কোরআন মাজীদের স্পষ্ট নির্দেশে যা অবশ্য করণীয় বলে হুকুম করা হয়েছে তাকে ফরজ বলা হয়। ফরজ অস্বীকারকারী কাফির। ইচ্ছাকৃতভাবে ত্যাগকারী ফাছেক। অনিচ্ছায় ত্যাগ করলেও গোনাহগার হবে। ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ ত্যাগ করলে প্রতি ওয়াক্তের জন্য ৮০হোকবা দোজখের শাস্তি ভোগ করতে হবে। অলসতা করে এক ওয়াক্তের নামাজ অন্য ওয়াক্তে পড়লেও এক হোকবা অর্থাৎ ২ কোটী ৮৪ লাখ বছর দোজখের শাস্তি ভোগ করতে হবে।
নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম যে নামাজ কোন সময় তরক করেননি, এমনকি তরক হয়ে গেলে তার কাজা আদায় করেছেন তা ছুন্নাতে মোয়াক্কাদা বা দায়েমী ছুন্নাত হিসেবে পরিচিত। যেমন - ফজরের ফরজ নামাজের আগে দু রাকাত, জোহরের ফরজের আগে চার রাকাত ও পরে দু রাকাত, মাগরীবের পরে দু রাকাত, এশার পরে দু রাকাত মোট বার রাকাত নামাজ নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লামকোন সময় তরক করেননি। এ নামাজগুলি উম্মতে মোহাম্মাদীর জন্য দায়েমী ছুন্নাত নয়। এ নামাজ কাজা হয়ে গেলে কাজা না পড়লে গোনাহ হয় না। অবশ্য নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম এর অনুসরণে কাজা করা উত্তম ।
নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম যে নামাজ কখনো পড়েছেন আবার কখোনো ছেড়ে দিয়েছেন অর্থাৎ সব সময় আদায় করেননি তা ছুন্নাতে যাওয়ায়েদ বা নফল হিসেবে পরিচিত। যেমন ইশরাক, চাশত, আওয়াবিন, তাহাজ্জদ প্রভৃতি নামাজ। এ সকল নামাজ পড়লে ছওয়াব হয় আর না পড়লে কোন গোনাহ হয় না ।
শরীয়তে যেখানে ছুন্নাতে মোয়াক্কাদা নামাজের কোন কাজা আদায় করা লাগেনা সেখানে অনেক মুছল্লী ভাই নফলকে ফরজতুল্য মনে করে উক্ত নফল কখনো ও ছাড়তে রাজী হয়না। কোন কোন মুছল্লী ভাই গর্বভরে বলে থাকেন, ‘আমার কোন সময় তাহাজ্জদ বা আওয়াবিন কাজা হয়নি' অথচ তিনি অনেক ফরজ নামাজ কাজা করেছেন। তাছাড়া ফরজ নামাজের মধ্যের ফরজ, ওয়াজিব, ছুন্নাত, মোস্তাহাব আমলগুলি ঠিকমতো আদায় করেননি। নামাজের মধ্যের ফরজ, ওয়াজিব, ছুন্নাত যথারিতী আদায় না করে নফলে লিপ্ত হলে তাতে কোন উপকার হয় না ।
[আরবী]
হযরত আলী রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম আমাকে রুকু অবস্থায় কেরাত পড়তে নিষেধ করেছেন। এবং বলেছেন হে আলী ! যে তার নামাজের মধ্যে পিঠকে সোজা না রাখে তার দৃষ্টান্ত ঐ বন্ধ্যা স্ত্রীলোকের ন্যায় যে গর্ভধারণ করার পর গর্ভ পাত ঘটালো। সুতরাং সে গর্ভবতীও হলো না সন্তানবতীও হলো না। আবু ইয়ালা ও ইসবাহানী এ হাদীছ বর্ননা করেছেন। ইসবাহানী নীচের অংশটুকু বেশী রেওয়ায়েত করেছেনঃ মুছল্লীর দৃষ্টান্ত ঐ ব্যবসায়ীর ন্যায় যার আসল মুলধন না থাকলে আসল লাভই হবে না। তেমন মুছল্লীর ফরজ আদায় না হওয়া পর্যন্ত তার নফল নামাজ কবুল হবে না।
(আততারগীব প্রথম জেলদ ৩৩৮পৃষ্টা)
আহলে কেতাবগণ এ জন্যেই ধ্বংস হয়েছে যে, তাদের ফরজ নামাজ ও ছুন্নাত নামাজের মধ্যে কোন পার্থক্য ছিল না। (মেশকাত, হাদীছ নং ৯১০)
অবশ্য ফরজ, ওয়াজিব, ছুন্নাত যথাযথভাবে আদায় করার পর নফল পড়লে আল্লাহ পাকের নৈকট্য লাভের সহায়ক হয় ।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০৯৬) পীড়িত ব্যক্তির নামাজ | (০৯৮) রছুলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম এর নফল নামাজ |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |