নামাজ, জানাযার নামাজ, তেলাওয়াতের ছেজদাহ প্রভৃতি কেবলার দিকে মুখ করে না পড়লে জায়েজ হবে না।
মক্কাবাসীদের জন্য কেবলা হলো কাবাঘর।
মক্কার বাইরের সকল লোকের জন্যে কাবার দিকই কেবলা।
মক্কার পূর্বদিক অর্থাৎ কেবলমাত্র আমাদের দেশের জন্য শীতকালে ও গরমকালে যেখানে সূর্য ডোবে উক্ত দু জায়গার মাঝখানের জায়গা টুকুর সবই কেবলা। কাবার পশ্চিম দিকের লোকের জন্য সমস্ত পূর্ব দিকই কেবলা। উত্তর দিকের লোকের জন্য সমস্ত দক্ষিণ দিকই কেবলা। দক্ষিণ দিকের লোকের জন্য সমস্ত উত্তর দিকই কেবলা।
২০
অন্ধকার রাত্রিতে কেবলার দিক ঠিক করতে না পারলে নিকটে স্থানীয় লোক থাকা অবস্থায় তাদের কাছে জিজ্ঞাসা না করে নিজ ইচ্ছায় কেবলা ঠিক করে নামাজ পড়বেন না। পড়লে নামাজ হবে না।
নিকটে স্থানীয় লোক না থাকলে নিজে চিন্তা ভাবনা করে কেবলার দিক ঠিক করুন। যেদিক কেবলা বলে দৃঢ় বিশ্বাস হয় সেদিক ফিরে নামাজ পড়ুন।
এক-দু’রাকাত পড়ার পর কেবলা অন্যদিক বলে দৃঢ় বিশ্বাস হলে নামাজের মধ্যেই মুখ ঘুরিয়ে সেদিক ফিরে নামাজ পড়ুন। নামাজ দোহরাবেন না।
২১
বিনা চিন্তা ভাবনায় খেয়াল খুশী মত কেবলা মনে করে নামাজ পড়বেন না। পড়লে নামাজ হবে না।
নৌকা, ষ্টিমার বা লঞ্চে কেবলার দিক ফিরে নামাজ পড়ুন। যদি নামাজের মধ্যে কেবলা ঘুরে যায় তবে মুখ ঘুরিয়ে কেবলামুখী হয়ে নামাজ পড়ুন। ঘুরে না পড়লে নামাজ হবে না।
যদি মুখ ঘুরালে নদীতে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তবে যেদিকে মুখ করে আছেন সেদিকে মুখ রেখেই নামাজ পড়ুন।
যদি বড় জামাত হয় এবং ঘুরতে গেলে ইমামকে মোকতাদীর পিছনে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে আগের অবস্থায় থেকে নামাজ পড়ুন।
বাস, ট্রেন বা প্লেনে গন্তব্য স্থানে পৌছিতে যদি নামাজের ওয়াক্ত চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে অথবা গন্তব্য স্থানে পৌছেই অন্য বাস, ট্রেন বা প্লেন ধরতে হয় এবং নামাজ আদায় করার সময় না পাওয়া যায় এমতাবস্থায় যদি উক্ত বাস, ট্রেন বা প্লেনে কেবলামুখী হয়ে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করা সম্ভব হয় তবে কেবলা মুখী হয়ে নামাজ পড়ুন। অন্যথায় বাস, ট্রেন বা প্লেন যেদিকে যাচ্ছে সেদিক ফিরেই নামাজ পড়ুন। যদি সিটে বসে রুকু ছেজদা করতে গেলে ধাক্কা বা আঘাতের আশংকা থাকে তবে সিটে বসে ইশারায় রুকু ছেজদা করে নামাজ পড়ুন। রুকুর তুলনায় ছেজদায় মাথা বেশী ঝুকান।
উট, গাধা বা ঘোড়ায় চড়া অবস্থায় ওজর বশতঃ ফরজ নামাজ পড়ার ইচ্ছা করলে সওয়ারী যে দিকে যাচ্ছে সেদিক ফিরেই নামাজ পড়ুন। বিনা ওজরে সওয়ারীর পিঠে নফল নামাজ পড়ার ইচ্ছা করলে সওয়ারী যেদিকে যাচ্ছে সেদিক ফিরেই পড়ুন।
কাবার দিক ফিরলে হিংস্র জন্তু বা ডাকাতে আক্রমণ করতে পারে এ ভয় থাকলে যে কোন দিকে মুখ করে নামাজ পড়ুন।
নিজের কিংবা আমানাতের আঠাশ দশমিক পয়সা মূল্যমানের মাল যদি চোরে নেওয়ার সম্ভাবনা থাকে তবে কেবলার দিকে মাল সামনে রেখে নামাজ পড়ুন। যদি জায়গা না থাকে তবে যে দিকে রাখার সুযোগ আছে সে দিকে রেখে সেদিক ফিরেই নামাজ পড়ুন। কারণ মালের চিন্তায় নামাজের একাগ্রতা নষ্ট হলে নামাজ হবে না।
রোগী কেবলা মুখী হতে অসমর্থ হলে অথবা কেউ তাকে কেবলামুখী ফিরিয়ে দিলে রোগীর কষ্ট হলে যেদিকে ফিরে আছে সেদিক ফিরে নামাজ পড়তে পারে।
দাড়িয়ে বা বসে নামাজ পড়লে যদি হিংস্র জন্তুর নিশ্চিত আক্রমণের আশংকা থাকে তবে শুয়ে ইশারায় নামাজ পড়ুন।