প্রতি লক্ষ্য রাখলো এবং এও জানলো যে, এ সকল আল্লাহ তাআ’লার নিকট থেকে সত্যভাবে এসেছে, সে জান্নাতে যাবে ।
— আহমদ, আততারগীব ১ম - ২৪৭ পৃঃ
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০১২) নামাজের মধ্যে শিরক | (০১৪) নামাজী কোন নামাজে জাহান্নামে যাবে |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |