কারো মালিকানায় নিসাব পরিমাণ স্বর্ণ-রৌপ্য থাকলে এবং তা এক বছর স্থায়ী হলে তার উপর ঐ স্বর্ণ-রৌপ্যের যাকাত আদায় করা ফরয। এ স্বর্ণ-রৌপ্য যে অবস্থায়ই থাকুক অলংকার আকারে ব্যবহৃত বা অব্যবহৃত ব্যাংক কারো নিকট গচ্ছিত অথবা ব্যবসায়ী পণ্য হিসেবে কোন পাত্র ইত্যাদি আকারে থাকুক। মোটকথা যে অবস্থায়ই থাকুক অবশ্যই তার যাকাত আদায় করতে হবে। স্বর্ণ-রৌপ্য নিসাব পরিমাণ বা তার অধিক যে পরিমাণই থাকুক তার চল্লিশ ভাগের এক ভাগ হয় ঐ স্বর্ণ-রৌপ্য দ্বারা অথবা তার বাজার মূল্য দ্বারা যাকাত আদায় করতে হবে (হিদায়া, ১ম খণ্ড ও আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।
ইমাম আযম আবু হানীফা (র.) ও ইমাম আবূ ইউসুফ (র.)-এর মতে শুধু স্বর্ণ বা রৌপ্যের যাকাতের ক্ষেত্রে ওযনের হিসাবই ধর্তব্য হবে। ওযন হিসেবে নিসাব পরিমাণ কারও নিকট যদি কিছু পরিমাণ স্বর্ণ ও কিছু পরিমাণ রৌপ্য থাকে এবং এর কোন একটিও নিসাব পরিমাণ নয় সে ক্ষেত্রে উভয়টির সম্মিলিত মূল্য যদি রৌপ্যের অথবা স্বর্ণের কোন একটির নিসাব পরিমাণ হয় তাহলে যাকাত ওয়াজিব হবে। আর উভয়টির সম্মিলিত মূল্য যদি রৌপ্যের বা স্বর্ণের কোন একটির নিসাব পরিমাণ না হয় তাহলে যাকাত ওয়াজিব হবে না (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।
যাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে যখন কোন ব্যক্তি নিসাবের মালিক হবে তখন থেকে এক বছর অতিবাহিত হবার পর তাকে উক্ত মালের যাকাত আদায় করতে হবে। যদি বছরের মাঝে নিসাব পরিমাণ থেকে মাল কমে যায় তবুও তাকে এ বছরের যাকাত আদায় করতে হবে। বছরের মাঝে নিসাব পরিমাণ হতে মাল কমে যাওয়ার কারণে যাকাত রহিত হবে না (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।
অবশ্য বছরের মাঝখানে যদি তার সম্পূর্ণ মাল কোন কারণে নষ্ট হয়ে যায়, তবে পূর্বের হিসাব বাদ দিয়ে পুনরায় যখন নিসাবের মালিক হবে তখন হতে বছরের শুরু ধরতে হবে। এবং এ হিসেবে যাকাত আদায় করতে হবে (হিদায়া, ১ম খণ্ড)।
যদি কোন ব্যক্তির নিকট স্বর্ণ ও রৌপ্য উভয় ধাতব মিশ্রিত অলংকার বা অন্য কোন বস্তু থাকে এবং এর মধ্যে রৌপ্যের পরিমাণ বেশী হয় এমতাবস্থায় স্বর্ণ নিসাব পরিমাণ থাকলে স্বর্ণের উপর যাকাত ওয়াজিব হবে। আর যদি রৌপ্য নিসাব পরিমাণ হয় তাহলে এরও যাকাত আদায় করতে হবে। আর যদি এরূপ বস্তুতে রৌপ্যের চেয়ে স্বর্ণের পরিমাণ বেশী হয় তাহলে পুরোটাই স্বর্ণের হুকুমে ধর্তব্য হবে এবং সে হিসেব অনুযায়ী যাকাত আদায় করতে হবে (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।
যদি কারো নিকট কিছু পরিমাণ ব্যবসার মাল এবং কিছু পরিমাণ স্বর্ণ ও রৌপ্য থাকে এবং কোনটাই নিসাব পরিমাণ না হয় তবে এগুলোর মূল্য যদি রৌপ্য বা স্বর্ণের কোন একটির নিসাব পরিমাণ হয় তবে এতে যাকাত ওয়াজিব হবে (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০৯৬) যাকাতের নিসাব | (০৯৮) স্বর্ণ ও রৌপ্যের সাথে অন্য ধাতব পদার্থ মিশ্রিত হলে তার হুকুম |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |