হুজুর আকরম (সঃ) এহতেলাম বা স্বপ্নদোষ থেকে নিরাপদ ছিলেন । সাইয়্যেদুনা হজরত ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, কোনো নবীর কখনও স্বপ্নদোষ হয় নাই। কেননা স্বপ্নদোষ শয়তানের আছর থেকে হয়ে থাকে। হাদীছখানা তিবরানী (রঃ) বর্ণনা করেছেন ।
বুখারী ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত হয়েছে, হুজুর আকরম (সঃ) রমজান মাসে ফজরের সময় (অর্থাৎ সুবেহ সাদেকের পূর্বে) এহতেলাম ব্যতীত জুনুবী হতেন। (স্ত্রী সহবাসের পর গোছল ওয়াজেব হলে সেই ব্যক্তিকে জুনুবী বলা হয়)। অতঃপর তিনি গোছল করে রোজা রাখতেন। হাদীছ শরীফে ‘এহতেলাম ব্যতীত' কথাটির উল্লেখ থেকে এমন একটি ধারণা সৃষ্টি হয় যে, হুজুর পাক (সঃ) এর শানে এহতেলাম হওয়ার সম্পর্ক লাগানো ‘বৈধ'। অর্থাৎ তাঁর দ্বারা হওয়া সম্ভব। নয়তো ‘এস্তেসনা' করার অর্থ কি? এর উত্তর হচ্ছে এই যে, এস্তেসনার ভিত্তিটা জায়েয না হওয়ার উপর। আর যে ‘কয়েদ’ করা হয়েছে এটি হচ্ছে ‘কয়েদে এত্তেফাকী'। অর্থাৎ এতেহলাম হওয়াটা সম্ভব এটা বুঝাচ্ছে। আর বর্ণনাটি হচ্ছে বাস্তবতার নিরিখে। অর্থাৎ হুজুর আকরম (সঃ) এর গোছল ছিলো সহবাসের কারণে। এহতেলামের কারণে নয়। কেননা এহতেলাম তো তাঁর শানে প্রযোজ্যই নয়। উপরোক্ত হাদীছের ব্যাখ্যা যদি এরূপ না হয়, তবে তো হাদীছের মর্মার্থ দাঁড়ায় এরকম, এহতেলামের সাথে যদি সহবাস জনিত জানাবাত হয় তবে গোছল ফরজ হবে না। বস্তুতঃ এটি হচ্ছে একটি ভ্রান্ত ধারণা। আল্লামা কুরতুবী (রঃ) বলেন, বিশুদ্ধ কথা এইযে, এহতেলাম হওয়া তাঁর সম্মানে বৈধই নয় । যেহেতু স্বপ্নদোষ হলো শয়তানের কাজ। হুজুর আনওয়ার (সঃ) তাথেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ ছিলেন। রোজা সংক্রান্ত হাদীছে যে, ‘এহতেলাম ব্যতীত' কথাটির উল্লেখ হয়েছে তার মর্মার্থ হচ্ছে স্বপ্নে কিছু দেখা ব্যতীত নির্গত হওয়া। (তাও তাঁর দ্বারা সংঘটিত হয় নি)। কেননা স্বপ্নদোষকালে যা দেখানো হয়, তা শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। কাযী আয়ায (রঃ) উক্ত হাদীছের ব্যাখ্যায় একথা বলেন, হুজুর (সঃ) যে গোছল করেছিলেন তা সহবাসের পর কিছু সময় অতিবাহিত হওয়ার পর হয়েছিলো।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০৩৭) দাম্পত্য জীবন | (০৩৯) হুলিয়া মুবারক, চরিত্র ও অভ্যাস সমূহের বর্ণনা |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |