হজ্জে তামাত্তুর জন্য মীকাত হতে উমরার ইহরাম বাঁধা শর্ত নয়। কেউ যদি মীকাত অতিক্রম করে অথবা মক্কায় শরীফে পৌছে উমরার ইহরামে বাঁধে তবে তামাত্তু সহীহ্ হবে। কিন্তু বিনা ইহরামে মীকাত অতিক্রম করার কারণে দম ওয়াজিব হবে। কেননা বিনা ইহরামে মীকাত অতিক্রম করা নিষিদ্ধ।
এমনিভাবে তামাত্তু পালকারীর জন্য হরম হতে হজ্জের ইহরাম বাঁধা শর্ত নয়। কেউ যদি হিল্ল অথবা আরাফা হতে হজ্জের ইহরাম বাধে তাহলেও তামাকু সহীহ্ হবে। কিন্তু এমতাবস্থায় ও দম ওয়াজিব হবে। কেননা যারা মক্কায় মুকাররমা হতে হজ্জের ইহরাম বাঁধবে তাদের মীকাত হচ্ছে হরম। বিনা ইহরামে মীকাত অতিক্রম করলে দম অথবা পুনরায় মীকাতে এসে ইহরাম বাঁধা ওয়াজিব হবে। তামাত্তু সহীহ্ হওয়ার জন্য হজ্জের মাস সমূহে উমরার ইহরাম বাঁধা শর্ত নয়। বরং উমরার অধিকাংশ তাওয়াফ হজ্জে মাসসমূহে সম্পাদন করা শর্ত। ইহরাম আগে বাঁধাতে কোন ক্ষতি নেই।
তামাত্তু হজ্জের জন্য নিয়্যত করা শর্ত নয়। বরং নিয়্যত ছাড়াই কেউ যদি তামাত্তুর শর্ত মুতাবিক হজ্জের মাসসমূহে হজ্জ ও উমরা সম্পন্ন করে তবে তার তামাত্তু সহীহ হয়ে যাবে। তামাত্তু পালন কারীর জন্য কারিনের ন্যায় দমে তামাকু ওয়াজিব।
১০ যিলহজ্জ জুমরাতুল উখরায় রমী করার পর দমে তামাত্তু আদায় করবে। যদি কেউ দম দিতে সক্ষম না হয় তবে দশটি রোযা রাখবে। কিরানের বর্ণনায় এবং বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে।
তামাত্তু পালনকারীর জন্য কুরবানীর পশু সাথে করে নিয়ে যাওয়া উত্তম। যদি কুরবানীর পশু সাথে করে নিয়ে যাওয়া ইচ্ছা থাকে তাহলে প্রথমে উমরার ইহরাম বেঁধে এরপর কুরবানীর পশু হাঁকিয়ে নিয়ে যেতে হবে। যদি কুবানীর পশু গরু বা উট হয় তবে এর গলায় মালা বা হার পরাতে হবে। অর্থাৎ চামড়া টুকরা অথবা গাছের ছাল ইত্যাদি রশিতে বেধে পশুর গলায় ঝুলিয়ে দেবে।
কুরবানী পশু সঙ্গে আনয়নকারী ব্যক্তি উমরা শেষ করে মাথা মণ্ডন করবে না বরং ইহরামের হালতে অবস্থান করবে এবং ইহরামের নিষিদ্ধ কাজ সমুহ থেকে বিরত থাকবে। সে অবস্থায় যদি ইহরামের নিষিদ্ধ কাজ সমূহের কোন কিছু করে বসে তার তাকে মাস'আলা অনুযায়ী ক্ষতিপুরণ দিতে হবে।
সেই ব্যক্তি ১০ই যিলহজ্জ রমী করার পর কুরবানী পশু যবাহ্ করবে। এরপর মাথা মুণ্ডন বা চুল ছোট করে উমরা ও হজ্জ উভয় ইহরাম থেকে হালাল হয়ে যাবে। তামাত্তু পালনকারী উমরার আদায় করার পর হালাল হয়ে গেলে সে হজ্জের পূর্বে আরো উমরা করতে পারবে। তামাত্তু পালনকারী হজ্জে ইহরাম হরম এলাকার যে কোন স্থান থেকে বাঁধতে পারবে। অবশ্য মসজিদে হারাম হতে ইহরাম বাঁধা উত্তম।
তামাত্তু পালনকারী ৮ই যিলহজ্জ হজ্জের ইহরাম বেধে তাওয়াফে যিয়ারতের পূর্বে হজ্জের সায়ী করতে চাইলে, রমল ও ইযতিবা সহ একটি নফল তাওয়াফ সম্পন্ন করে সায়ী করে নিবে। এমতাবস্থায় পরে আর কোন সায়ী করতে হবে না। অন্যথায় তাওয়াফে যিয়ারতের পর সায়ী করবে। তামাত্তু আদায়কারীর উপর তাওয়াফে কুদূম ওয়াজিব নয়। উমরা আদায় করার পর যত বেশী সম্ভব নফল তাওয়াফ করতে থাকবে (মু'আল্লিমুল হুজ্জাজ)।
মুতামাত্তি এবং কারিনের উপর দমে তামাত্তু এবং দমে কিরান ওয়াজিব। কুরবানী করার দ্বারা এ দম আদায় হবে না (শামী, ২য় খণ্ড)।
উপমহাদেশের হাজী সাহেবান যারা তামাত্তু হজ্জ আদায় করে তাদের অধিকাংশই কুরবানীর পশু সাথে করে আনে না তাই তাদের ক্ষেত্রে ঐ মুতামাত্তির বিধি-বিধানই প্রযোজ্য হবে। তাই বিষয়টির প্রতি খুব খিয়াল রাখতে হবে।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(১৯৫) হজ্জে তামাত্তু আদায়কারীর প্রকারভেদ | (১৯৭) এক নযরে হজ্জে তামাত্তু (যদি দমে তামাত্তু সাথে না থাকে) |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |