মুজাহিদ বর্ণনা করেনঃ হযরত ছিদ্দীকে আকবার রাদিআল্লাহু আনহু যখন নামাজে দাড়াতেন তখন মনে হতো যেন একটি শুকনো কাঠ পুতে রাখা হয়েছে। অর্থাৎ তিনি নামাজে ধীর স্থির থাকতেন, কোনরূপ নড়াচড়া করতেন না।
হযরত ইবনে জোবায়ের হযরত ছিদ্দীকে আকবারের নিকট থেকে এবং ছিদ্দীকে আকবার রছূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম থেকে নামাজ শিক্ষা করেন। রছূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম যে পদ্ধতিতে নামাজ আদায় করতেন ছিদ্দীকে আকবার রাদিআল্লাহু আনহু সে পদ্ধতিতে নামাজ আদায় করতেন। আর হযরত ইবনে জোবায়ের ও হযরত ছিদ্দীকে আকবারের মতো নামাজ আদায় করতেন।
হযরত ছাবেত বর্ণনা করেনঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে জোবায়ের যখন নামাজে দাড়াতেন তখন মনে হতো একটি কাঠ পুতে রাখা হয়েছে যার কোন নড়াচড়া নেই। তিনি ছেজদা এত লম্বা করতেন যে চড়ুই পাখি কাঠ মনে করে তার পিঠের উপর এসে বসতো।
এক যুদ্ধের সময় মছজিদের দেওয়ালের পাশে দাড়িয়ে তিনি নামাজ পড়ছিলেন। এমনসময় গুলির আঘাতে দেওয়ালের একটা টুকরা ভেঙ্গে তার গলা ও দাড়ির মাঝখান দিয়ে ছুটে গেল। এ অবস্থায়ও তিনি নির্বিকারভাবে নামাজ আদায় করলেন।
একবার নামাজ রত অবস্থায় তার পাশে শোয়ানো শিশু পুত্র হাশেমের গায়ের উপর একটা সাপ পড়ে তাকে জড়িয়ে ধরে। হাশেমের চিৎকারে বাড়ীর অন্যান্য লোকজন এসে সাপটি মেরে ফেলে। হযরত ইবনু জোবায়ের ছালাম শেষে ঘরের লোকজনের কাছে জিজ্ঞেস করলেনঃ একটা চিৎকারের আওয়াজ শুনলাম, সেটা কিসের ছিল ? স্ত্রী জবাবে বললঃ ছেলে তো মারা যাচ্ছিল। আপনি বুঝতে পারেন নি ? জবাবে তিনি বললেনঃ নামাজে এদিক সেদিক খেয়াল করলে নামাজ তো হতো না।
হযরত আলী রাদিআল্লাহু আনহু এর অভ্যাস ছিল, নামাজের ওয়াক্ত হলে তাঁর শরীর কাপতে থাকতো এবং মুখ ফ্যাকাশে হয়ে যেত। কেউ এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ এখন সেই আমানাতের সময় যা আল্লাহ তাআ'লা আছমান জমীন এবং পাহাড়ের ওপর রাখতে চেয়েছিলেন কিন্তু তারা তা বহন করতে অক্ষমতা প্রকাশ করেছিলো। আর আমি তা গ্রহন করলাম। তিনি নামাজে দাড়ালে দুনিয়ার কোন খবর থাকতো না ।
যুদ্ধ এক যুদ্ধের সময় তার ঊরুতে তীর বিদ্ধ হলো। অনেক চেষ্টা করেও তীর বের করা সম্ভব হলো না। সকলে পরামর্শ করলেন যে নামাজে দাড়ালে তীর বের করতে হবে। তিনি নামাজের ছেজদায় গেলে তারা শরীর থেকে তীর টেনে বের করে নিলেন। নামাজ শেষে লোকের ভীড় দেখে তিনি বললেনঃ তোমরা কি তীর বের করার জন্য এসেছ ? তারা জবাব দিলেনঃ আপনার নামাজ পড়ার সময় তীর বের করে নেয়া হয়েছে। হযরত আলী বললেনঃ আমি তো টেরই পাইনি । ছাহাবাগণের নামাজ কায়েমের এমন ভুরি ভুরি প্রমান রয়েছে। বইয়ের কলেবর বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে সংক্ষিপ্ত করা হলো ।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০২৪) রছুলুল্লাহ (সঃ) এর নামাজ | (০২৬) মুনাফিকের নামাজ |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |