البهاية حركة نشأت سنة ٥١٢٦٠ / ١٨٤٤م تحت رعاية الإستعمار الروسي واليهودية العالمية والإستعمار الإنجيليزي بهدف إفساد العقيدة الإسلامية وتفكيك وحدة المسلمين وصرفهم عن قضاياهم الأساسية .
মুসলমানদের ইসলামী মৌলিক আকীদা বিশ্বাসকে ধ্বংস, তাদের ঐক্য ও সংহতি বিনষ্ট করার লক্ষ্যে এবং ইসলামের মৌলিক অনুশাসন থেকে তাদেরকে ফিরিয়ে রাখার জন্যে ১৮৪৪ খৃস্টাব্দে মোতাবেক ১২৬০ হিজরীতে বৃটিশ, ইয়াহুদী ও রাশিয়ার পৃষ্ঠপোষকতায় বাহায়ী আন্দোলনের আর্বিভাব ঘটে।
ইরানের মির্জা আলী মুহাম্মদ রেজা আশ্-শীরাজী নিজেকে (১২৩৫ হিঃ ১২৬৫ হিঃ) 'বাব' বলে উপস্থাপিত করেন। এজন্য তার ধর্মমতের অনুসারীগণকে 'বাবী' বলে আখ্যায়িত করা হয়। মির্জা হোসাইন আলী (১৮১৮ ইং-১৮৯২ ইং) নিজেকে 'বাহাউল্লাহ্' বা আল্লাহর জ্যোতি হওয়ার দাবী করে এক স্বতন্ত্র শরীয়াতদাতা হিসাবে তার স্থলাভিসিক্ত হন।
এ আন্দোলনকে 'বাহায়ী আন্দোলন' নাম করণ করেন এবং তার শরীয়াত গ্রন্থের নাম হল 'আল্ আকদাস' (الأقدس) ১৮৯২ খৃষ্টাব্দে পঁচাত্তর বছর বয়সে বাহা উল্লাহ্ ইন্তিকাল করেন। ( الموسوعة الميسرة في الأديان والمذاهب المعاصرة ৬২ পৃঃ)
উনিশ শতকের গোড়ার দিকে ইরানের মীর্জা আলী মুহাম্মদ ঘোষণা করলেন, বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত দিব্য-বার্তা বাহকের আগমন নিকটবর্তী। তিনি নিজেকে ইসলাম ধর্মে বর্ণিত 'ইমাম মাহদী' বলে উল্লেখ করে বলেন, আমি 'অবতার'। তিনি নিজেকে 'বাব' বলে উপস্থাপিত করেছিলেন বিধায় তার ধর্মমতের অনুসারীগণকে 'বাবী' বলা হয়।
আলী মুহাম্মদ তার রচিত পুস্তক 'আল-বয়ান' এ এবং অন্যত্র ঘোষণা করেন যে. আল-বয়ান ছাড়া অন্য কোন কিতাব পাঠ করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। যারা বাবী ধর্মগ্রহণ করবে না, তাদেরকে হত্যা করা হবে। এবং তাদের সমস্ত সম্পত্তি কেড়ে নেওয়া হবে। এ ভয়াবহ মতবাদ প্রচার করার কারণে তদানিন্তন সরকার আলী মুহাম্মদকে গ্রেফতার করেন।
বাব যখন বন্দী তখন তর শিষ্যরা খোরাশানের রাজধানী বাদিস্তে এক সভা আহ্বান করেন। ঐ সভায় উম্মে সালমা নাম্নী এর মহিলা ইসলামী শরী'আতের বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে এক নতুন শরী'আত ও ধর্ম প্রবর্তনের প্রস্তাব পেশ করে। মীর্যা হুসেন আলী নামক এক প্রভাবশালী সদস্যসহ আরও কতিপয় ব্যক্তি এ প্রস্তাব সমর্থন করেন। পরিশেষে প্রস্তাবটি জেলখানায় আলী মুহাম্মদের অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করা হলে, তিনিও তাতে সম্মতি প্রদান করেন। বাব পন্থীরা সেই থেকে ইসলামের সংগে সম্পর্কচ্ছেদ করে সম্পূর্ণরূপে এক নব ধর্মের গোড়াপত্তন করেন।
রাষ্ট্রদ্রোহিতা এবং ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের অপরাধে মাত্র ত্রিশ বছর বয়সে ১৮৫০ ইং সালের ৯ জুলাই পারস্যের অন্তর্গত তাব্রিজের সেনানিবাসে আলী মুহাম্মদ বাবকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। এরপর ইয়াহহিয়া নামক এক ব্যক্তি 'সোবহে আজল' খেতাবে গ্রহণ করে বাবীদের নেতৃত্ব গ্রহণ করে। ১৮৫২ইং সালে একদল বাবী তাদের ধর্মগুরুর হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণের উদ্দেশ্যে তৎকালীন পারস্য রাজ্যের উপর ব্যর্থ হামলা করে। ফলে উম্মে সালমা সহ আরও কতিপয় ব্যক্তিকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করা হয়। উলামা সম্প্রদায় এবং সরকারের কোপ দৃষ্টিতে পতিত হওয়ায় পারস্যে অবস্থান করা বাবীদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ে। ফলে হুসেন আলী এবং তাঁর বৈমাত্রেয় ভাই বাবী নেতা ইয়াহহিয়া সহ সকল বাৰপন্থীকে ৰাগদাদে গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করতে হয়।
এরপর হুসেন আলী ১৮৬৩ ইং সালে নিজেই এক স্বতন্ত্র শরী'আতদাতা হওয়ার দাবী করে। সে নিজেকে বাহা উল্লাহ্ নামে অভিহিত করেন। হুসেন আলী ওরফে বাহা উল্লাহ্ তার রচিত শরী'আত গ্রন্থের নামকরণ করেন 'কিতাব-ই আকদাস'। বাহা উল্লাহর মৃত্যুর পর তদীয় সন্তান আব্বাস আফিন্দী পিতার এ মতাদর্শ প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন এবং আবদুল বাহা নামে পরিচিত হন। অপর দিকে বাহার নেতৃত্বে স্বীকার না করার ফলে সৃষ্টি হল দু'টি দলের। মৃত্যুর পূর্বেই আবদুল বাহা তার জ্যেষ্ঠ দৌহিদ্র্য শৌকী আফেন্দীকে ধর্মের অভিভাবকের দায়িত্ব দিয়ে যান। শৌকী আফেন্দী বাহায়ী ধর্ম বিস্তারে ও প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। (বাহাই একটি ভ্রান্ত ধর্মঃ মুহামদ আবুল কাসেম ভূঁঞা, ৯-১১পৃষ্ঠা)
বাহা উল্লাহর জীবিত অবস্থায়ই ১৮৭২ ইং সালে বাংলাদেশে বাহাইদের আগমন ঘটে। এ দেশে প্রথম আগত বাহাই সুলেমান খান ওরফে জামাল এফেন্দী। বাংগালী বাহাই সম্ভবত আলীমুদ্দীন। চট্টগ্রামের এই আলীমুদ্দীন রেংগুনে বাহাই ধর্ম গ্রহণ করে। বাংলাদেশে প্রথম স্থানীয় আধ্যাত্মিক পরিষদ গঠিত হয় ঢাকায় ১৯৫২ সালে। বর্তমানে দেশের প্রায় সব ক'টি জিলা সদরে স্থানীয় 'আধ্যাত্মিক পরিষদ' আছে বলে তারা দাবী করে।
বাংলাদেশে বাহাইদের প্রধান অফিস হল রাজধানী ঢাকার শান্তিনগরে সার্কিট হাউস রোডে বাহাইদের ভাষায় একে বলা হয় 'জাতীয় বাহাই হাজীরাতুল কুদ্স্'।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(০৩৯) কাদিয়ানীদের ধ্যান ধারনা ও বাতিল আকীদা | (০৪১) বাহাইদের আকীদা |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |