ইয়াযীদ বাহিনীর মনোভাব এত জঘন্য রূপ ধারণ করল যে, তারা হযরত ইমাম হুসাইন (রাঃ) ও তাঁর প্রিয়জনদের জন্য ফোরাত নদীর পানি বন্ধ করে দিল। প্রায় চার হাজার সৈন্য ফোরাত নদীর তীরে এই কাজে নিয়োজিত করলো। এদের মধ্যে দুই হাজার ছিল ‘স্থল বাহিনী’ আর দুই হাজার ছিল ‘অশ্বারোহী’। তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল উনাদেরকে যেন এক ফোঁটা পানিও নিতে দেয়া না হয়। সে মতে পানি বন্ধ করে দিল। ইমাম হুসাইন (রাঃ) এর তিরাশিজন কাফেলার মধ্যে দুগ্ধপোষ্য শিশু ছিলেন এবং পর্দানশীন মহিলারাও ছিলেন। তাঁদের মোকাবিলা করার জন্য বাইশ হাজার সৈন্য এসেছে। কী আশ্চর্য! তিরাশিজনের মোকাবিলায় বাইশ হাজার সৈন্য! আবার এই তিরাশিজনের মধ্যে শিশু ও মহিলা রয়েছে। অথচ এদের মোকাবিলায় যে বাইশ হাজার সৈন্য তারা সবাই যুবক এবং সকল প্রকারের অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত । এরপরও তারা পানি বন্ধ করে দিল। কারণ, তাদের ধারণা হল যে, উনারা যদি পানি পান করে যুদ্ধ করে, তাহলে সম্ভবতঃ আমরা বাইশ হাজার হয়েও কামিয়াব হতে পারবো না। তাই পানি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এটা জুলুমের উপর জুলুম ছিল। আফসুস! উনার জন্যেই পানি বন্ধ করে দিল, যিনি সাকিয়ে কাওছার, (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আদরের দৌহিত্র । কোন এক উর্দু কবি এ প্রসঙ্গে খুবই সুন্দর একটি কবিতা লিখেছেন যার বাংলা অর্থ
হাকিমের নির্দেশ ছিল , মানুষ, জীব-জন্তু, বিধর্মী, গরু-ছাগল, পশু-পাখি সবাই এই ফোরাত নদীর পানি পান করবে, তোমরা বাধা দিও না।
কিন্তু হযরত ফাতিমাতুয্ যাহরা (রাঃ)-এর এই ছেলে হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালামকে পানি পান করতে দিও না।
যেই ফোরাত নদীর পানি সবারই পান করার অনুমতি ছিল, জীব-জন্তু, পশু-পাখি কারো জন্য বাধা ছিল না। কিন্তু সেই ‘ফোরাত নদীর’ পানি পান করা থেকে বাধা দিল সাকিয়ে কাওছার (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর প্রিয় দৌহিত্রকে।
পূর্ববর্তী পেইজ | পরবর্তী পেইজ |
(১০) কারবালা প্রান্তরে ইমাম হুসাইন (রাঃ) | (১২) ইমাম হুসাইন (রাঃ) এর আকুল আহবান |
সূচীপত্র | এরকম আরো পেইজ |