হাদীসে মক্কা মুকাররমার বিশেষ ফযীলতের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। এর বিশেষ বিশেষ স্থানে বিশেষ ধরণের বরকতে রয়েছে বলে আলিমগণ অভিমত ব্যক্ত করেছেন। কাজেই হজ্জের এ মুবারক সফরে আমলের মধ্যে কোনরূপ বিঘ্ন সৃষ্টি না হলে সুযোগ মত ঐ জায়গাসমূহ যিয়ারত করা খুবই ভাল।
১. হযরত খাদীজা (রা.)-এর গৃহ। হিজরতের পূর্বে রাসূলুল্লাহ্ (সা.) এখানেই বসবাস করতেন এবং হযরত ফাতিমা (রা.) ও এখানেই জন্মগ্রহন করেছেন। কোন কোন আলিমের মতে এ গৃহটি মসজিদুল হারামের পরে মক্কা মুকাররমার সর্বোত্তম স্থান।
২. রাসূলুল্লাহ্ (সা.)-এর জন্মস্থান যা শি'আবে আলীতে অবস্থিত।
৩. হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রা.) -এর গৃহ এখানে দু'টি পাথর ছিল। একটির নাম মুতাকাল্লিম (কথক)। এ পাথরটি রাসূলুল্লাহ্ (সা.)-কে সালাম করেছিল। আর অপটির নাম হচ্ছে মুত্তাকা (হেলানাইল) এ পাথরটির উপর নবী (সা.) হেলান দিয়েছিলেন।
৪. হযরত আলী (রা.) এর জন্মস্থান যা শি'আবে বনী হাশিমে অবস্থিত।
৫. দারে আরকাম। এই ঘরেই হযরত উমর (রা.) ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। এখানে একটি মসজিদও নির্মাণ করা হয়েছিল। বর্তমানে এ স্থানটিকে সাফা ও মারাওয়ার অন্তর্ভুক্ত।
৬. জান্নাতুল মুআ'ল্লার যিয়ারত। এই স্থানটি হচ্ছে মক্কা মুকাররমার কবর স্থান। এই কবর স্থানটি জান্নাতুল বাকীর কবরস্থান ব্যতীত সকল কবর স্থান হতে উত্তম। এর যিয়ারত করা মুস্তাহাব। এখানে সাহাবা, তাবিঈন এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের, কবর রয়েছে। যিয়ারতে সময় সুন্নাতের খেলাপ কোন কাজ করবে না। কবরস্থানে পৌছে এই দু'আ পাঠ করবে:
তারপর সূরা ফাতিহা, সূরা বাকারার প্রথম শেষ অংশ, সূরা ইয়াসীন, সূরা কাওসার ও সূরা ইহ্লাস ১২ অথবা ১১ অথবা ৭ অথবা ৩ বার পাঠ করে এইভাবে সাওয়াব পৌছাবে যে, হে আল্লাহ্ আমি যা কিছু পাঠ করেছি এর সাওয়াব এ কবর স্থানে যারা শায়িত আছেন তাঁদের রুহ্ মুবারকে পৌছিয়ে দিন।
৭. জাবালে সাওর। ইহা মক্কা মুকাররমা হতে তিন মাইল দূরে অবস্থিত। হিজরতের সময় এই পাহাড়েই নবী করীম (সা.)-এর হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রা.) তিন রাত অবস্থান করেছিলেন। এর চূড়ায় গারে সাওর অবস্থিত। এ পর্বতের উচ্চতা প্রায় দেড় মাইল।
৮. গারে-হেরা, এ পর্বতটি মক্কা মুকাররমা হতে নিনায় যাওয়ার পথে বাম দিকে অবস্থিত। উক্ত গুহায় নবী করীম (সা.) নবুওয়াত লাভের পূর্বে ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল থাকতেন। এখানেই সর্বপ্রথম ওহী নাযিল হয়েছিল।
৯. জাবালে আবী কুবাইস। এই পাহাড়টি বায়তুল্লাহ্ শরীফের সম্মুখে অবস্থিত। কারো কারে। মতে চন্দ্র দ্বি-খণ্ডিত হওয়ার ঘটনা এখানেই সংঘটিত হয়েছিল। মুজাহিদ (র.) বলেন, আল্লাহ্ তা'আলা সাত্তর পাহাড়ের পূর্বে পৃথিবীর বুকে উক্ত পাহাড়টি সৃষ্টি করেছেন। হযরত নূহ্ (আ.)-এর মহা প্লাবনের পর হতে এখানেই হজরে আসওয়াদ সংরক্ষিত ছিল (মুকাদ্দামায়ে হিদায়া)।