যে ই'তিকাফ ফাসিদ হয়ে যায় তা ওয়াজিব ই'তিকাফ হলে সক্ষম হওয়ার পর এর কাযা করতে হবে। ই'তিকাফ কাযা করার সঙ্গে সঙ্গে রোযাও কাযা করতে হবে। যদি কোন নির্দিষ্ট মাসের ই'তিকাফের মানত করা হয় তবে যে কয়দিনের ই'তিকাফ ছুটে গেছে সে কয়দিনের ই'তিকাফের কাযা করতে হবে। প্রথম থেকে নতুন করে পুনরায কাযা করতে হবে না। যদি কেউ নির্দিষ্টভাবে কোন মাসের ই'তিকাফের মানত করে অতঃপর কোন একদিনের ই'তিকাফ ভেঙ্গে ফেলে, তবে নূতন করে পুন একমাসের ই'তিকাফ কাযা করতে হবে। উল্লিখিত উভয় অবস্থাতে চাই বিনা ওযরে নিজের কাজের মাধ্যমে ই'তিকাফ ভঙ্গ হোক যেমন ইচ্ছাকৃতভাবে মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়া হোক, অসুস্থ হয়ে মসজিদ থেকে বের হতে বাধ্য হওয়া অথবা ব্যক্তির কোন ক্রিয়া ব্যতীত অন্য কোন কারণে ভঙ্গ হোক যেমন মহিলাদের ঋতুস্রাব হওয়া উক্ত হুকুম প্রযোজ্য হবে।
কেউ যদি নাউযুবিল্লাহ মুরতাদ হয়ে যায় এবং এরপর তাওবা করে ইসলাম গ্রহণ করে তার জন্য পূর্ব বাতিলকৃত ই'তিকাফের কাযা করতে হবে না।
কোন ব্যক্তি মানতের ই'তিকাফ পালনকালে পাগল হওয়ার কারণে যদি তার ই'তিকাফ ভঙ্গ হয় এবং তা দীর্ঘকাল স্থায়ী থাকে তাহলে যখনই সুস্থ হবে তখনই তাকে রোযা সহ ই'তিকাফের কাযা করতে হবে।
নফল ই'তিকাফ যদি কেউ একদিন পূর্ণ হওয়ার আগেই ভেঙ্গে দেয় তবে তার উপর কাযা ওয়াজিব হবে না।
মানতের ই'তিকাফ যদি ছুটে যায়, তবে হয়তো তা নির্দিষ্ট মাসের মানত হবে, অথবা অনির্দিষ্ট মাসের। নির্দিষ্ট মাসের কিছু অংশের ই'তিকাফ যদি ছুটে যায় তবে সেই অংশের ই'তিকাফ পূর্ণ করলেই চলবে। নতুন করে সবগুলো পালন করার প্রয়োজন নেই। কিন্তু নির্দিষ্ট
মাসের সবগুলোই যদি নির্ধারিত সময় থেকে ছুটে যায় তবে সবগুলো ধারাবাহিকভাবে পালন করা জরুরী। উক্ত ব্যক্তি যদি কাযা না করে এবং জীবন থেকে নিরাশ হয়ে যায়, তবে উত্তরাধিকারীদের উদ্দেশ্যে তার এই অসিয়্যাত করা ওয়াজিব যে, তারা যেন প্রতিটি দিনের পরিবর্তে একজন মিস্কীনকে দু'বেলা খাবার দান করে।
উল্লেখ্য এই ফিদয়া রোযার কারণে দিতে হচ্ছে। যেমন, রামাযানের রোযার পরিবর্তে দিতে হয়। আর যদি উক্ত ব্যক্তি নির্দিষ্ট মাসের এক অংশের কাযা করে এবং অপর অংশের না করে তবু উল্লিখিত হুকুম। তবে শর্ত হলো মানতের সময় সে ব্যক্তি সুস্থ হতে হবে। আর যদি মানতের সময় সে ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে থাকে এবং অসুস্থ অবস্থায়-ই নির্ধারিত সময় চলে যায় এবং তার মৃত্যু হয়ে যায়, তবে তার ওপর কিছুই ওয়াজিব নয়। কিন্তু যদি নির্দিষ্ট কোন মাসের মধ্যে নয়, বরং অনির্দিষ্টভাবে করে থাকে, তাহলে পুরো জীবন-ই তার সময়। যে কোন সময়ই-ই সে পালন করুক, তা কাযা হবে না, বরং আদায় করা হয়েছে বলা হবে (বাদায়েউস সানায়ে)।
রামাযানের শেষ দশদিনের ই'তিকাফ সুন্নাতে মুয়াক্কাদা আলাল কিফায়া। এ ই'তিকাফের জন্য রোযা রাখা জরুরী। এই ই'তিকাফ শুরু করার পর ভঙ্গ করে দেওয়া হলে অথবা ভঙ্গ হয়ে গেলে, যে কয়দিনের ছুটে গেছে রোযাসহ সে কয়দিনের কাযা জরুরী। কিন্তু একদিনের ছুটলেও রামাযানের পর সতর্কতামূলক পুরো দশদিনের কাযা করে নেওয়া উত্তম (শামী, ২য় খণ্ড)।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০৮৪) যে সব কারণে ই'তিকাফকারী মসজিদ থেকে বের হতে পারেন | (০৮৬) লাইলাতুল কাদরের ফযীলত ও তাৎপর্য |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |