জামা'আতে নামাজ না পড়লে তার নামাজ কবুল হয় না
قَالَ مَنْ سَمِعَ النِّدَاءَ فَلَمْ يُحِبْهُ فَلاَ صَلَاةَ لَهُ إِلا مِنْ عُذْرٍ -
হযরত ইবনু আব্বাছ রাদিআল্লাহু আনহু রছূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম হতে বর্ণনা করেন- রছূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম বলেছেন- যে কেউ আজান শুনলো অথচ জামাআতে হাজির হলোনা তার নামাজ কবুল হবে না। তবে যদি তার কোন ওজর থাকে ।
(দারা কুতনী মেশকাত – ১০১০)
হযরত ওছমান রাদিআল্লাহু আনহু বলেন- আমি রাছুলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছল্লামকে বলতে শুনেছি—
مَنْ تَوَضَّأَ فَأَسْبَغَ الْوَضُوْءَ- ثُمَّ مَشَي إِلَى صَلَاةٍ مَكْتُوْبَةٍ فَصَلَاهَا مَعَ الْإِمَامِ غُفِرَ لَهُ ذَنْبُهُ .
যে ব্যক্তি অজু করল আর অজুকে পূর্ণরূপে আদায় করল এরপর ফরজ নামাজ আদায়ের জন্যে ইমামের পিছনে গিয়ে নামাজ আদায় করল তার গোনাহ মাফ করে দেয়া হবে।
(আততারগীব ১ম- ২৬২ পৃঃ)
রছুলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম বলেছেন –
مَنْ صَلَّى لِلَّهِ أَرْبَعِيْنَ يَوْمًا فِي جَمَاعَةٍ يُدْرِكُ التَّكْبِيرَةَ الْأُولى كُتِبَ لَهُ بَرَاءَتَانِ - بَرَاءَةٌ مِنَ النَّارِ وَبَرَاءَةٌ مِنَ النِّفَاقِ -
যে ব্যক্তি একমাত্র আল্লাহর জন্যে চল্লিশ দিন তাকবীরে উলা অর্থাৎ নামাজের প্রথম তাকবীরের সাথে জামাআতে নামাজ আদায় করবে, তার জন্যে দু'টি মুক্তি লেখা হবে। ১। জাহান্নামের আগুন হতে মুক্তি আর ২। মুনাফেকীর দোষ অর্থাৎ মিথ্যা, আমানাতে খেয়ানাত, ওয়াদা খেলাফ ও অশ্লীল গালি গালাজ হতে মুক্তি।
(তিরমিজি আততারগীব ১ম - ২৬৩ পৃঃ)।
হযরত আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে, রছূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম বলেছেন -
قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم - صَلاَةُ الرَّجُلِ فِي جَمَاعَةٍ تُضْعَفُ عَلَى صَلَاتِهِ فِي بَيْتِهِ وَفِى سُوْقِهِ خَمْسًا وَعِشْرِيْنَ ضِعْفًا – وَذَلِكَ أَنَّهُ إِذَا تَوَضَّأَ الْوَضُوْءَ ثُمَّ خَرَجَ إِلَى الْمَسْجِدِ لَا يُخْرِجُهُ إِلَّا الصَّلَاةُ – لَمَّ يخط خُطْوَةً إِلا رُفِعَتْ لَهُ بِمَا دَرَجَةً وَحُطَّ عَنْهُ بِمَا خَطِيئَةٌ – فَإِذَ صَلَّى لَمْ تَزَلِ الْمَلائِكَةُ تُصَلّى عَلَيْهِ مَا دَامَ فِي مُصَلَاهُ مَا لَمَّ يُحْدِثُ اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَيْهِ – اَللَّهُمَّ ارْحَمْهُ – وَلَا يَزَالُ فِي صَلَاةٍ مَا انْتَظَرَ الصَّلاةَ -
কোন ব্যক্তির ঘরে একাকী নামাজ পড়া অথবা বাজারে নামাজ পড়ার চেয়ে জামাতে নামাজ পড়ার মর্যাদা পঁচিশ গুন বেশী। এ বেশী মর্যাদা সে ব্যক্তি তখন পাবে যখন সে অজু করার সময় অজুকে সুন্দর- ভাবে আদায় করবে আর মছজিদে যাওয়ার সময় নামাজ ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে যাবে না। তখন তার প্রতি কদমে তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেয়া হবে আর তার পাপের গোনাহ কমিয়ে দেয়া হবে। এরপর যখন সে নামাজ পড়বে ফেরেশতাগণ তার অজু নষ্ট না হওয়া পর্যন্ত তার জন্যে মাগফিরাত কামনা করে বলতে থাকবে- হে আল্লাহ! তুমি তাকে মাফ কর, হে আল্লাহ ! তুমি তার উপর রহম কর। আর তার নামাজের জন্যে অপেক্ষা করার সময়কেও নামাজের মধ্যে গন্য করা হবে।
(বোখারী, মুছলিম, আবু দাউদ, তিরমিজি, ইবনু মাজা, আততারগীব ১ম, ২৬০ )
وَعَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ اللهِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَا مِنْ ثَلَاثَةٍ فِي
عَلَيْهِمْ قَرْيَةٍ وَلَا بَدْرٍ لَا تُقَامُ فِيهِمُ الصَّلَاةُ إِلا قَدْ اسْتَحْوَذَ الشَّيْطَانُ ، فَعَلَيْكَ بِالْجَمَاعَةِ فَإِنَّمَا يَأْكُلُ الذِّئبُ القَاصِيَةَ -
হযরত আবু দারদা রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে - রছূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম বলেছেন - গ্রামের বা শহরের মধ্যের যে কোন ৩ ব্যক্তি যদি জামাতে নামাজ না পড়ে তাহলে শয়তান অবশ্যই তাদের উপর প্রভাব বিস্তার করবে। সে জন্যে অবশ্যই জামাতে নামাজ পড়বে। কেননা যে ছাগল ভেড়া দল ছেড়ে একা থাকে তাকেই নেকড়ে বাঘে খায়।
(আহমাদ, আবু দাউদ ও নাছায়ী) (মেশকাত ১০০০)
وَعَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ سَمِعَ الْمُنَادِى فَلا يَمنعُه مِنْ اِتِّبَاعِهِ عُذْرٌ - قَالُوا وَمَا الْعُذْرُ - قَالَ خَوْفٌ أَوْ مَرَضٌ لَمْ تُقْبَلْ مِنْهُ الصَّلَاةُ الَّتِي صَلَّى -
হযরত ইবনি আব্বাছ রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রছুলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম বলেছেন – যে আজান শুনলো আর আজানের অনুসরণে জামাতে হাজির হওয়ার জন্যে তার কোন ওজরও প্রকাশ পেলনা, এরপরও সে জামাতে হাজির হলোনা, তার সেই একাকী নামাজ পড়া আল্লাহ তাআ'লা কবুল করবেন না। ছাহাবী- গণ জিজ্ঞেস করলেন ওজর কি? তিনি বললেন-ভয় অথবা রোগ।
(আবু দাউদ, দারাকুতনী মেশকাত – ১০০১)
عَنْ ابْنِ عُمَرَ اللهِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَا تَمْنَعُوا نِسَاءَكُمُ الْمَسَاجِدَ وَبُيُوتُهُنَّ خَيْرٌ لَّهُنَّ - رواه ابو داوود -
হযরত ইবনি ওমর রাদিআল্লাহু আনহু বলেন- রছুলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম বলেছেন- তোমাদের স্ত্রীদের মছজিদে হাজির হতে বাধা দিওনা কিন্তু তাদের জন্যে তাদের ঘরই উত্তম।
(মুছলিম - মেশকাত - ৯৯৫)
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ اللهِ قَالَ إِنِّي سَمِعْتُ حِتِي ابُو القَاسِمِ يَقُوْلُ لا تُقْبَلُ صَلاَةُ امْرَأَةٍ تَطَيِّبَتْ لِلْمَسْجِدِ حَتَّى تَغْتَسِلَ غُسْلِهَا مِنَ
হযরত আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু আনহু বলেন- আমি আমার প্রিয় আবুল কাছেম ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে স্ত্রীলোক মছজিদে যেতে খোশবু বা সুগন্ধি ব্যবহার করেছে, সে নাপাকির গোছলের মতো গোছল না করা পর্যন্ত তার নামাজ কবুল হবে না।
(আবু দাউদ, মেশকাত – ৯৯৭)
عَنْ ابْنِ مَسْعُوْدٍ له قَالَ قَالَ النَّبي صلى الله عليه وسلم صَلَاةُ الْمَرْأَةِ فِي بَيْتِهَا أَفْضَلُ مِنْ صَلَاتِهَا فِي حُجْرَتِهَا وَصَلَاتُهَا فِي مُخْدَعِهَا أَفْضَلُ مِنْ صَلاتِهَا في بَيْتِهَا - رواه ابو داود -
হযরত ইবনি মাছউদ রাদিআল্লাহু আনহু বলেন - রছূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি অছাল্লাম বলেছেন – স্ত্রীলোকের ভিতরের ঘরের নামাজ তার বাইরের ঘরের নামাজ পড়া হতে উত্তম, আর তার কামরার মধ্যের নামাজ তার ঘরের নামাজ পড়া হতেও উত্তম।
(আবু দাউদ, মেশকাত – ৯৯৬)
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০৭৯) কোন কাজের অছিলায় নামাজ শেষ করা (ফরজ ৭) | (০৮১) জামা'আত শুরু হলে ছুন্নাত পড়ার নিয়ম |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |