এ সময়ের একটি ঘটনা দেখে নবীজীর চাচা হযরত আব্বাস (রাঃ) পরবর্তীকালে ইসলাম গ্রহণ করেন। হযরত আব্বাস (রাঃ) একদিন কথা প্রসঙ্গে বললেন-'ইয়া রাসুলাল্লাহ ! আপনি যখন শিশুকালে দোলনায় ছিলেন-সেই সময়ের একটি আশ্চর্যজনক ঘটনা আপনার নবুয়তের প্রমাণস্বরূপ আমি প্রত্যক্ষ করেছিলাম এবং এই ঘটনাই পরবর্তীকালে আমাকে আপনার ধর্মে দীক্ষিত হতে অনুপ্রাণিত করেছে বেশি। ঘটনাটি ছিল এই-'আপনি দোলনায় শুয়ে শুয়ে আকাশের চাঁদের সাথে খেলা করছিলেন। আপনি আঙ্গুলের ইশরায় চাঁদকে যে দিকে হেলে যেতে বলতেন, চাঁদ সেদিকেই হেলে যেতো। এই ঘটনা আমাকে আকৃষ্ট করেছে'।
একথা শুনে একটু মুচকি হাসি হেসে হুযূর (দঃ) বললেন-'চাচাজান, শুধু তাই নয়। আমি সে সময় চাঁদের সাথে কথাও বলতাম এবং চাঁদও আমার সাথে কথা বলতো। চাঁদ ছিল আমার খেলার নূরের পুতুল' (হযরত আব্বাস (রাঃ) এর রেওয়ায়াত সূত্রে-মাওয়াহেবে লাদুন্নিয়া)।
খাছায়েছে কুবরা ও তারিখে খামিছ গ্রন্থে উল্লেখ আছে যে, নবী করিম (দঃ) ভূমিষ্ঠ হয়েই কালেমা শাহাদাত অর্থাৎ তৌহিদ ও রিসালাতের সাক্ষ্য দিয়েছিলেন-
أشهد أن لا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَإِنِّي رَسُولُ الله
আমি চাক্ষুস সাক্ষ্য দিচ্ছি-আল্লাহ ছাড়া মাবুদ নেই এবং নিশ্চয়ই আমি আল্লাহর রাসুল'।
এটা ছিল হুযুরের দেখা সাক্ষ্য। তাই তিনি চাক্ষুস সাক্ষী। প্রিয় নবী (দঃ) জন্মসূত্রেই নবী। ভূমিষ্ঠ হয়ে তৌহিদ ও আপন রিসালাতের সাক্ষ্যই প্রমাণ করে যে, নিজের নবুয়ত সম্পর্কে তিনি শিশুকালেই অবহিত ছিলেন। জনৈক অধ্যাপক তার সিরাতুন্নবী সংকলনে লিখেছেন-'চল্লিশ বছরের পূর্বে তিনি জানতেন না যে, তিনি নবী হবেন। তাবে তাঁর আচার আচরণ ছিল নবীসুলভ'।
এটা তার বেদ্বীনী উক্তি এবং প্রকৃত ঘটনার সম্পূর্ণ বিপরীত। কেননা, নবী (দঃ) না জেনে ও না বুঝে নিজের নবুয়তের সাক্ষ্য দেবেন-এটা কোনো বিবেকবান লোক বলতে পারে না।
বুঝা গেলো-তিনি শিশুকাল থেকেই চাঁদের খবরও রাখতেন-হাতের খেলনাকে যেদিকে ঘুরায়-সেদিকেই খেলনা ঘুরে। আরো প্রমাণিত হলো-তিনি তাওহীদ ও রিসালাতের শিক্ষা নিয়েই আগমন করেছেন। তাওহীদ ও রিসালাত সম্বলিত কালেমা পরবর্তীতে উম্মতের জন্য নাযিল হয়েছিল। কোরআনের 'তালিমপ্রাপ্ত' হয়েই তাঁর আগমন হয়েছিল। কোরআনের 'তানযীল' বা নুযুল হয়েছে পরবর্তীকালে।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০১৬) আবু লাহাবের খুশী ও তার শাস্তির বিরতি | (০১৮) বিবি হালিমার কোলে |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |