ক) মধ্যম পন্থায় তিন দিনের ভ্রমন পথ অতিক্রম করার জন্য রওনাকারীকে মুছাফির বলা হয়। আমাদের দেশের আলেমগণ আটচল্লিশ মাইল পথের ভ্রমনকারীকে মুছাফির বলেন ।
খ) যদি কেহ উক্ত সময়ের পথ বাসে, ট্রেনে, ষ্টীমারে কিংবা উড়োজাহাজে ভ্রমন করেন তবে তিনিও মুছাফির বলে গণ্য হবেন।
গ) মুছাফির কোন স্থানে পনের দিন-রাত অর্থাৎ তিনশত ষাট ঘন্টা থাকার নিয়েত করলে মুকিম বলে গন্য হবেন। উক্ত সময়ের কম নিয়েত করলে মুছাফির বলেই গণ্য হবেন।
ঘ) মুছাফিরের জন্য জোহর, আছর ও এশার চার রাকাত ফরজ নামাজের স্থানে দুই রাকাত করে কছর অর্থাৎ খাটো করা ফরজ নামাজ আদায় করতে হবে। ফজর ও মাগরিবের কছর নেই ।
ঙ) লঞ্চ, ষ্টীমার, প্লেন, রেল ও বাসের কর্মচারীগণ যানবাহনে কর্মরত অবস্থায় পনের দিনের অধিক সময় কোনখানে থাকার নিয়েত করলেও মুকিম হবেন না বরং এরা মুছাফির বলেই গণ্য হবেন। পনের দিন একস্থানে থাকলে মুকিম বা বাসিন্দা বলে ।
চ) মুকিম বাসস্থানের ঘর হতে বের হলে অথবা নিজ বাড়ীর সীমানা অতিক্রম করলেই মুছাফির বলে গণ্য হবেন এবং চার রাকাত এর স্থলে দু' রাকাত নামাজ কছর করবেন।
ছ) মুছাফির বাস, ট্রেনে চাকুরী অবস্থায় বা ব্যবসা স্থান থেকে বাড়ীতে কাল যাবো কি পরশু যাবো এরূপ করতে করতে পনের দিনের অধিক এমন কি বছরকাল পার হলেও মুছাফির বলেই গণ্য হবে।
মনে রাখুনঃ মুছাফিরের মুকিম হওয়ার জন্য ছয়টি শর্তঃ
১। কোন স্থানে পনের দিন থাকার নিয়েত করা ।
২। উক্ত পনের দিন একই স্থানে থাকার নিয়েত করা ।
৩। স্বাধীনভাবে নিজের ইচ্ছায় নিয়েত করা। কারো অধীনে অর্থাৎ কোন অফিসার বা মালিকের অধীনে ছফরে গেলে মালিক বা অফিসারের নিয়েতই নিয়েত বলে গণ্য হবে। নিজের নিয়েত ধরা হবে না।
৪। ভ্রমনকালে কোন স্থানে থাকার নিয়েত করলে সে স্থানে পৌছে যাওয়া।
৫। নির্দিষ্ট এক স্থানের নিয়েত করা।
৬। নিয়েতকৃত স্থান থাকার উপযুক্ত হওয়া ।
উপরের ছয়টি শর্ত পাওয়া না গেলে মুকিম না হয়ে মুছাফির বলে গণ্য হবেন ।
১৩৬
মুছাফির ব্যক্তির মনে থাকা অবস্থায় দু রাকাত এর স্থলে চার রাকাত নামাজ পড়লে চারটি দোষের কারণে উক্ত নামাজ আদায় হবে না।
ক) দু'রাকাতের স্থলে চার রাকাত পড়লে ছালাম বিলম্বে করা হয় ।
খ) কছর ফরজ ছিল তা তরক করা হয়।
গ) দু'রাকাত ফরজ ধরে বাকী দু'রাকাত নফল গণ্য করলেও নফলের জন্য তাকবীরে তাহরীমা ফরজ, তা ছেড়ে দেয়া হয়।
ঘ) ফরজের সাথে নফল একত্রিত করে পড়া হয়। শরীয়তে ইহা জায়েজ নয় ভুলে দু'রাকাত স্থলে চার রাকাত পড়ে ফেললে ভুলের কারণে নামাজ শুদ্ধ হবে। কিন্তু মাকরুহ তাহরীমির গোনায় লিপ্ত হবে।
সুস্থ অবস্থায় কোন ব্যস্ততা না থাকলে মুছাফির ছুন্নাত নামাজ পড়ুন ।