সম্পূর্ণ উমরা অথবা উমরার অধিকাংশ তাওয়াফ হজ্জের মাস সমূহে সম্পন্ন করে বাড়ী ফেরার পূর্বে ঐ বছরই পুনরায় হজ্জের ইহরাম বেঁধে হজ্জ পালন করাকে শরীয়াতের পরিভাষা 'হজ্জে তামাত্তু' বলা হয়।
হজ্জে তামাত্তু আদায় করার নিয়ম হল, প্রথমে উমরার ইহরাম বেঁধে হজ্জের মাস সমূহে উমরা পালন করবে। অর্থাৎ উমরার ইহরামের পর রমল সহকারে উমরার তাওয়াফ করবে ও সায়ী করবে। এরপর মাথা মুণ্ডাবে অথবা মাথার চুল ছোট করে নিবে। কুরবানীর পশু সঙ্গে না থাকলে মাথা কামানো অথবা চুল ছাটার পর হালাল হয়ে যাবে। এর পর হালাল অবস্থায়ই মক্কায় অবস্থান করবে। তারপর ৮ই যিলহজ্জ হজ্জের ইহরাম বাঁধবে। অবশ্য এর আগে ইহরাম বাঁধা উত্তম (শামী, ২য় খণ্ড ও আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।
হজ্জের ইহরাম বাঁধার পর ৮ তারিখেই মিনা গমন করবে এবং সেখানে যুহর, আসর, মাগরিব, এশা ও ফজরের নামায আদায় করবে। রাত্রে সেখানেই অবস্থান করবে। ৯ই যিলহজ্জ সূর্যোদয়ের কিছুক্ষণ পর আরাফায় গমন করবে। সূর্য মাথার উপর থেকে সামান্য হেলে যাওয়ার পর হতে সূর্যান্ত পর্যন্ত উকূফে আরাফা করবে।
১০ই যিলহজ্জের রাত মুযদালিফায় অতিবাহিত করবে এবং ফজরের নামায আউয়াল ওয়াক্তে আদায় করে দু'আ করতে থাকবে। সূর্যোদয় হতে দুই রাক'আত পরিমাণ সময় বাকী থাকতে মুযদালিফা হতে মিনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করবে। রওয়ানার পূর্বে এখান থেকে ৭০টি কংকর সাথে নিয়ে নিবে। যাওয়ার সময় 'বতনে মুহাস্সার' দ্রুত অতিক্রম করবে। মিনায় এসে জামরায়ে আকারায় রমী করবে। এরপর কুরবানী করবে। তারপর ক্ষৌরকার্য সম্পন্ন করে তাওয়াফে যিয়ারত আদায় করবে। এ তাওয়াফের প্রথম তিন চক্করে রমল করবে। কিন্তু ইযতিবা করবে না। তাওয়াফ শেষে এরপর সায়ী করবে অথবা ১৩ই যিলহজ্জ পর্যন্ত মিনায় অবস্থান করবে এবং প্রত্যহ সূর্য হেলে যাওয়ার পর জামরাত্রয়ে রমী করবে। মিনা হতে মক্কা আসার পথে সম্ভব হলে 'বতনে মুহাস্সাব' নামক স্থানে যুহর, আসর, মাগরিব ও ইশার নামায আদায় করবে এবং এখানে কিছু সময় বিশ্রাম করে মক্কা অভিমুখে চলতে থাকবে। যদি এই পরিমাণ সময় অবস্থান করা সম্ভব না হয় তবে কিছুক্ষণ হলেও এখানে অবস্থান করবে। তারপর মক্কা মুকাররমা হতে রওয়ানা হওয়ার সময় বিদায়ী তাওয়াফ আদায় করবে। বিস্তারিত মাস'আলা হজ্জে ইফরাদের বিবরণে দেখে নিতে হবে।
যদি তামাত্তু আদায়কারীর সাথে দমে তামাকু থাকে তবে উমরার পর মাথা মুণ্ডাবে না। বরং ইব্রামের অবস্থায় থেকে যাবে। এবং ইহরামের নিষিদ্ধ কাজ সমূহ থেকে বেঁচে থাকবে। এরপর ৮ই যিলহজ্জ পুনরায় হজ্জের ইহরাম বাঁধবে (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(১৯২) এক নযরে হজ্জে ইফরাদ | (১৯৪) হজ্জে তামাত্তুর শর্তসমূহ |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |