এ সময় হেরা পর্বতের গুহায় সর্ব প্রথম ওহী নিয়ে নাযিল হন হযরত জিব্রাইল (আ.), এসে বলেনঃ “পড়ুন”। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ “আমি পড়তে জানিনা।” জিব্রাইল (আ.) তাঁকে বুকের সাথে মিলিয়ে ছেড়ে দিয়ে আবার বলেনঃ পড়ুন। তিনি একই জবাব দেন। তিনবার আলিঙ্গন করার পর তাঁর শরহে সদর বা বক্ষ প্রশস্ত হয়। এরপর তিনি পড়া শুরু করেন। সূরা ইকরার প্রথম পাঁচ আয়াত সর্ব প্রথম নাযিল হয় এবং পূর্ণাঙ্গ সূরা হিসাবে সর্ব প্রথম সূরা ফাতিহা নাযিল হয়। এ ঘটনার পর তিনি কম্পিত হৃদয়ে ঘরে ফিরে খাদীজাকে বললেন
আমাকে চাদরে জড়াও, আমাকে চাদরাবৃত কর।
একটু সুস্থ হয়ে তিনি ‘গারে হেরার’ সব ঘটনা খাদীজার কাছে খুলে বললেন। আরো বললেন : আমার জীবন নিয়ে আমি শংকিত। খাদীজা বললেন :
আল্লাহর কসম! আল্লাহ্ তা‘য়ালা কখনো আপনাকে অপদস্থ করবেন না। কারণ, আপনি আত্মীয়-স্বজনের হক আদায় করেন, আমানত রক্ষা করেন, বিপদগ্রস্তদের সাহায্য করেন, মেহমানদের আপ্যায়ন করেন, সব সময় ভাল কাজ করেন এবং পবিত্র জীবন যাপন করেন।
খাদীজার চাচাতো ভাই ওয়াকা বিন নওফল ছিলেন তাওরাত ও ইন্জিলের বিজ্ঞ আলিম। তিনি স্বামীকে নিয়ে তাঁর কাছে যান এবং হেরা গুহায় যা ঘটেছিল, তা সবই তাঁর কাছে বলেন। ওরাকা সব শুনে বলেন :
কুদ্দূস! কুদ্দূস! (জিব্রাইল, জিব্রাইল)! খাদীজা! যার হাতে আমার জীবন! তোমার কথা সত্য হলে, ইনি সেই ফিরিশ্তা, যিনি মূসা (আ.)-এর কাছে এসেছিলেন। আর ইনি শেষ নবী, যার আগমনের সুসংবাদ দিয়েছেন ঈসা (আ.) ।
ওরাকা তাঁকে বলেন :
মনে রেখ, তোমাকে লোকেরা মিথ্যাবাদী বলবে, দু:খ-কষ্ট দেবে, এমনকি তোমাকে দেশ থেকে বের করে দেবে। যদি আমি ততদিন বেঁচে থাকি, তবে আমি তোমাকে সাহায্য করবো।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন :
বলেন কি? আমার সম্প্রদায় আমাকে দেশ থেকে তাড়াবে?
ওরাকা বলেন :
হ্যাঁ। আজ পর্যন্ত যত নবী-রাসূল গত হয়েছেন, তাদের কাওমের লোকেরা তাঁদের সাথে বিরোধিতা করেছে এবং তাদের অনেক দু:খ কষ্ট দিয়েছে।
এরপর ওরাকা- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কপালে চুমু দিয়ে তাঁকে বিদায় দেন। (ইবনে হিশাম, সীরাতুর রাসূল, সীরাতে হালবিয়াহ)