কা'বা শরীফের চতুর্পাশ্বে অবস্থিত মসজিদকে মসজিদুল হারাম বলে। মক্কা শরীফে প্রবেশের পর পরই মসজিদুল হারামে উপস্থিত হওয়া মুস্তাহাব। যদি সাথে সাথে উপস্থিত হওয়া সম্ভব না হয় তবে মাল-সামান গোছিয়ে সর্বাগ্রে মসজিদে উপস্থিত হওয়া বাঞ্ছনীয়। বাবুস্ সালাম দিয়ে মসজিদুল হারামে প্রবেশ করা মুস্তাহাব। কষ্ট না হলে মসজিদুল হারামে খালি পায়ে প্রবেশ করা ভাল। তালবিয়া পাঠ করতে করতে আল্লাহ্ তা'আলার পাক দরবারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন পূর্বক অত্যন্ত বিনয় ও নম্রতার সাথে মসজিদুল হারামে প্রবেশ করবে এবং প্রথমে ডান পা রেখে এই দু'আ পাঠ করবে:
بِسْمِ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ اللَّهُمَّ افْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ وَ ادْخِلْنِي فِيهَا اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِي مَقَامِي هَذَا أَنْ تُصَلَّى عَلَى سَيِّدِنَا مُحَمَّدٌ عَبْدُكَ وَ رَسُولُكَ وَ أَنْ تَرْحَمْنِي وَ تُقَبِّلُ عُشْرَتِي وَ تَغْفِرْ ذُنُوبِي وَ تَضَعُ عَنِي وَزْرِى
মসজিদুল হারামে প্রবেশের পর কা'বা শরীফ নযরে পড়তেই 'আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু' পাঠ করবে এবং কা'বা শরীফের দিকে তাকিয়ে এই দু'আ পড়বে:
السلام لا إِلهَ إِلَّا اللهُ وَاللهُ أَكْبَرُ، اللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلامُ وَمِنْكَ وَإِلَيْكَ يَرْجِعُ السَّلَامُ، حَيِّنَا رَبَّنَا بِالسَّلَامِ، اللَّهُمَّ فَرِّدْ بَيْتَكَ هَذَا تَعْظِيمًا وَتَشْرِيفًا وَمَهَابَةً، وَزِدْ مِنْ تَعْظِيمِهِ وَتَشْرِيفِهِ، مِنْ حَجَّهُ وَاعْتَمَرَ تَعْظِيمًا وَتَشْرِيفًا وَمَهَابَةً.
এরপর দরূদ শরীফ পাঠ করে যে কোন দু'আ করবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দু'আ হল আল্লাহর কাছে জান্নাত কামনা করা এবং জাহান্নাম হতে আশ্রয় প্রার্থনা করা।
এ সময় নিম্নের দু'আটি মুস্তাহাব।
اعُوذُ بِرَبِّ الْبَيْتِ مِنَ الدِّينِ وَ فَقْرِ وَ مِنْ ضَيْقِ الصَّدْرِ وَ عَذَابِ الْقَبْرِ
বায়তুল্লাহ্ শরীফ দৃষ্টিগোচর হওয়ার সময় দাঁড়িয়ে দু'আ করা মুস্তাহাব।
মসজিদুল হারামে প্রবেশের পর তাওয়াফ আদায়ের ইচ্ছা থাকলে তাহিয়্যাতুল মসজিদ পড়বে না। বরং দু'আর পর পরই তাওয়াফ আরম্ভ করবে। অবশ্য যদি তাওয়াফের কারণে ফরয নামায কাযা হওয়ার কিংবা মুস্তাহাব ওয়াক্ত চলে যাওয়ার অথবা জামা'আত বাদ পড়ার আশংকা হয় তবে তাওয়াফের পরিবর্তে তাহিয়্যাতুল মসজিদ পড়ে নেওয়া বাঞ্ছনীয়। তবে শর্ত হল, মাকরূহ ওয়াক্তে না হতে হবে। জানাযার নামায সুন্নাতে মু'আক্কাদা ও বিতরের নামায তাওয়াফে তাহিয়ার পূর্বে আদায় করবে এবং ইশরাক, তাহাজ্জুদ প্রভৃতি নামায তাওয়াফের পর আদায় করবে। মসজিদুল হারামে প্রবেশের পর নফল ই'তিকাফের নিয়্যত করা মুস্তাহাব। মসজিদুল হারামে তাওয়াফকারীদের জন্য নামাযীর সামনে দিয়ে পথ অতিক্রম করা জায়িয। তবে সিজদার জায়গা দিয়ে অতিক্রম না করা শর্ত (আলমগীরী, ১ম খণ্ড ও শামী, ২য় খণ্ড)।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(২২৬) মক্কা মুআযযমায় প্রবেশের আদাব ও দু'আ | (২২৮) হরমের সীমানা এবং সেখানে নিষিদ্ধ কাজসমূহ |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |