যে ব্যক্তি সাড়ে ৫২ তোলা রুপা, অথবা সাড়ে ৭ তোলা সোনার কিংবা তৎমূল্যের টাকার মালিক হয় এবং তাহার নিকত ঐ পরিমান মাল পূর্ন এক বৎসরকাল স্থায়ী থাকে, তাহার উপর যাকাত ফরয হয় । ইহা অপেক্ষা কম হইলে যাকাত ফরয নহে । ইহা অপেক্ষা বেশী হইলেও যাকাত ফরয হইবে । এই মালকে 'নেছাব' বলে এবং যে এই পরিমান মালের মালিক হয়, তাহাকে 'মালেকে নেছাব' বা 'ছাহেবে নেছাব' বলা হয় ।
যদি কাহারো নিকট সাড়ে ৭ তোলা সোনা বা সাড়ে ৫২ তোলা রুপা ৪/৫ মাস থাকে, তারপর কম হইয়া যায় এবং ২/৩ মাস কম থাকে, তারপর আবার নেছাব পূর্ন হইয়া যায়, তবে তাহার যাকাত দিতে হইবে । মোটকথা, বৎসরের শেষেও মালেকে নেছাব হয়, মাঝখানে কিছু কম হইয়া যায়, তবে বৎসরের শেষে তাহার নিকট যত টাকা থাকিবে, তাহার যাকাত দিতে হইবে । অবশ্য বৎসরের মাঝখানে যদি তাহার সম্পূর্ন মাল কোন কারনে নষ্ট হইয়া যায়, তবে পূর্বের হিসাব বাদ দিয়া পুনরায় যখন নেছাবের মালিক হইবে, তখন হইতে হিসাব ধরিতে হইবে, তখন হইতেই বৎসরের শুরু ধরা হইবে ।
কাহারো নিকট ৮/৯ তোলা সোনা ছিল, কিন্তু পূর্ন বৎসর শেষ হওয়ার পূর্বেই তাহা তাহার হাত ছাড়া হইল, (চুরি হইয়া গেল বা হারাইয়া গেল, বা দান করিয়া ফেলিল) এমতাবস্থায় তাহার উপর যাকাত ওয়াজিব হইবে না ।
(নেসাব পরিমাণ সম্পদের মূল্য ১০০ টাকা ধরিয়া) কাহারো নিকট ২০০ টাকা আছে, কিন্তু আবার ২০০ টাকা কর্যও আছে, এমতাবস্থায় ঐ ব্যক্তির উপর যাকাত ওয়াজিব হইবে না; পূর্ন বৎসর থাকুক বা না থাকুক । আর যদি ১৫০ টাকাও কর্য হয়, তবুও যাকাত ওয়াজিব হইবে না । কেননা ১৫০ টাকা বাদ দিলে মাত্র ৫০ টাকা থাকে । ৫০ টাকায় নেছাব পুরা হয় না । কাজেই যাকাত ওয়াজিব হইবে না ।
(নেসাব পরিমাণ সম্পদের মূল্য ১০০ টাকা ধরিয়া) যদি কাহারো নিকট ২০০ টাকা থাকে এবং ১০০ টাকার কর্য থাকে, তবে ১০০ টাকার যাকাত দিতে হবে ।
সোনা এবং রুপা যে কোন অবস্থায় থাকুক না কেন, মাটির নিচে পোঁতা থাকুক, কারবারের মধ্যে থাকুক (নোটের পরিবর্তে) গভর্নমেন্টের যিম্মায় বা অন্য কাহারো নিকট কর্য হিসাবে থাকুক, যেওর আকারে থাকুক এবং উহা ব্যবহারে থাকুক বা আজীবন বাক্সে তোলা থাকুক, কাপড়ে, টুপিতে, তলোয়ারে বা জুতায় কারুকার্যরুপে থাকুক, সব অবস্থায়ই নেছাব পরিমান পূর্ন হইলে এবং এক বৎসরকাল মালিকের অধিকারে থাকিলে তাহাতে যাকাত ফরয হইবে; (অবশ্য যদি নেছাব পরিমান না হয়, বা পূর্ন এক বৎসরকাল মালিকের নিকট না থাকে, তবে যাকাত ফরজ হইবে না । সোনা ও রুপা ব্যতিরেকে অন্য কোন ধাতুতে তেজারত না করা পর্যন্ত উহাতে যাকাত ফরয হইবে না)
সোনা ও রুপা যদি খাঁটি না হয় অন্য কোণ ধাতু তাহাতে মিশ্রিত থাকে (মুদ্রা হউক, জেওর হউক বা অন্য বস্ত হউক) তবে দেখিতে হইবে যে, বেশীর ভাগ সোনা বা রুপা কিনা ? যদি বেশীর ভাগ সোনা বা রুপা হয়, তবে সম্পূর্ন রুপা বা সোনা ধরিয়া হইতে হইবে এবং নেছাব পরিমান পূর্ন হইলে হিসাব করিয়া তাহার যাকাত দিতে হইবে । আর যইদ সোনার বা রুপার ভাগ কম হয় অন্য ধাতু (রাং বা দস্তা ইত্যাদি) বেশি হয়, তবে তাহাতে শুধু নেছাব পরিমান হইলে যাকাত ওয়াজিব হইবে না, অবশ্য এই মাল দ্বারা তেজারত করিলে, তেজারতের হিসাবে যাকাত দিতে হইবে ।
যদি কিছু সোনা এবং কিছু রুপা থাকে, কিন্তু পৃথকভাবে সোনারো নেছাবও পূর্ন হয় না, রুপার নেছাবও পূর্ন হয় না, তবে উভয়ের মূল্য যোগ করিলে যদি নেছাব পরিমান অর্থাৎ সাড়ে ৫২ তোলা রুপা বা সাড়ে ৭ তোলা সোনার মূল্যের সমান হয়, তবে যাকাত ফরজ হইবে; নতুবা যাকাত ফরজ হইবে না । আর যদি উভয়টার নেছাব পূর্ন থাকে, তবে মূল্য ধরিয়া যোগ করার আবশ্যক নাই
ধরুন ২৫ টাকায় এক ভরি সোনা পাওয়া যায়, আর এক টাকায় দেড় তোলা চাঁদি পাওয়া যায় । এখন কাহারো নিকট দুই ভরি সোনা এবং পাঁচটি টাকা বেশী আছে এবং পূর্ন এক বৎসর তাহার কাছে আছে । এখন তাহার উপর যাকাত ফরজ হইবে । কেননা, দুই ভরি সোনা ৫০ টাকা; ৫০ টাকায় ৭৫ চাঁদি কিনিলে ৭৫ তোলা হইল । দুই ভরি স্বর্ণ দিয়া চাঁদি কিনিলে ৭৫ তোলা হইবে আরও পাঁচ টাকা মৌজুদ আছে । এই হিসাবে যাকাতের নেছাবের চেয়ে মাল অনেক বেশী হইল । অবশ্য যদি শুধু দুই তোলা সোনা থাকে উহার সহিত কোন চাঁদি বা টাকা না থাকে, তবে যাকাত ফরয হইবে না ।
যদি কাহারো নিকট ত্রিশ টাকা এক বৎসর কাল থাকে এবং ঐ সময় রুপার ভরি ||0 বিক্রয় হয় এবং ত্রিশ টাকায় ৬০ ভরি রুপা পাওয়া যায়, তবুও তাহার উপর যাকাত ফরজ হইবে না । কেননা, তাহার নিকট ত্রিশ টাকার মধ্যে ৩০ ভরি রুপাই আছে, যদিও উহার মূল্য ৬০ ভরি রুপা হয়; (অবশ্য ৬০ ভরি রুপা থাকিলে যাকাত ফরজ হইবে, যদিও তাহার মূল্য ৩০ টাকা হয়।) কিন্তু শুধু সোনা বা শুধু রুপা থাকিলে তাহার মূল্যের হিসাব ধরা হয় না; ওজনের হিসাবই ধরা হয় ।
(নেসাব পরিমাণ সম্পদের মূল্য ১০০ টাকা ধরিয়া) কেহ ১৬ই রজব তারিখে (হাজাতে আছলিয়া বাদে এবং করজ বাদে) ১০০ টাকার মালিক হইল এবং রমযানে আরও ২০ টাকা লাভ পাইল, তারপর রবিয়ল আউয়ালে আরও ৩০ টাকা লাভ পাইয়া মোট ৫০ টাকা বাড়িল । এখন পর বৎসর ১৫ই রজব তারিখে হিসাব করিয়া দেখে যে (করজ ও হাজাতে আছলিয়া বাদে) তাহার মোট ১৫০ টাকা আছে । এইরূপ হইলে ১৫ই রজব তারিখে তাহার উপর ১৫০টাকারই যাকাত ফরয হইবে । ইহা বলা চলিবে না যে, পরে ৫০ টাকা লাভ করিয়াছে তাহার ত পূর্ন এক বৎসর যায় নাই । কেননা বৎসরের মাঝখানের কম বা বেশির হিসাব ধরা হয় না; হিসাব ধরা হয় বৎসরের শুরু ও শেষের ।
কেহ ১৫ই শওয়াল তারিখে মাত্র ১০০ তোলা রুপার মালিক ছিল ( হাযাতে আছলিয়া এবং করয বাদে ) তারপর বৎসরের মাঝখানে ২/৪ তোলা বা ৯/১০ তোলা সোনারও সে মালিক হইল, এইরূপ অবস্থা হইলে বৎসর যখন পূর্ণ হইবে অর্থাৎ পর বৎসর ১৪ শওয়াল তারিখে তাহার সোনা এবং রূপা উভয়েরই যাকাত দিতে হইবে । এ বলা যাইবে না যে, সোনার উপর এক বৎসর পূর্ণ হয় নাই। কারন, রুপার সঙ্গে সঙ্গে সোনার বৎসরও পূর্ণ ধরিতে হইবে ।
সোনা বা রুপা ব্যতিরেকে অন্য যত ধাতু আছে যেমন, লোহা, তামা, পিতল, কাঁসা, রাং ইত্যাদি, অথবা কাপড়, জুতা, চিনাবাসন, কাঁচের বরতন ইত্যাদি যত আসবাব-পত্র আছে তাহার হুকুম এই যে, যদি এইগুলির কেনা-বেচার ব্যবসা করে, তবে নেছাব পরিমাণ হইলে বৎসর কাল হইলে স্থায়ী হইলে তাহার যাকাত দিতে হইবে; নতুন ব্যবসা না করিয়া শুধু ঘরে রাখা থাকিলে, এইসব আসবাবপত্রের মুল্য হাজার টাকা হইলেও তাহার উপর যাকাত ফরয হইবে না ।
ডেগ, ছিউনি ( খাঞ্জা ) লগন, বরতন ইত্যাদি, কোঠাঘর ইত্যাদি, বারী, জমীন, কাপড়, শাড়ী, জুতা ইত্যাদি এবং মনিমুক্তার মুল্যবান হার; ফলকথা এই যে, সোনা এবং রুপা ব্যতিরেকে অন্য যত জিনিস আছে তাহা দৈনন্দিন ব্যবহারে আসুক বা শুধু ঘরে থাকুক, যে পর্যন্ত তাহার কেনা-বেচা এবং ব্যবসা করা না হইবে, সে পর্যন্ত তাহাতে যাকাত নাই । অবশ্য এই সব জিনিসের তেজারত করিলে হিসাব করিয়া তাহার যাকাত দিতে হইবে । ( পক্ষান্তরে সোনা এবং রুপা শুধু সিন্দুকে রাখা থাকিলে বা মাটির নিচে পুতিয়া রাখিলেও তাহার যাকাত দিতে হইবে। )
কাহারও নিকট যদি দশ পাঁচটা বাড়ী থাকে এবং তাহা ভাড়ার উপর দেয়, অথবা চার পাঁচশত টাকার বাসন কিনিয়া তাহা ভাড়া দেয় ( অথবা চার পাঁচ হাজার টাকার মোটর বা নৌকা কিনিয়া তাহা ভাড়া দেয় বা নিজের কারবার চালায় ) তবে ঐসব মালের উপর যাকাত নাই । মোটকথা, ভাড়ার উপর হাজার হাজার টাকার গাড়ী ঘোড়া চালাইলেও তাহার উপর যাকাত নাই । অবশ্য ভাড়ার টাকা নেছাব পরিমাণ হইলে এবং বৎসর অতীত হইলে তাহার উপর যাকাত ফরয হইবে, অথবা এইসব জিনিসের কেনাবেচা করিলে এই সব জিনিসের উপরও যাকাত ফরয হইবে এবং মুল্য হিসাব করিয়া যাকাত দিতে হইবে ।
পরিধানের কাপড় বা জুতা যতই ঘরে থাকুক না কেন এবং যতই মুল্যবান হউক না কেন তাহাতে যাকাত নাই, কিন্তু যদি তাহাতে খাঁটি সোনা বা রুপার কারুকার্য থাকে, তবে সোনা বা রুপার পরিমাণ নেছাব পরিমাণ পৌঁছাইলে ( অন্য সোনা রুপা থাকিলে তাহার সহিত মিলাইয়া বা পৃথক ভাবে ) তাহার যাকাত দিতে হইবে । অন্যথায় যাকাত দিতে হইবে না ।
কাহারও নিকট যদি কিছু পরিমাণ সোনা বা রুপার জেওর থাকে এবং কিছু পরিমাণ তেজারতের মালও থাকে ( কাপড়, জুতা, ধান, পাট হইলেও ) সবের মুল্য যোগ করিলে যদি ৫২।।০ তোলা রুপা বা ৭।।০ তোলা সোনার সমান হয়, তবে যাকাত ফরয হইবে, কম হইলে ফরয হইবে না ।
( নিজের জমির পাট বা ধান এক বৎসর কাল ঘরে জমা করিয়া রাখিলে তাহার যাকাত দিতে হইবে না । শাদী বিবাহের জন্য, যিয়াফতের জন্য, নিজের বছরের খোরাকের জন্য চাউল গোলা করিয়া রাখিলেও যাকাত দিতে হইবে না ।) মোটকথা, ব্যবসার নিয়তে যে মাল খরিদ করিবে উহা তেজারতের মাল হইবে এবং তাহার উপর যাকাত ফরয হইবে । নিজ খরচ অথবা দানের নিয়তে খরিদ করিলে পরে যদি ব্যবসার নিয়ত করে, তবে ইহা তেজারতের মাল হইবে না ।
যদি কাহারও নিকট তোমার টাকা পাওনা থাকে, তবে পাওনা টাকার যাকাত দিতে হইবে । পাওনা টাকা তিন প্রকার। প্রথম প্রকার এই যে, হয়ত নগদ টাকা বা সোনা রুপা কাহাকেও ধার দিয়াছে। অথবা তেজারতের মাল বিক্রিয় করিয়াছে সে বাবত টাকা পাওনা হইয়াছে। এক বৎসর বা দুই তিন বৎসর পর টাকা উসুল হইল। এখন যত টাকায় যাকাত ওয়াজিব হয় পাওনা টাকা তত পরিমাণ হইলে অতীত বৎসর সমুহের যাকাত দেওয়া ওয়াজিব হইবে । যদি একত্রে উসুল না হয়, তবে যখন ১১ তোলা রুপার সমপরিমান টাকা উসুল হইবে তখন ঐ টাকারই যাকাত দিতে হইবে । যদি উহা হইতে কম উসুল হয়, তবে ওয়াজিব হইবে না । আবার যখন সেই পরিমান টাকা পাইবে, তখন ঐ পরিমাণ টাকার যাকাত দিবে । এইরূপ দিতেই থাকিবে । আর যদি পাওনা টাকা নেছাব হইতে কম হয়, তবে যাকাত ওয়াজিব হইবে না । অবশ্য তাহার কাছে যদি অন্যান্য সম্পত্তি থাকে যে উভয় মিলিয়া নেছাব পুরা হয়, তবে যাকাত ওয়াজব হইবে ।
দ্বিতীয় প্রকার যদি নগদ টাকা করয না দেয় বা তেজারতের মাল বিক্রয় না করে, তেজারতী বা অন্যান্য মাল বিক্রয় করিলে যেমন, পরিবার বস্ত্র, অন্যান্য সামগ্রী ইত্যাদি বিক্রয় করে এবং উহার দামও ঐ পরিমাণ বাকী আছে, যে যাকাত ওয়াজিব হয়, এই টাকা যদি কয়েক বৎসর পর উসুল হয়, তবে ঐ কয়েক বৎসরের যাকাত দেওয়া ওয়াজিব, আর যদি এক সঙ্গে উসুল না হয় বরং কিছু কিছু করিয়া উসুল হয়, তবে নেসাবে যাকাত পরিমাণ টাকা আদায় না হওয়া পর্যন্ত যাকাত ওয়াজিব হইবে না । যখন সেই পরিমাণ পাইবে তখন কয়েক বতসরের যাকাত দেওয়া ওয়াজিব হইবে ।
তৃতীয় প্রকার এই যে, স্বামীর নিকট মোহরের টাকা পাওনা ছিল । কয়েক বৎসর পর ঐ টাকা পাওয়া গেল। টাকা পাওয়ার পর হইতে যাকাত হিসাব করিতে হইবে। বিগত বৎসর সমুহের যাকাত ওয়াজিব হইবে না । ঐ টাকা পুরা এক বৎসর মজুদ থাকিলে যাকাত ওয়াজিব হইবে; অন্যথায় নহে ।
মালেকে নেছাব যদি পূর্ণ বৎসর অতিবাহিত হইবার ( হাওলানে হাওলের ) পূর্বেই যাকাত আদায় করিয়া দেয়, তবে তাহাও দুরুস্ত আছে। আর যদি কোন গরীব লোক মালেকে নেছাব না হওয়া স্বত্বেও কোথাও হইতে টাকা পাওয়ার আশায় আগেই যাকাত আদায় করিয়া দেয়, তবে যাকাত আদায় হইবে না । পরে যদি মাল পায়, তবে হাওলানে হাওলের পর হিসাব করিয়া তাহার যাকাত দিতে হইবে; পূর্বে যাহা দিয়াছে তাহা নফল ছদ্কা হইয়া যাইবে এবং তাহার সওয়াব পৃথক ভাবে পাইবে, উহাকে যাকাত রুপে গন্য করা যাইবে না ।
মালেকে নেছাব লোক যদি কয়েক বৎসরের যাকাত যদি এককালীন অগ্রীম দিয়া দেয়, তবে তাহাও দুরুস্ত আছে । কিন্তু যে কয়েক বৎসরের যাকাত অগ্রীম দিয়াছে তাহার মধ্যে কোন বৎসরের মাল যদি বাড়িয়া যায়, অর্থাৎ যত টাকা হিসাব করিয়া যাকাত দিয়াছে, মাল তাহা অপেক্ষা বেশী হয়, তবে যত টাকা বাড়িয়াছে তাহার যাকাত পুনরায় দিতে হইবে ।
(নেসাব পরিমাণ সম্পদের মূল্য ১০০ টাকা ধরিয়া) আমীনের নিকট ১০০ টাকা মজুদ আছে, আরও ১০০ টাকা অন্য কোন জায়গা হইতে পাইবার আশা পাওয়া গেল, এমতাবস্থায় বৎসর শেষ হইবার পূর্বেই আমীন হয়ত পূর্ণ ২০০ টাকা যাকাত দিয়া দিল, এইরূপ দেওয়া দুরুস্ত আছে । কিন্তু ঘটনাক্রমে যদি বৎসর শেষে মাল নেছাব হইতে কম হইয়ায় যায়, তবে যাকাত মাফ হইয়া যাইবে এবং যাহা পূর্বে দেওয়া হইয়াছে তাহা নফল ছদ্কা হইয়া যাইবে ।
কাহারও মালের উপর পূর্ণ এক বৎসর শেষ হইয়া গেল অথচ এখনও যাকাত দেয় নাই, এমন সময় তাহার মাল চুরি হইয়া গেল বা অন্য কোন প্রকারে যেমন বাড়ী পুরিয়া বা নৌকা ডুবিয়া তাহার সমস্ত মাল নষ্ট হইয়া গেল , এইরূপ অবস্থা হইলে তাহার যাকাত দিতে হইবে না । কিন্তু যদি নিজে ইচ্ছা করিয়া মাল নষ্ট করিয়া ফেলে বা কাহাকেও দিয়া ফেলে, তবে যাকাত মা’ফ হইবে না ।
বৎসর পুরা হইবার পর অর্থাৎ, যাকাত ওয়াজিব হওয়ার পর যদি কেহ নিজের সমস্ত মাল খয়রাত করিয়া দেয়, তবে যাকাত মা’ফ হইয়া যাইবে ।
(নেসাব পরিমাণ সম্পদের মূল্য ১০০ টাকা ধরিয়া) কাহারও নিকট ২০০ টাকা ছিল, এক বৎসর পর তাহা হইতে ১০০ চুরি হইয়া গেল বা খয়রাত করিয়া দিল, এইরূপ অবস্থা হইলে তাহার মাত্র ১০০ টাকা যাকাত দিতে হইবে, বাকী ১০০ টাকার যাকাত মা’ফ হইয়া যাইবে । যদি হিসাব করিয়া যাকাতের টাকা গরীবের হাতে না দিয়া পৃথক করিয়া নিজের কাছে রাখে এবং সেই টাকা নষ্ট হইয়া যায়, তবে তাহাতে যাকাত আদায় হইবে না, যাকাতের টাকা পুনরায় বাহির করিয়া গরীবকে দিতে হইবে ।