বিহিশত ও দোযখ হক। এ দু'টি আল্লাহ্ তা'আলা তৈরি করে রেখেছেন। এর অধিবাসীসহ এরা চির বিদ্যমান। যেমন বিহিশত সম্পর্কে আল কুরআনের ঘোষণা : যারা ঈমান আনল ও নেক আমল করল, তাঁরা বিহিশতের অধিবাসী, তাঁরা সেথায় চিরকাল স্থায়ীভাবে থাকবে। (২ : ৮১) দোযখ সম্বন্ধে আল কুরআনের ঘোষণা ঃ যারা কুফরী করল ও আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করল, তারা দোযখের বাসিন্দা, তারা সেথায় চিরকাল স্থায়ীভাবে থাকবে। (২ : ২৫) আল কুরআনে এ ধরনের বহু আয়াত আছে। বিহিশতবাসীদের তথায় থাকবে আয়তলোচনা হুরকুল। যেমন বিহিশতবাসীরা বিহিশতে প্রবেশের পর স্থায়ী হবেন, মারা যাবেন না, ঠিক তেমনি হুররাও মরবেন না। আল কুরআনে চারবার হুরদের কথা উল্লেখিত হয়েছেঃ ৪৪ঃ ৫৮; ৫২ঃ ২০; ৫৫ঃ৭২ ও ৫৬ঃ ২২।
এখানে ইমাম আ'যম সিরাতের কথা উল্লেখ করেননি। ব্যাখ্যাকাররা বলেছেন যে, জান্নাত ও জাহান্নামের পূর্বেই পুলসিরাতের বর্ণনা । আল-কুরআনে বলা হয়েছে : তোমাদের মাঝে কেউই নেই, যে তা অতিক্রম করবে না। এ হলো তোমার রবের অনিবার্য সিদ্ধান্ত। (১৯ : ৭১) অধিকাংশ তাফসীরকারদের মতে এর অর্থ পুলসিরাত অতিক্রম করা। হযরত ইবন আব্বাস (রা) থেকে এরূপ রিওয়ায়াত বর্ণিত হয়েছে। সহীহ মুসলিমে পুলসিরাত সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে : জাহান্নামের ওপর একটি দীর্ঘ সেতু হলো পুলসিরাত, যা চুলের চাইতে সূক্ষ্ম ও তরবারীর চাইতে ধারাল । আর এক বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ্ (সা) বলেন : পুলসিরাত জাহান্নামের দু'প্রান্ত সংযুক্ত সেতু এবং সব রাসূলদের মধ্যে আমিই সর্বপ্রথম উম্মতদের নিয়ে তা অতিক্রম করব। হযরত জাবির (রা) নবী (সা) থেকে বর্ণনা করেন : রাসূলুল্লাহ্ (সা)-কে উক্ত আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, অতিক্রম করা অর্থ প্রবেশ করা। কোন নেককার অথবা বদকার এমন থাকবে না যে, সে সেখানে প্রবেশ করবে না। মু'মিনের জন্য তা শীতল ও শান্তিদায়ক হবে যেমন হয়েছিল ইবরাহীম (আ)-এর জন্য ।
হাশর ময়দানে মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কথা বলবে, এটিও একটি আকীদার বিষয় । আল কুরআনের ঘোষণা : যেদিন সাক্ষ্য দিবে তাদের বিরুদ্ধে তাদের জিহ্বা, তাদের হাত ও তাদের পা তাদের কৃত কর্ম সম্বন্ধে, সেদিন আল্লাহ্ তাদের প্রতিফল পুরোপুরি দিবেন এবং তারা জানবে যে, আল্লাহ্ই সত্য, স্পষ্ট প্রকাশকারী। (২৪ ঃ ২৪, ২৫) পরিশেষে যখন তারা জাহান্নামের কাছে পৌঁছবে তখন তাদের কান, তাদের চোখ ও তাদের চামড়া তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে সাক্ষ্য দিবে। (৪১ : ২০) জাহান্নামীরা তাদের চামড়াকে জিজ্ঞাসা করবে, তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিচ্ছ কেন ? চামড়া উত্তরে বলবে, আল্লাহ্ যিনি সবকিছুকে বাকশক্তি দিয়েছেন, তিনিই আমাদের বাকশক্তি দিয়েছেন। (৪১ : ২১)