‘জিকির’ অর্থ স্মরণ। ‘জিকরুল্লাহ্’ অর্থ আলাহর জিকির বা আলাহর স্মরণ। ঈমান, ইসলাম, হেদায়েত ও দ্বীন-ধর্ম- শরীয়তের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে আলাহর জিকিরকে প্রতিষ্ঠিত করা। প্রথমে নিজেদের অন্তরে বাহিরে, পরে পরিবারে, সমাজে, রাষ্ট্রে- এভাবে সারা বিশ্বে।
কোরআনুল করীমও আলাহর জিকির। অর্থাৎ কোরআন আলাহর কথা মনে করিয়ে দেয়। আলাহ্ পাক বলেছেন- ‘ইন্না নাহনু নাজ্জালনাজ্ জিক্রা......’ (আমিই এই কোরআন অবতীর্ণ করেছি)- সুরা হিজর, আয়াত ৯। আবার কোথাও জ্ঞান অর্থেও জিকির শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন ‘ফাসআলু আহলাজ্ জিকরা’ (জ্ঞানীগণকে জিজ্ঞেস কোরো)- সুরা আম্বিয়া, আয়াত ৭।
এভাবে নামাজও আলাহর জিকির। কেননা নামাজ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য আল্লাহর জিকিরকে প্রতিষ্ঠা করা। যেমন বলা হয়েছে, ‘আক্বিমিস্ সলাতা লি জিকরি’ (নামাজ প্রতিষ্ঠা করো আমার স্মরণের জন্য)- সুরা ত্বহা, আয়াত ১৪। এভাবে শরীয়তের সকল হুকুম আহকামের প্রতি যদি আমরা দৃষ্টিপাত করি, তবে দেখবো সকল আমলের মূল বা ভিত্তি হচ্ছে আলাহর জিকির। আলাহর জিকির ব্যতীত কোনো আমলই আলাহ্ পাকের দরবারে গৃহীত হয় না। যেমন- হাদিস শরীফে বলা হয়েছে, একাগ্রচিত্ততা (হুজুরী ক্বলব) ছাড়া নামাজ হয় না। হুজুরী ক্বলব অর্থ যে ক্বলব নামাজে হাজির বা উপস্থিত থাকে। যে ক্বলবে আলাহর জিকির থাকে, সেই ক্বলবই তো হুজুরী ক্বলব । ক্বলবে আলাহর জিকির না থাকলে গাইরুল্লাহর জিকির থাকবে। আর গাইরুল্লাহর (আলাহ্ ছাড়া অন্য কিছুর) স্মরণমগ্ন থাকলে নামাজ হবে কীভাবে।
সুতরাং বুঝতে হবে কলবে আলাহ্ পাকের সার্বক্ষণিক জিকির থাকা ইবাদত বন্দেগী কবুল হওয়ার একটি শর্ত। বরং প্রধান শর্ত। তাই কোরআন মজীদের অনেক আয়াতে এ সম্পর্কে বিশেষভাবে হুকুম দেওয়া হয়েছে।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০০১) লেখকের বানী | (০০৩) তোমরা আমাকে স্মরণ করো আমি তোমাদিগকে স্মরণ করিব |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |