ইহরাম চার প্রকার:
ক্ষৌরকার্য এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পর সাবান দিয়ে উত্তমরূপে গোসল করা সুন্নাত। কোন কারণে গোসল করতে না পারলে ভালভাবে উযূ করে নিবে। হায়িয ও নিফাস ওয়ালী মহিলাও বালক নাবালিকের জন্যও গোসল করা মুস্তাহাব। এরপর সেলাই করা কাপড় খুলে সেলাইবিহীন একখানা চাদর পরিধান করবে এবং একখানা গায়ে দিবে। সাদা হওয়া মুস্তাহাব এবং তা নতুন হওয়া ভাল। নতুন কাপড়ের ব্যবস্থা করতে না পারলে পুরাতন কাপড় ধৌত করে তা পরিধান করলেও সুগন্ধি থাকলে তা ব্যবহার করবে। কিন্তু কাপড়ে এমন কোন সুগন্ধি লাগাবে না যার রং কাপড়ে স্পষ্টভাবে অবশিষ্ট থাকে। এরপর ইহরামের নিয়্যতে দুই রাক'আত নফল নামায আদায় করবে। প্রথম রাক'আতে সূরা ফাতিহার পর সূরা কাফিরুন এবং দ্বিতীয় রাক'আতে সূরা ফাতিহার পর সূরা ইখলাস পাঠ করা উত্তম। অবশ্য সূরা ফাতিহার পর অন্য যে কোন সূরা পাঠ করলেও চলবে।
এই নামায মাকরূহ ওয়াক্তে আদায় করবে না। সালামান্তে কিল্লামূখী অবস্থায় বসে বসেই মাথা উন্মুক্ত করে নিয়্যত করবে। যদি হজ্জের ইহরাম হয় তবে এভাবে নিয়্যত করবে:
اللَّهُمَّ إِنِّي أُرِيدُ الْحَجَّ فَيَسِّرْهُ لِي وَ تَقَبَّلَهُ مِنِّي
হে আল্লাহ্! আমি হজ্জ পালন করার নিয়্যত করছি। এ কাজ আমার জন্য সহজ করে দিন কবুল করুন।
যদি উমরার ইহরাম হয় তবে এভাবে নিয়্যত করবেঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي أُرِيدُ الْعُمْرَةَ فَيَسِّرْهَا لِي وَ تَقَبَّلَهَا مِنِّي
হে আল্লাহ্! আমি উমরা আদয়ের নিয়্যত করছি। এ কাজ আমার জন্য সহজ করে দিন এবং কবুল করুন।
যদি হজ্জ ও উমরার সম্মিলিত ইহরাম হয় তবে এভাবে নিয়্যত করবেঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي أُرِيدُ الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ فَيَسِّرْهَا لِي وَتَقَبَّلْهَا مِنِّي
হে আল্লাহ্! আমি হজ্জ ও উমরা পালন করার নিয়্যত করছি। এই দু'টির কাজ আমার জন্য সহজ করে দিন এবং কবুল করুন।
যদি আরবী মনে না থাকে তবে বাংলায় নিয়্যত করলেও জায়িয হবে। এর পর উচ্চস্বরে তিনবার তালবিয়া পাঠ করবে:
لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ لَبَّيْكَ لَا شَرِيكَ لَكَ لَبَّيْكَ إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ لَا شَرِيكَ لَكَ
আমি উপস্থিত হে আল্লাহ্! আমি উপস্থিত আমি উপস্থিত। তোমার কোন শরীফ নেই আমি উপস্থিত। নিশ্চয়ই সকল প্রশংসা ও নিয়ামত তোমার এবং রাজত্বও তোমারই। তোমার কোন শরীক নেই।
তালবিয়ার এ শব্দসমূহ থেকে কিছু কমানো যাবে না তবে বাড়ানো যাবে এবং তা উত্তম বলে বিবেচিত হবে। বাড়িয়ে এভাবেও বলা যায়:
لَبَّيْكَ إِلهُ الْخَلْقِ لَبَّيْكَ لَبَّيْكَ غَفَّارُ الذُّنُوبِ لَبَّيْكَ وَ سَعَدَيْكَ وَ الْخَيْرُ كُلُّهُ بِيَدِيْكَ وَ الرَّغْبَاءُ إِلَيْكَ
এরপর রাসূলুল্লাহ্ (সা.)-এর প্রতি অনুচ্চস্বরে দরূদ শরীফ পাঠ করবে এবং আল্লাহ্ পাকের দরবারে দু'আ করবে। তালবিয়া পাঠ করার পর নিম্নের দু'আটি পাঠ করা মুস্তাহাবঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ رِضَاكَ وَ الْجَنَّةَ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ عَضَبِكَ وَ النَّارِ
হে আল্লাহ্! আমি তোমার নিকট তোমার সন্তুষ্টি ও জান্নাত চাই এবং তোমার ক্রোধ ও জাহান্নাম হতে পানাহ চাই।
নিয়্যত ও তালাবিয়া পাঠ করার পর ইহরাম বাঁধার কাজ সমাপ্ত হয়ে যায়। এরপর হতে ইহরামের অবস্থায় সে সব কাজ নিষিদ্ধ তা বর্জন করে চলতে হবে (আলমগীরী, ১ম খণ্ড) ও হিদায়া, ১ম খণ্ড)।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(২০৭) ইহরাম | (২০৯) ইহরাম বাঁধার জন্য উত্তম স্থান |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |