হজ্জ ফরয। এর ফরযিয়্যত অকাট্য দলীল দ্বারা প্রমাণিত। কেউ যদি তা অস্বীকার করে তবে সে কাফির বলে গণ্য হবে। জীবনে একবার হজ্জ করা যার উপর ফরয, যে বছর হজ্জ ফরয হয় ঐ বছরই তা আদায় করা ফরয। কোন ওযর না থাকলে ঐ বছরই আদায় করতে হবে। বিনা ওযরে বিলম্ব করা জায়িয নয়। অবশ্য হজ্জ না করে মারা গেলে তার যিম্মায় হজ্জ আদায় করা বাকী থেকে যাবে (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।
যদি পিতামাতা-ব্যতীত ছোট শিশুকে দেখার মত কেউ না থাকে তাহলে পিতামাতা এই কারণে হজ্জ আদায়ে বিলম্ব করতে পারেন। শিশুর স্বাস্থ্য ভাল থাকুক বা খারাপ থাকুক উভয় অবস্থাতেই এ হুকুম প্রযোজ্য হবে। যদি কোন ব্যক্তির উপর হজ্জ ফরয হয় কিন্তু শরী'আত সম্মত কোন ওযর দেখা দেয় সেক্ষেত্রে তার জন্য বিলম্ব করা জায়িয রয়েছে।
ছেলে যদি সুশ্রী হয় এবং এ কারণে ফিত্নার আশংকা থাকে তাহলে তার দাড়ি গোঁফ না গজানো পর্যন্ত মাতাপিতা তাকে হজ্জ পালন হতে বিরত রাখতে পারবে। মহিলাদের জন্য স্বামী অথবা মাহ্রাম না থাকাও ওযর হিসেবে গণ্য। রাস্তা নিরাপদ না হওয়ায় ওযর। মহিলাদের ক্ষেত্রে ইদ্দত পালনের অবস্থায় থাকাও ওযর। উপরোক্ত ওযর সমূহের কারণে বিলম্বে হজ্জ আদায় করা তাদের জন্য জায়িয হবে। যদি কারো যিম্মায় হজ্জ ফরয এবং তার পিতামাতা অসুস্থতা অথবা বার্ধক্য জনিত কারণে তার খিদমতের মুখাপেক্ষী হয়ে পড়ে তবে সে ক্ষেত্রে তাঁদের অনুমতি ছাড়া সন্তানের হজ্জে গমন করা মাকরূহ। আর যদি খিদমতের প্রয়োজন না থাকে তাদের অনুমতি ছাড়া হজ্জে গমন করাতে কোন দোষ নেই।
পিতামাতার অবর্তমানে দাদাদাদীর ক্ষেত্রেও এ হুকুম প্রযোজ্য হবে। নফল হজ্জের ক্ষেত্রে মাতাপিতার অনুমতি ছাড়া হজ্জে গমন করা সর্ববস্থায় মারূহ। রাস্তা নিরাপদ হোক বা না হোক এবং তাদের খিদমতের প্রয়োজন থাকুক বা না থাকুক সর্বাবস্থায় এ হুকুম প্রযোজ্য হবে। যদি কারো স্ত্রী, ছেলেমেয়ে এবং যাদের খোরপোষ তার দায়িত্বে তারা যদি হজ্জে যাওয়ার ব্যাপারে নারাজ থাকে এবং তাদের ক্ষতির কোন আশংকা না থাকে তবে হজ্জে যাওয়াতে কোন দোষ নেই। আর যাদের খোরপোষ তার দায়িত্ব নয় এরূপ লোকেরা হজ্জে যাওয়ার ব্যাপারে নারায থাকলে এবং হজ্জে গেলে ক্ষতির কোন আশংকা থাকলে এ অবস্থায় ও হজ্জে যাওয়াতে কোন দোষ নেই। ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির নিকট যদি এ পরিমাণ মাল থাকে যার দ্বারা সে ঋণ পরিশোধ করতে সক্ষম, এরূপ ব্যক্তি যদি ঋণ পরিশোধ না করে হজ্জে যেতে চায় তবে হজ্জে যাওয়া তার
জন্য মাকরূহ। কিন্তু ঋণদাতারা অনুমতি দিলে হজ্জে যাওয়া জায়িয হবে। কেউ যদি কর্জের যামিন হয় এবং ঋণদাতা ব্যক্তির অনুমতি সাপেক্ষে হয় তবে কর্জদাতা এবং যামিন ব্যক্তির অনুমতি ছাড়া সে হজ্জে যেতে পারবে না। আর যদি ঋণদাতা ব্যক্তির অনুমতি ছাড়া কেউ যামিন হয় তবে কর্যদাতা, ঋণদাতার অনুমতি ছাড়া ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি হজ্জে যেতে পারবে না। কিন্তু যামিনের অনুমতি অপরিহার্য নয় (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(১৮৪) হজ্জ ফরয হওয়ার পর গরীব হয়ে গেলে | (১৮৬) হজ্জের ফরয |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |