মূল ঈমান ও তওহীদের দিক দিয়ে সব মু'মিন সমান। তবে আমলের কারণে তাঁরা বিভিন্ন মর্যাদা ও অবস্থার অধিকারী হয়। তাই ইমাম মুহাম্মদ (র) বলেছেনঃ
আমি অপছন্দ করি যে, কেউ একথা বলবে, “আমার ঈমান জিবরাঈল (আ)-এর ঈমানের ন্যায়।” বরং তার বলা উচিত, “আমি ঈমান এনেছি তাতে, জিবরাঈল (আ) ঈমান এনেছেন যাতে ।” ঠিক অনুরূপভাবে একথা বলাও ঠিক নয় যে, “আমার ঈমান নবীদের ঈমানের মত, অথবা আমার ঈমান হযরত আবূ বকরের ঈমানের মত ইত্যাদি।” তওহীদ ও ঈমানের নূর কারো অন্তরে সূর্যের মত, কারো অন্তরে চন্দ্রের মত, কারো অন্তরে তারকার মত, কারো অন্তরে প্রদীপের মত আবার কারো অন্তরে নিভু নিভু বাতির মত। এজন্যই তো হাদীসে এসেছে : এ হলো দুর্বলতর ঈমান । আরো এসেছে : সবল মু'মিন প্রিয়তর আল্লাহর কাছে দুর্বল মু'মিনের চাইতে।
ইমাম আ'যম (র) তাঁর ‘আল অসিয়াত' গ্রন্থে লিখেছেন : ঈমান ও আমল এক নয়, বরং ভিন্ন। কারণ অনেক সময় একজন মু'মিন থেকে আমলকে তুলে নেয়া হয় । কখনো তার থেকে ঈমান তুলে নেয়া হয় না। যেমন একজন মহিলাকে হায়েয অবস্থায় নামায পড়তে নিষেধ করা হয়েছে, কিন্তু তাকে ঈমান রাখতে বারণ করা হয়নি। তাকে রমযানের রোযা ভাঙ্গতে অনুমতি দিয়ে পরে কাযা করতে বলা হয়েছে, কিন্তু ঈমান কাযা করতে বলা হয়নি। একজন গরীবের ওপর যাকাত ফরয নয়, কিন্তু তার ওপর ঈমান ফরয। তাই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের কাছে ঈমান ও আমল আলাদা আলাদা বিষয় । আমল কখনো ঈমানের অংশ নয় কিংবা রুকন নয়, যেমন- মু'তাযিলীরা মনে করে। আল-কুরআনে বর্ণিত ঈমান ও আমলের নির্দেশে যে ‘আতফ’ (عطف) তা مغايرة বা পার্থক্য বুঝানোর জন্য, একত্বতা নির্দেশক নয় ।