আল্লাহ তায়ালার কি যে মহিমা! যেদিন হযরত মুসলিম (রাঃ) কূফায় শহীদ হলেন, সেদিনই হযরত ইমাম হুসাইন (রাঃ) প্রিয়জন ও আপনজনদের নিয়ে মক্কা শরীফ যাত্রা করলেন। কারণ, উনার কাছে চিঠি পৌঁছেছিল যে, কূফার অবস্থা খুবই সন্তোষজনক, তিনি যেন বিনা দ্বিধায় অনতিবিলম্বে তাশরীফ নিয়ে আসেন । তিনি তাঁর (রাঃ) বিবিগণ, বোন, ছেলেমেয়ে এমনকি দুগ্ধপোষ্য শিশুদেরকেও সঙ্গে নিলেন এবং মক্কা মুকাররমা থেকে বের হলেন। উলামায়ে কিরাম লিখেছেন যে, তাঁর (রাঃ) কাফেলায় ৮৩ জন ছিল যাদের মধ্যে মহিলা, দুগ্ধপোষ্য শিশুও ছিল । তার সঙ্গে কয়েকজন যুবক বন্ধু-বান্ধবও ছিলেন। আল্লাহ্! আল্লাহ্! এখানে একটি কথা বিশেষভাবে স্মরণীয় যে, হযরত ইমাম হুসাইন (রাঃ) যুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে বা মোকাবিলা করার উদ্দেশ্যে বের হননি। কেননা, তিনি যদি যুদ্ধ বা মোকাবিলা করার উদ্দেশ্যে বের হতেন তাহলে, তিনি কখনও মেয়েলোক ও দুগ্ধপোষ্য শিশুদের নিয়ে বের হতেন না। আপনারা নিশ্চয় বুঝতে পারছেন যে যারা যুদ্ধ বা মোকাবেলা করার উদ্দেশ্য বের হয়, তারা কখনও মেয়েলোক ও দুগ্ধপোষ্য শিশুদের নিয়ে বের হয় না । ইমাম হুসাইন (রাঃ) এর নিজের বিবি ও দুগ্ধপোষ্য শিশুদের নিয়ে বের হওয়াটা এটাই প্রমাণ করে যে, তিনি যুদ্ধ কিংবা মোকাবিলার উদ্দেশ্যে বের হননি। তাঁর কাছে তো চিঠি এসেছে যে, সেখানকার অবস্থা খুবই সন্তোষজনক, চল্লিশ হাজার লোক বাইয়াত গ্রহণ করেছে, কূফাবাসীরা বেশ মেহমানদারী করছে। তাই তিনি তাঁর আপনজনদেরকে নিয়ে বের হয়েছেন এবং যুদ্ধ করার কোন অস্ত্র-শস্ত্র রাখেননি। হযরত ইমাম হুসাইন (রাঃ) মক্কা শরীফ থেকে কূফার উদ্দেশ্যে বের হয়ে কিছুদূর যাবার পর হযরত ইমাম মুসলিম (রাঃ)-এর শাহাদাত বরণের খবর পেলেন।
হযরত ইমাম মুসলিম (রাঃ)-এর শাহাদাতের খবর শুনে তিনি এবং তাঁর সফরসঙ্গীগণ একেবারে হতবাক হয়ে গেলেন। কোথা থেকে কি হয়ে গেল। মাত্র কয়েকদিন আগে হযরত ইমাম মুসলিম (রাঃ)-এর চিঠি আসলো, কূফার অবস্থা খুবই সন্তোষজনক। অথচ এখন শুনছি তাকে শহীদ করে ফেলেছে । এটা কি ধরণের ঘটনা! যা হোক, তারা পিছপা হলেন না, সম্মুখপানে অগ্রসর হলেন। তাঁদের সিদ্ধান্ত হলো, ওখানে যাওয়া যাক এবং কিভাবে এত তাড়াতাড়ি এ ধরণের ঘটনা ঘটে গেল, তা জানা হওয়া। এ মনোভাব নিয়ে তারা কুফার দিকে ধাবিত হলেন ।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০৮) কূফাবাসীর বেঈমানী ও হযরত ইমাম মুসলিমের শাহাদাত | (১০) কারবালা প্রান্তরে ইমাম হুসাইন (রাঃ) |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |