وَ لَا تُطِعْ مَنْ أَغْفَلْنَا قَلْبَهُ عَنْ ذِكْرِنَا وَاتَّبَعَ هَوَهُ وَ كَانَ أَمْرُهُ فُرُطًا
তুমি তাহার আনুগত্য করিও না- যাহার চিত্তকে আমি আমার স্মরণে অমনোযোগী করিয়া দিয়াছি, যে তাহার খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করে ও যাহার কার্যকলাপ সীমা অতিক্রম করে
সুরা কাহ্ফ। আয়াত ২৮
বাগবী লিখেছেন, আলোচ্য বাক্যে দেওয়া হয়েছে উয়াইনার বিবরণ। বলা হয়েছে- হে আমার রসুল! আমি উয়াইনার কলবকে আমার জিকির থেকে বঞ্চিত করেছি। সে তার প্রবৃত্তিজাত খেয়ালের অনুসারী এবং তার কার্যকলাপ সীমালংঘনের দায়ে দুষ্ট। অতএব তার কথায় আকৃষ্ট হবেন না। কিন্তু ইবনে মারদুবিয়া ও জুহাকের বর্ণনায় এসেছে, আলোচ্য বাক্যে বলা হয়েছে উমাইয়া বিন খালফ্ জামুহীর কথা। সে একবার রসুলুল্লাহ্ স. কে বলেছিলো, মোহাম্মদ! তোমার দরিদ্র সহচরদের দূর করে দিয়ে তদস্থলে মক্কার নেতৃবৃন্দকে তোমার কাছে বসতে দাও। বলা বাহুল্য, তার এরকম গর্হিত বক্তব্য আল্লাহ্পাক পছন্দ করেননি। সে কথাই জানিয়ে দিয়েছেন এই আয়াতে।
ইবনে বুরাইদার বর্ণনায় এসেছে, একবার রসুলুল্লাহ্র মহান সান্নিধ্যে উপবিষ্ট ছিলেন হজরত সালমান ফারসী রা.। এমন সময় সেখানে উপস্থিত হলো উয়াইনা। বললো, আমরা অভিজাত শ্রেণীর লোকেরা আপনার কাছে বসতে চাই। তাই বলি, ওই অনভিজাতদেরকে তাড়িয়ে দিন। তখন অবতীর্ণ হলো 'যার চিত্তকে আমি আমার স্মরণে অমনোযোগী করে দিয়েছি....'। আলোচ্য আয়াতের মাধ্যমে প্রতীয়মান হয় যে, অভিজাত নেতৃবৃন্দের আবেদন প্রত্যাখ্যান করতে বলা হয়েছে দু'টি কারণে- ১. তাদের কলবে আল্লাহ্ জিকির নেই। ২. তারা অনুসরণ করে তাদের নফসের খেয়ালখুশীর।
উল্লেখ্য, পার্থিব প্রতাপ এবং বংশমর্যাদার অহংকার দূর না করা পর্যন্ত আল্লাহ্ এবং তাঁর রসুলের নৈকট্য লাভ করা যায় না। সুতরাং যাদের কলব আল্লাহ্ জিকির থেকে গাফেল এবং যারা নফসের অনুসারী তাদের অনুসরণ নিষিদ্ধ। (তারা আলেম, ফাজেল, নেতা, মন্ত্রী যেই হোক না কেনো)।