যদি কোন ব্যক্তি ইহরাম বাঁধার সময় বেহুশ হয়ে পড়ে তবে তার সঙ্গীগণ নিজেদের ইহরাম বাঁধার আগে অথবা পরে বেহুশ ব্যক্তির পক্ষ হতেও ইহরামের নিয়্যত করে তালবিয়া পাঠ করবে। ইমাম আযম আবূ হানীফা (র.)-এর মতে এতে বেহুশ ব্যক্তির ইহরাম সহীহ্ হয়ে যাবে। এমতাবস্থায বেহুশ ব্যক্তির পরিধানের স্বাভাবিক পোষাক খুলে তাকে ইহরামের কাপড় পরানোর প্রয়োজন নাই। বেহুশ ব্যক্তি সুস্থ হওয়ার পর ইহরাম নির্দিষ্ট করে হজ্জে বা উমরার অবশিষ্ট কাজ সম্পন্ন করবে এবং ইহরামের কালীন নিষিদ্ধ কার্যসমূহ হতে বিরত থাকবে। আর যদি হুশ ফিরে না আসে তবে যে ব্যক্তি তার পক্ষ হতে ইহরামের নিয়্যত করেছিল সে অথবা অন্য কোন ব্যক্তি যদি তার পক্ষ হতে নিয়্যত করে উকূফে আরফা এবং তাওয়াফ ইত্যাদি আদায় করে তাহলে ঐ বেহুশ ব্যক্তির হজ্জ বা উমরা আদায় হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে ঐ বেহুশ ব্যক্তিকে সাথে নিয়ে যাওয়ার অপরিহার্য নয়। অবশ্য সঙ্গে নিয়ে যাওয়া উত্তম। যে ব্যক্তি এমন সংজ্ঞাহীনের পক্ষ হতে তাওয়াফ ও সায়ী করবে তাকে নিজের তাওয়াফ ও সায়ী পৃথকভাবে আদায় করতে হবে। উভয়ের পক্ষ হতে একই তাওয়াফ ও সায়ী যথেষ্ট হবে না। অবশ্য বেহুশ ব্যক্তিকে সাথে নিয়ে এক তাওয়াফ ও এক সায়ী করলে তা উভয়ের পক্ষ হতে যথেষ্ট হবে। এ ক্ষেত্রে বেহুশ ব্যক্তির জন্য আলাদাভাবে তাওয়াফের নিয়্যত করতে হবে (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।
ইহরামের অবস্থায় যে সব কাজ নিষিদ্ধ এমন কোন কাজ যদি বেহুশ ব্যক্তির দ্বারা অনিচ্ছাকৃতভাবে সংঘটিত হয়ে যায় তবে দম বা সাদাকা ঐ বেহুশ ব্যক্তির উপরই ওয়াজিব হবে। যে ব্যক্তি তার পক্ষ হতে ইহরামের নিয়্যত করেছে তার উপর ওয়াজিব হবে না।
যদি কোন ব্যক্তি নিজের ইহরাম বাঁধার পাশাপাশি কোন বেহুশ ব্যক্তির পক্ষ হতেও ইহরাম বাঁধে এবং উক্ত ব্যক্তি দ্বারা যদি ইহরামের নিষিদ্ধ কাজ সংঘটিত হয়ে যায় তবে তার উপর একটি দম ওয়াজিব হবে। একাধিক দম ওয়াজিব হবে না। ইহরাম বাঁধার পরে কেউ যদি বেহুশ হয়ে পড়ে এমতাবস্থায় কেউ যদি তাকে আরাফাতে নিয়ে গিয়ে যথাসময়ে উকূফ করায় এবং তাওয়াফে-যিয়ারত করায় তবে তার হজ্জ আদায় হয়ে যাবে। সংজ্ঞাহীন ব্যক্তিকে যখন কেউ তাওয়াফ করাবে তখন ঐ ব্যক্তির পক্ষ হতে তাওয়াফের নিয়্যত করা শর্ত। যদি কেউ এরূপ কোন ব্যক্তিকে কাঁধে উঠিয়ে তাওয়াফ করায় এবং নিজের পক্ষ হতেও তাওয়াফের নিয়্যত করে তবে উভয়ের জন্য এক তাওয়াফই যথেষ্ট হবে।
যদি সংজ্ঞাহীন ব্যক্তিকে বহনকারী ব্যক্তি নিজে হজ্জের তাওয়ফ করে এবং সংজ্ঞাহীনকে উমরার তাওয়াফ করায় তবে তাও জায়িয হবে। নিয়্যত বিভিন্ন হওয়াতে কোন অসুবিধা হবে না। সংজ্ঞাহীন ব্যক্তি যদি তার সঙ্গীদের বলে রাখে যে আমি যদি বেহুশ হয়ে পড়ি বা ঘুমিয়ে যাই তবে আমার পক্ষ থেকে উমক ব্যক্তি ইহরাম বাঁধবে এমতাবস্থায় উক্ত ব্যক্তি যদি তার পক্ষ হতে ইহরাম বাঁধে তাহলে অসুস্থ ব্যক্তির ইহরাম সহীহ্ হবে। নিদ্রা হতে জাগ্রত হওয়ার পর সে নিজে হজ্জের অবশিষ্ট কার্যাবলী সম্পাদন করবে এবং ইহরামের অবস্থায় যে যে কাজ নিষিদ্ধ তা হতে বিরত থাকবে। আর যদি অসুস্থ ব্যক্তির অনুমতি ছাড়াই অপর কোন ব্যক্তি তার পক্ষ হতে ইহরাম বাঁধে তবে অসুস্থ ব্যক্তির ইহরাম সহীহ হবে না (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(২১৩) ইহরামের হুকুম | (২১৫) অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও পাগলের ইহরাম |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |