নবী জাকারিয়া সম্পর্কে অন্যত্র এরশাদ করেছেন-
إِذْ نَادَى رَبَّهُ نِدَاءٌ خَفِيًّا
(যখন সে তাহার প্রভুপালককে আহবান করিয়াছিল নিভৃতে)
সুরা মারিয়াম, আয়াত ৩
হজরত সা'দ ইবনে আবী ওয়াক্কাস বর্ণনা করেছেন, রসুল স. বলেছেন, উত্তম জিকির হচ্ছে জিকরে খফি (নীরব জিকির) এবং উত্তম জীবিকা হচ্ছে ওই জীবিকা, যা ন্যূনতম সামর্থ্যের অন্তর্ভূত। আহমদ, ইবনে হাব্বান, বায়হাকী।
হজরত আবু মুসা আশআরী বর্ণনা করেছেন, খয়বর যুদ্ধের সময় একটি প্রান্তর অতিক্রমকালে মুসলিম সৈন্যরা উচ্চস্বরে তকবীর উচ্চারণ করেছিলেন রসুলেপাক স. তখন বলেছিলেন, শান্ত হও। তোমরা কোনো অনুপস্থিত সত্তাকে তো আহবান করছো না- তোমরা ওই সত্তাকে ডাকছো, যিনি সর্বশ্রোতা এবং নিকটতম।
আমি বলি, বাগবী বর্ণিত এই হাদিসটির মাধ্যমে জিকিরে খফির শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয়। কিন্তু এখানে এ বিষয়টিও লক্ষণীয় যে, রসুলেপাক স. এখানে উচ্চস্বরে তত্ত্বীর ধ্বনিকে নিষিদ্ধ করেননি। বলেছেন, শান্ত হও। তাই এই হাদিসের মাধ্যমে জিকিরে খফির শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হওয়ার সাথে সাথে একথাও প্রমাণিত হয় যে, নীরব ও সরব উভয় প্রকার জিকির সিদ্ধ।
উম্মতজননী হজরত আয়েশা সিদ্দিকা রা. থেকে আবু ইয়ালী বর্ণনা করেছেন, রসুল স. বলেছেন, সরব জিকির অপেক্ষা নীরব জিকির সত্তর হাজার গুণ অধিক মর্যাদাপূর্ণ। শেষ বিচারের দিন ফেরেশতারা যখন মানুষের আমলনামা উপস্থিত করবে, তখন আল্লাহ্পাক এক লোককে দেখিয়ে বলবেন, ভালো করে দ্যাখো আমার এই বান্দার কোনো পাপ পুণ্য লেখা বাদ পড়লো কিনা! ফেরেশতারা বলবে, আমরা যা কিছু জেনেছি, শুনেছি ও দেখেছি- সবকিছুই আমলনামায় লিখে নিয়েছি। কোনো কিছুই পরিত্যাগ করিনি। আল্লাহতায়ালা বলবেন, আমার এই বান্দার গোপন আমলও রয়েছে, যার কথা তোমরা জানো না। সেই আমল হচ্ছে জিকরে খফি।
আমি বলি, এই জিকরে খফি বা কলবী জিকিরের ধারাবাহিকতা কখনো ছিন্ন হয় না। শারীরিক ক্লান্তি, শ্রান্তি ও আলস্য গোপন জিকিরের প্রতিবন্ধক নয়। জিকিরে জাগ্রত কলবে তাই প্রতিটি মুহূর্তে চলতে থাকে আল্লাহর জিকির।